ভুয়ো সাম্প্রদায়িক দাবিতে ছড়াল তরমুজে রাসায়নিক মেশানোর নাট্যাংশ
দ্য সোশ্যাল জংশন ইউটিউব চ্যানেলে ২০২৪ সালে ভিডিওটি পোস্ট করা হয় যেখানে এক সতর্কীকরণে উল্লেখ করা ছিল ঘটনাটি কাল্পনিক।



ইনজেকশন মারফত এক ব্যক্তির তরমুজে (watermelon) রাসায়নিক দ্রব্য (chemical) মেশানোর একটি নাটকের ভিডিও (scripted video) সম্প্রতি কিছু ইন্টারনেট ব্যবহারকারীরা রমজান (Ramadan) মাসের সাথে যুক্ত করে পোস্ট করেন সোশ্যাল মিডিয়ায়। তাদের দাবি, রাসায়নিক মিশ্রিত এমনই কিছু তরমুজ বিক্রয় করা হবে রমজান মাসের সময়।
বুম যাচাই করে দেখে, খাবারে ভেজাল মেশানো সম্পর্কে মানুষকে সচেতন করতে ইউটিউব চ্যানেল দ্য সোশ্যাল জংশন ভাইরাল ভিডিওটি তৈরি করে।
ভাইরাল ভিডিওয় পুলিশ আয়ুশ ভর্মা নামক এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে যিনি তরমুজে কৃত্রিম রঙ মেশানোর কথা নিজেই স্বীকার করে।
ফেসবুকে ভিডিওটি শেয়ার করে এক ব্যবহারকারী হিন্দিতে লেখেন, “রমজানে মুসলিমদের প্রাণ বাঁচান, ভিডিওটি শেয়ার করে ভালো কাজ করুন।। ইফতারের জন্য বাজার করার সময় একটা ভুল সিদ্ধান্ত সবার জন্য দুর্ভোগ আনতে পারে।"
পোস্টটি আর্কাইভ দেখুন এখানে।
একই দাবিসহ ভিডিওটি এক্সেও ভাইরাল হয়েছে; দেখুন এখানে।
তথ্য যাচাই
আমরা লক্ষ্য করি ভিডিওতে ইংরেজিতে ‘টিম রাইজিং ফ্যালকন’ লেখা একটি জলছাপ রয়েছে। এর থেকে ইঙ্গিত নিয়ে, যে এক্স হ্যান্ডেল ভিডিওটি শেয়ার করেছিল বুম সেটি খুঁজে পেতে সক্ষম হয়।
২ মার্চ তারিখে শেয়ার করা ওই ভিডিওর ক্যাপশন হিসাবে সেই এক্স ব্যবহারকারী লেখেন, “রমজানে মুসলিমদের জীবন বাঁচান, এই ভিডিওটি শেয়ার করে ভালো হন। ইফতারের জন্য বাজার করার সময় একটা ভুল সিদ্ধান্ত সবার জন্য দুর্ভোগ আনতে পারে।”
ভাইরাল ভিডিওর কিফ্রেমের রিভার্স ইমেজ সার্চ আমাদের ২০২৪ সালে প্রকাশিত ইন্ডিয়া টুডের এক রিপোর্টে নিয়ে যায় যেখানে একটি অনুরূপ ভিডিও দেখতে পাওয়া যায়। প্রতিবেদন অনুসারে, ভেজাল তরমুজের ব্যাপারে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে ভিডিওটি তৈরি করে দ্য সোশ্যাল জংশন ইউটিউব চ্যানেল। ভিডিওতে তরমুজে বিভিন্ন রাসায়নিক পদার্থ ইনজেকশন হিসাবে দিতে দেখা যায়।
আমরা দেখি মুখে রুমাল বাধা একই যুবককে ভাইরাল ভিডিও এবং প্রতিবেদন দুটিতেই দেখা যায়। এছাড়াও, উভয় ভিডিওর প্রেক্ষাপটও এক।
এরপর, দ্য সোশ্যাল জংশন ইউটিউব চ্যানেলে অনুসন্ধান করে ২০২৪ সালের ২৯ এপ্রিল আপলোড করা আসল ভিডিওটি আমরা পাই যেখানে ওই যুবক নিজেকে আয়ুশ ভর্মা হিসাবে পরিচয় দেয়।
আসল ভিডিওতে ভাইরাল ক্লিপের আওয়াজ শোনা যায় না; এর থেকে স্পষ্ট হয় সাম্প্রদায়িক দাবিটি ছড়ানোর জন্য আলাদা একটি অডিও ভিডিওটির সাথে যোগ করা হয়েছিল।
ওই ইউটিউব ভিডিওর ২৮ সেকেন্ডে একটি সতর্কীকরণ দেখা যায় যেখানে বলা হয়ে, “ভিডিওটি পরিপূর্ণ রূপে কাল্পনিক। ভিডিওর প্রত্যেকটি ঘটনা নাটকের অংশ এবং সচেতন করার জন্য তৈরি…”।
দ্য সোশ্যাল জংশনের ইউটিউব চ্যানেলে খাবারে ভেজাল মেশানো সংক্রান্ত এমনই একাধিক ভিডিও কাল্পনিক ভিডিও দেখা যায়।