কেরলে বন্যার ত্রাণ পাঠানোর আগে বিশেষ প্রার্থনার ছবি মিথ্যে দাবি সহ ছড়াল
স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের তরফে বন্যা ত্রাণ পাঠানোর আগে বিশেষ প্রার্থনার জন্য ওই দলীয় কার্যালয়ের ঘর বাছা হয়। ওই প্রার্থনার সঙ্গে কমিউনিস্ট দলের কোনও যোগসাজস নেই।
ফেসবুকে সিপিএম রাজনৈতিক দলের প্রতীক চিহ্ন সহ একটি ছবি শেয়ার করে দাবি করা হচ্ছে সেগুলি বামপন্থী নেতাদের নামাজ পড়ার ছবি।
ছবিটির দেওয়ালে সিপিএম দলের প্রতীক চিহ্ন কাস্তে হাতুরি তারা রয়েছে। ছবিটিতে বেশ কয়েকজন ব্যক্তি বসে রয়েছেন তাদের কারও কারও মাথায় টুপি রয়েছে। হাত তুলে মুসলিমীয় প্রার্থনার ভঙ্গিমায় হাত জড়ো করে বসে রয়েছেন তারা।
ফেসবুক পোস্টটিতে ক্যাপশন লেখা হয়েছে, ‘নামাজরত বিপ্লবী ওরফ কমরেড ওরফ নাস্তিক।’ উল্লেখ্য, বামপন্থী নেতারা নাস্তিক বলে বঙ্গ সমাজে পরিচিত। সেই কথা ভেবেই এই পোস্ট ছড়ানো হচ্ছে।
পোস্টটি দেখা যাবে এখানে। পোস্টটি আর্কাইভ করা আছে এখানে।
তথ্য যাচাই
বুম ফেসবুক পেস্টের এই ছবিটা রিভার্স সার্চ করে মালায়ালম ভাষায় এই একই ছবির তথ্য যাচাইয়ের প্রতিবেদন খুঁজে পেয়েছে।
এটি বন্যা ত্রাণ পাঠানোর আগে একটি বিশেষ প্রার্থনার ছবি। স্থানীয় একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের তরফে ওই ত্রাণ সামগ্রী পাঠানোর আগে সিপিএমের দলীয় কার্যালয়ে ওই বিশেষ প্রার্থনার আয়োজন করা হয়। এর্ণাকুলম জেলার পেরুমভাবুরের জলমগ্ন মাল্টিকাকালি পঞ্চায়েত এলাকার ত্রাণ পাঠানোর জন্য লোকজন সমবেত হন।
সারা বিশ্বের মুসলিম ধর্মাবলম্বীদের নামাজ হয় কুইবলা বা কেবলামুখী অর্থাৎ মক্বা শহরের ‘কাবা গর্ভগৃহ’ মুখী। অর্থাৎ এটি নামাজ পড়ার দৃশ্য নয়। ছবিটি আরও ভালো করে লক্ষ করলে দেখা যাবে দুই ব্যক্তি মুসলমানীয় কায়দায় হাত জড়ো করে নেই। এ থেকে বোঝা যায় এই প্রার্থনায় সবাই অংশগ্রহণ করেননি।
মাথরুভূমি ও মালায়লি ওয়ানইন্ডিয়ার প্রতিবেদন পড়া যাবে এখানে ও এখানে।
বুম এব্যাপারে একটি ফেসবুক পোস্ট খুঁজে পেয়েছে। মালায়লি ভাষায় লেখা পোস্টটির সারমর্ম হল:
"..সবাই জানে আমি এলডিএফ কর্মী নই। ১৭ অগস্ট ২০১৯ শনিবার ১০:৩০ মিনিটে জাতি, ধর্ম, রাজনৈতিক মতাদর্শ নির্বিশেষে সেখানে সবাই জড়ো হয়। ওই জায়গায় কংগ্রেস/লিগ সমর্থকরাও উপস্থিত ছিলেন। তারা দুবাই থেকে আসা ওই ইমামের সঙ্গে প্রার্থনায় অংশ নেন..।"
আরও পড়ুন: রাহুল গান্ধী বন্যাকবলিত এলাকা পরিদর্শনে গিয়ে হেলিকপ্টারে বসে সিঙ্গাড়া খাচ্ছে
এরাজ্যে বামপন্থী নেতাদের ধর্ম পালন ও কমিউনিস্ট সত্ত্বা নিয়ে বিতর্ক অতীতে দানা বেঁধেছে বিভিন্ন সময়। সুভাষ চক্রবর্তীর পুজো দেওয়া থেকে এককালের বাম নেতা রেজ্জাক মোল্লার হজ সেই বিতর্কে ইন্ধন দিয়েছে।
আরও পড়ুন: নেটিজেনরা ছড়াল বাম নেতা বিমান বসুর বিবাহ বাসনার গুজব