২০২০ সালে আম্পান ঘূর্ণিঝড়ের (Cyclone Amphan) পর মানুষ হাঁটু-জলে নেমে নামাজ পড়ছে, বাংলাদেশের (Bangladesh) এমন একটি দৃশ্যের ভিডিওকে সাম্প্রদায়িক রঙ (communal spin) চড়িয়ে ভারতে শেয়ার করা হচ্ছে।
নেটিজেনরা ভিডিওটি পোস্ট করে মিথ্যে দাবি করছেন যে, এভাবে হিন্দুদের কাছে পবিত্র নদী বলে গণ্য হওয়া গঙ্গাকে (The Ganges) মুসলিমরা (muslims) ধাপে-ধাপে দখল করে নিচ্ছে।
ঝোড়ো, দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় হাঁটু-জলে দাঁড়িয়ে মুসলিমদের সমবেত হয়ে প্রার্থনা করার এই দৃশ্যের ক্লিপটি একটি হিন্দি ক্যাপশন সহ ভাইরাল করা হয়েছে। অনূদিত ক্যাপশনের অর্থ: "এটি একটি জনমানবহীন স্থানে পবিত্র গঙ্গা নদীর তীরে আজান দিতে জড়ো হয়ে নদীটিকে গ্রাস করে নেওয়ার একটা সুপরিকল্পিত চক্রান্ত। প্রথমে ওরা নদীর ধার ঘেঁষে অস্থায়ী ছাউনি বানাবে, তারপর সেগুলিকে স্থায়ী আবাসনে রূপান্তরিত করবে। আর তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ যেহেতু জলের দখলকে কেন্দ্র করেই ঘটবে, তাই ওরা এখন থেকেই মা গঙ্গাকে আবে জমজম-এ পরিণত করার প্রয়াস শুরু করে দিয়েছে।"
ভিডিওটি দেখতে ক্লিক করুন এখানে এবং পোস্টটি আর্কাইভ করা আছে এখানে।
(Original caption in Hindi: 'यह एक योजना है कि एकान्त स्थान पर गंगा नदी में अज़ान लगा कर कब्जा किया जये। इनकी योजना के अनुसार गंगा नदी के किनारे किनारे पर अस्थाई निवास बनाये जाय बाद में यह स्थाई निवास में परिवर्तन कर दिया जायेगा। क्यों कि विश्व की अगली लड़ाई पानी के लिए होनी है। और यह मॉ गंगा को आबे जमजम बनाए जाने का ऐक्सपेरिमैंट शुरू हो गया है'.)
ভিডিওটি একই দাবি সহ ফেসবুকে শেয়ার হয়েছে ব্যাপকভাবে।
টুইটারেও একই ধরনের ক্যাপশন দিয়ে ভিডিওটি শেয়ার করা হয়েছে।
টুইটটি আর্কাইভ করা আছে এখানে।
আরও পড়ুন: নিরাপত্তা পরিষদে প্রথম সভাপতিত্বে ভারত, বিভ্রান্তিকর দাবি বঙ্গ বিজেপির
তথ্য যাচাই
২০২১ সালের ২৯ জুলাই বুম হিন্দি এই ভুয়ো খবরটির তথ্য-যাচাই করেছিল।
বুম এটা নিশ্চিত করতে পেরেছিল যে, ভিডিওটি বাংলাদেশের দৃশ্য। "হাঁটু পানিতে ঈদের নামাজ", এই শব্দগুলি বসিয়ে কিওয়ার্ড সার্চ করে বুম বেশ কয়েকটি সংবাদ-প্রতিবেদন পায়।
ভাইরাল ভিডিওয় যে ধরনের দৃশ্য রয়েছে, ইন্ডিপেন্ডেন্ট টেলিভিশন নামে বাংলাদেশের একটি সংবাদ-চ্যানেল ২০২০ সালের ২৫ মে একটি সংবাদ বুলেটিনে তেমন দৃশ্য প্রকাশ করে। তার ক্যাপশন ছিল, "আম্ফান তাণ্ডবে ক্ষতিগ্রস্ত কয়রা, তাই পানিতেই ঈদ জামাত"
২৫ মে ২০২০ তারিখে দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড রিপোর্ট করে, "খুলনা জেলার কয়রা এলাকায় প্রায় ৫ হাজার মুসলমান পুণ্যার্থী নদীর পাড়ে হাঁটু-জলের ভিতর দাঁড়িয়েই ঈদ-অল-ফিতরের নামাজ পড়ে। ২০ মে বিধ্বংসী ঘূর্ণিঝড় আমপানের তাণ্ডবে কয়রার বাঁধ অন্তত ২৪টি স্থানে ক্ষতিগ্রস্ত হয় নোনা জল ঢুকে যায়।"
২৫ মে ২০২০ বাংলাদেশি গণমাধ্যম ঢাকা ট্রিবিউন ঘটনাটির খবর দিয়ে ক্যাপশন দেয়, "হাজার হাজার মানুষ হাঁটু-জলে দাঁড়িয়ে নামাজ পড়েছে ।"
যমুনা টেলিভিশন-এ প্রদর্শিত একই ঘটনার ভিডিও রিপোর্ট নিচে দেখুন।
নিচে ভাইরাল ভিডিওর দৃশ্যের সঙ্গে বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড-এ প্রকাশিত ছবির তুলনা দেখুন।
আতিরক্ত রিপোর্টিং বুম বাংলাদেশ।