সোশাল মিডিয়ায় দুবাইয়ে জলস্তরের নিচে প্রস্তাবিত টেনিস কোর্টের পুরনো (old model) মডেল চিত্র (proposed model) বিভ্রান্তিকর দাবি সহ দুবাইয়ে (Dubai) নির্মিত পৃথিবীর প্রথম আন্ডাওয়াটার টেনিস স্টেডিয়াম (underwater tennis stadium) বলে ছড়ানো হচ্ছে।
বুম যাচাই করে দেখে ভাইরাল ছবিটি ২০১৫ সালে ক্রাইসজটফ কোটালার দুবাইয়ে প্রস্তাবিত জলের তলায় টেনিস কোর্টের প্রস্তাবিত নক্সা।
ফেসবুকে ভাইরাল হওয়া ছবিতে দেখা যায় জলের তলার এক টেনিস কোর্টের ছবি যার গ্যালারিতে বসে দর্শকরা খেলা উপভোগ করছেন।
বুম দেখে ফেসবুকে একই দাবি সহ ছবিটি ব্যাপকভাবে ছড়ানো হচ্ছে। ফেসবুক পোস্টে ক্যাপশন লেখা হয়েছে, “পৃথিবীর প্রথম আন্ডারওয়াটার টেনিস স্টেডিয়াম, দুবাই”
তথ্য যাচাই
বুম ছবিটিকে গুগলে রিভার্স সার্চ করে আর্কিটেকচারাল ডাইজেস্ট ম্যাগাজিনে ২০১৫ সালের ৩০ এপ্রিল প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পায়।
স্থাপত্যবিদ্যার ছাত্র ক্রাইসজটফ কোটালা (Krysztof Kotala) দুবাইয়ের পারস্য উপসাগরে বুর্জ আল আরব ও পাম জুমরিয়া দ্বীপের মাঝে একটি টেনিস কোর্টের প্রস্তাবিত নক্সা তৈরি করেছেন।
ক্রাইসজটফ কোটালা লন্ডনের রয়াল ইনস্টিটিউট অফ ব্রিটিশ আর্কিটেক্টে পড়াশোনা করেছেন। এছাড়ও তিনি পোল্যান্ড ও জার্মানিতে পড়েছেন।
অংশিক খেলার মাঠ, আংশিক অ্যাকোরিয়াম-এর এই প্রস্তাবিত সমুদ্রতলের নিচের এই স্থাপত্য নক্সার উপরে থাকবে কোরাল রিফ্।
ছবিও তথ্যের সূত্র হিসাবে উল্লেখ করা হয়েছে, ৮ প্লাস ৮ ডট কমের নাম।
বুম ৮ প্লাস ৮ ডট কমের ওয়েসবাসাইটে ভাইরাল হওয়া মূল ছবিটি খুঁজে পেয়েছে। ছবিটির শিরোনাম লেখা রয়েছে, “জলস্তরের নিতে টেনিস সেন্টার, দুবাইয়ে ক্রীড়াক্ষেত্র।”
অনেকে এই ক্যাপশন দেখে ভুল করে দুবাইে নির্মিত হওয়া জলস্তরের নিতে টেনিস সেন্টার বলে ভুল করছেন।
ওই সাইটে দেওয়া লিঙ্কে ক্লিক করলে পোল্যান্ডের ওয়ারসও স্থিত স্থাপত্যবিদ ক্রাইসজটফ কোটালার নাম রয়েছে।
বিষয়টি নিয়ে বিজনেস ইনসাইডার ও আরবিয়ান বিজনেসে প্রকাশিত ২০১৫ সালের প্রতিবেদন পড়ুন এখানে ও এখানে। একই ব্যাপারে ফোর্বসে প্রকাশিত প্রতিবেদন পড়ুন এখানে।
দুবাইয়ে ২০০৫ সালে বুর্জ আল আরব হোটেলে পৃথিবীর উচ্চতম টেনিস কোর্ট নির্মান করা হয়। জলস্তরের নিচে টেনিস কোর্ট এখনও নির্মিত হয়নি। ভাইরাল ছবিটি বলাবহুল্য কম্পিউটারে তৈরি নক্সা মাত্র।
২০১৯ সালে মধ্যপ্রাচ্যের স্থাপত্য সংক্রান্ত ওয়েবাসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয় এই ধরণের জলের তলায় নির্মিত স্থাপত্যের প্রতিবন্ধকতার কথা। ২০২২ সালে জার্মানির বার্লিনে অবস্থিত বিশালাকার অ্যাকোরিয়াম ফেটে গিয়ে প্রায় ১৫০০ প্রজাতির মাছের মৃত্যু হয়।