দিল্লি বিমানবন্দর শহর অঞ্চলে গাড়ি (driveway) রাখাকে কেন্দ্র করে বিবাদের (brawl) একটি ভিডিও উঠে এসেছে। ওই ভিডিওতে দেওয়া বর্ণনায় বলা হয়েছে, ক্লিপে যাদের দেখা যাচ্ছে তাঁদের মধ্যে এক জন হলেন অজয় দেবগন (Ajay Devgn)। ওই ভিডিওতে আরও দাবি করা হয়েছে যে, কৃষি আইন সমর্থন করার জন্য দিল্লিতে আন্দোলনকারী কৃষকরা ওই অভিনেতাকে আক্রমণ করে।
ভিডিওতে দুই দলকে বিশ্রী ভাবে মারামারি করতে দেখা যাচ্ছে। বুম ইন্দিরা গাঁধী আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরের ডেপুটি কমিশনার অব পুলিশ রাজীব রঞ্জনের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি জানান যে, গাড়ি রাখা নিয়ে ঝামেলার সূত্রপাত, এবং দুই মূল অভিযুক্ত নবীন শোকিন ও তরঞ্জিত কুমারকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
"দিল্লিতে অজয় দেবগনকে মারধর করা হয়েছে" - এই ক্যাপশনের সঙ্গে ভিডিওটি ফেসবুকে ঘুরছে।
ভিডিওটির আর্কাইভ করা আছে এখানে।
একই বক্তব্যের সঙ্গে ভিডিওটি টুইটারেও ভাইরাল হয়েছে। এরকম দুটি টুইট আর্কাইভ করা আছে এখানে ও এখানে।
বুম তার টিপলাইনেও যাচাই করার জন্য এই ভিডিওটি পেয়েছে। ভিডিওটি হোয়াটসঅ্যাপে যে ক্যাপশনের সঙ্গে ছড়িয়েছে: "দেখুন, দিল্লিতে অজয় দেবগনকে সত্যি মারধর করা হয়েছে। উনি কৃষকদের ভিলেন প্রমাণ করতে চেয়েছিলেন, কিন্তু তা বুমেরাং হয়ে গেল এবং তিনি নিজেই সত্যিকারের জীবনে ভিলেন হয়ে উঠলেন। দিল্লিতে তাঁকে প্রচণ্ড মারধর করা হয়। মুম্বইতে যখন এক সর্দার তাঁর গাড়ির সামনে স্লোগান দেন, তিনি তখন তাঁকে গ্রেফতার করান। কিন্তু দিল্লিতে তাঁকে পেজ ৩ ভিড়ের মুখোমুখি হতে হয়। এখন দেখা যাক তিনি এদেরকেও জেলে পাঠাতে পারেন কি না।"
(হিন্দিতে লেখা মূল লেখা: लीजिये, अजय देवगन की तो दिल्ली में सच्ची वाली पिटाई हो गई.. चले थे किसानों को खलनायक साबित करने लेकिन खुद असल ज़िंदगी में खलनायक साबित हो गए और दिल्ली में जमकर कुटाई हो गई रियल लाइफ में.. मुम्बई में एक सरदार ने इनकी कार के आगे नारे लगाए तो इस खलनायक ने उसे हवालात की सैर करवा दी लेकिन दिल्ली में इसका पाला पेज 3 वालों से पड़ा है.. अब देखते हैं कि इसकी गाफ़ में कितना गू है जो इसके कान पर दे थप्पड़ दे थप्पड़ लगाने वालों को भी जेल भिजवा पायेगा क्या.?)
মার্চের গোড়ার দিকের একটি ঘটনার কথা ক্যাপশনটিতে উল্লেখ করা হয়েছে। সেই সময় কৃষক বিক্ষোভের পক্ষে আন্তর্জাতিক সমর্থনের বিরুদ্ধে ওই অভিনেতা টুইট করেন এবং তার পর মুম্বইয়ের গোরগ্রামে এক কৃষক বিক্ষোভ সমর্থনকারী অভিনেতার গাড়ি আটকে দেয়।
তথ্য যাচাই
আমরা প্রাসঙ্গিক শব্দ দিয়ে কিওয়ার্ড সার্চ করি এবং ইন্ডিয়া টুডের একটি সংবাদ বুলেটিন দেখতে পাই। ওই বুলেটিনটি ২৭ মার্চ আপলোড করা হয়। বুলেটিনটিতে ভাইরাল হওয়া ভিডিওর একই দৃশ্য দেখা যাচ্ছে।
ওই বুলেটিনে বলা হয়, "দিল্লির এরোসিটি অঞ্চলে পার্টি শেষ হওয়ার পর একটি বিবাদকে ঘিরে রাস্তায় দুই দলের মধ্যে মারপিট শুরু হয়ে যায়। দিল্লি পুলিশ ঘটনার তদন্ত করছে।" ইন্ডিয়া টুডের সাংবাদিক হিমাংশু মিশ্রর বক্তব্য অনুসারে, বেপরোয়াভাবে গাড়ি চালিয়ে গাড়ি দুটি পরস্পরকে ধাক্কা দেয় এবং তার ফলেই ঘটনাটি ঘটে। ঘটনাটি বিবাদের দিকে গড়ায় এবং দুই দল মারপিট শুরু করে দেয়।
বুম ইন্দিরা গাঁধী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ডেপুটি কমিশনার পব পুলিশ রাজীব রঞ্জনের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনিও একই কথা জানান, এবং আরও জানান যে ,দুই মূল অভিযুক্তকে নবীন শোকিন ও তরঞ্জিত কুমার বলে সনাক্ত করা হয়েছে। তিনি বুমকে বলেন, "আমি ভাইরাল ভিডিও এবং তার সঙ্গের বক্তব্য দেখেছি। সাদা জামা পরিহিত ব্যক্তি মোটেই অজয় দেবগন নন। তিনি আসলে নবীন শোকিন নামে এক জন রিয়েল এস্টেট ডিলার। নবীন শোকিন ও গাড়ির ডিলার তরঞ্জিত কুমারকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এই ঘটনার আরও তদন্ত চলছে।"
রঞ্জন আরও বলেন, "গাড়ি ঢোকানোর মুখে এই দুজনের গাড়িতে ঠোকাঠুকি লাগে, এবং তার পরই দুজনের দলের লোকেরা মারামারি আরম্ভ করে।"
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের একটি প্রতিবেদনের সারাংশ থেকে জানা যায়, "এক উচ্চপদস্থ পুলিশ আধিকারিক জানান যে, তাঁরা রাত ২.০৬ মিনিট নাগাদ এরোসিটির ওয়ার্ল্ডমার্ক ২ অঞ্চলে একটি ঝামেলার বিষয়ে ফোন পান। ওই অফিসার বলেন, 'আমরা ঘটনাস্থলে যাই এবং দেখতে পাই যে, মলের বাইরে কিছু লোক জড়ো হয়েছে। যিনি ফোন করেছিলেন তিনি ওখানে ছিলেন না এবং পরে দ্রুত ভিড় সরে যায়। তদন্তে আমরা জানতে পারি কুমারের মার্সিডিজ গাড়ির সঙ্গে সিংয়ের গাড়ির হাল্কা ধাক্কা লাগে এবং তার পরই তাদের মধ্যে ঝগড়া লেগে যায়'।"
পরে ২৯ মার্চ অজয় দেবগন একটি টুইট করে পরিষ্কার ভাবে জানিয়ে দেন যে তিনি কোথাও যাননি। একই দেখতে (Doppelgänger) কারও সঙ্গে এই ঘটনা ঘটে থাকবে বলে জানান তিনি।