একটি ভাইরাল পোস্টে মিথ্যে দাবি করা হয়েছে যে, কোভিড-১৯ (COVID-19)-এর ওষুধ হিসেবে পতঞ্জলির (Patanjali) 'করোনিল' (Coronil) বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডাব্লিউএইচও বা হু) (WHO) অনুমোদন পেয়েছে। পতঞ্জলি ও হু উভয়ই ওই দাবিটি অস্বীকার করেছে।
খবরে প্রকাশ যে, ১৯ ফেব্রুয়ারি কোভিড-১৯-এর বিরুদ্ধে শরীরে প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তোলার এক ওষুধ হিসেবে, হু-র নিয়ম মেনে, সরকার পতঞ্জলির 'করোনিল'-কে অনুমোদন দেয়। কেন্দ্রর আয়ুষ মন্ত্রক সেটিকে 'সার্টিফিকেট অফ ফারমাসি্উটিকাল প্রডাক্ট' শংসাপত্রটি দেয়। ওই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নিতিন গডকড়ী (Nitin Gadkari) ও হর্ষ বর্ধন (Harsh Vardhan)। এর ফলে, ওই ওষুধ ১৫৮ টি দেশে রপ্তানি করা যাবে বলে জানা গেছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ওই শংসাপত্র দেওয়ার নিয়ম নির্দিষ্ট করে দিয়েছে। কিন্তু ওষুধটিকে তারা নিজেরা স্বীকৃতি দেয়নি।
দাবিটি নীচে দেখা যাবে। তাতে বলা হয়েছে:
"আয়ুর্বেদের ক্ষেত্রে পতঞ্জলি ইতিহাস সৃষ্টি করেছে। কারণ, হু করোনিল-কে কোভিড-১৯-এর বিরুদ্ধে প্রথম তথ্য-ভিত্তিক ওষুধ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে।"
দাবিটি টুইটারে ভাইরাল হয়েছে। সেটি নীচে দেওয়া হল।
তথ্য যাচাই
পতঞ্জলির ম্যানেজিং ডিরেক্টর আচার্য বালকৃষ্ণণ বলেছেন যে, করোনিল হু-র নিয়ম মেনেই প্রস্তুত করা হয়েছে ('গুড ম্যানুফ্যাকচারিং প্র্যাক্টিসেস' বা জিএমপি)। এবং ওই শংসাপত্র ভারত সরকারের পক্ষ থেকে দেওয়া হয়েছে। উনি আরও বলেন, বিশ্ব্ সাস্থ্য সংস্থা কোনও ওষুধকে স্বীকৃতি দেয় না বা খারিজও করে না।
হু বলে যে, কোভিড-১৯-এর জন্য তারা কোনও সনাতনী পদ্ধতিতে তৈরি ওষুধ যাচাই করেনি বা শংসাপত্রও দেয়নি।
বিশ্ব স্বস্থ্য সংস্থার জিএমপি কি?
হু-এর জিএমপি হল ওষুধের মান বজায় রাখার এক নীতিমালা। ওষুধের মান যাতে সব সময় একই থাকে, তা নিশ্চিত করতে ওই নীতিমালা মেনে চলার কথা বলা হয়েছে।
তাতে উৎপাদন পদ্ধতির পর্যালোচনা, পরীক্ষা, বৈধতা ও ডকুমেন্টেশন কী ভাবে করতে হবে তা নির্ধারিত করা আছে। তাছাড়া এও বলা আছে যে, ওষুধ তৈরির জায়গা, উপাদান ও কর্মীদের ওই কাজের উপযুক্ত হতে হবে। সেই সঙ্গে উৎপাদন, পরীক্ষা, বিপনন, কমপ্লেন ও ত্রুটি সংশোধন সংক্রান্ত আইনি বিষয়গুলিও বলে দেওয়া আছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসেব অনুযায়ী, ১০০ টিরও বেশি দেশ ওই মাপকাঠিগুলি নিজেদের মেডিক্যাল আইনের অন্তর্ভুক্ত করে নিয়েছে। এবং তার ভিত্তিতে স্থির করেছে নিজেদের মাপকাঠি । এই বিষয়ে আরও পড়ুন এখানে ।
ভারতে ওই জিএমপি সংক্রান্ত প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় 'ইনস্টিটিউট অফ গুড ম্যানুফ্যাকচারিং প্র্যাক্টিসেস'এ। সেখানে হু-র জিএমপি ও 'সারটিফিকেশন অফ ফারমাসিউটিক্যাল প্রডাক্টস'-কে পাঠ্য হিসেবে দেখানো আছে।
এই সম্পর্কে আরও জানতে এখানে পড়ুন।