এনার্জি ড্রিঙ্ক বা শক্তিবর্ধক পানীয়র (Energy Drink) সংস্পর্শে আসা মাত্রই বেশ কিছু শক্ত বস্তুকে ভেঙ্গে যেতে দেখা যাচ্ছে এক জাদুকরের (Magician) তৈরি ভিডিওতে। কিন্তু ভিডিওটি এই মিথ্যে দাবি সমেত শেয়ার করা হচ্ছে যে, মানুষের শরীরের ওপর বলবর্ধক পানীয়র ক্ষতিকর প্রভাব দেখানো হয়েছে সেটিতে।
বুম দেখে, ভিডিওটি একজন জাদুকর বা ম্যাজিসিয়ানের পাতা থেকে নেওয়া। তিনি নিয়মিত ওই ধরনের কৌতুকপূর্ণ ভিডিও আপলোড করে থাকেন।
ভিডিওটিতে একজনকে কাঁচি দিয়ে একটি বেলুনকে কয়েক টুকরো করতে দেখা যাচ্ছে। কিন্তু সেই টুকরোগুলিকে শক্তিবর্ধক পানীয়তে ডোবানো মাত্রই সেগুলি জোড়া লেগে যায়। আরও কয়েকটি দৃশ্যে, ডিম ভাজা, ফল ও একটি হাতুড়িকে শক্তিবর্ধক পানীয়র সঙ্গে বিক্রিয়ার ফলে রবারে পরিণত হতে দেখা যায়। শেয়ার করা ভিডিওটির সঙ্গে দেওয়া ক্যাপশনে বলা হয়েছে, “শক্তিবর্ধক পানীয় সম্পর্কে এই তথ্য প্রচার করা উচিত যাতে প্রাণ বাঁচানো যায়। যিনি এই ভিডিও দেখবেন, তিনি আর কখনও বলবর্ধক পানীয় পান করবেন না। লোকজন অসুস্থ হয়ে পড়ছেন, তাতে আর আশ্চর্য কী!!!!”
টুইটটি দেখতে এখানে ক্লিক করুন; আর্কাইভের জন্য এখানে।
একই রকমের টুইট দেখতে ক্লিক করুন এখানে, এখানে ও এখানে।
তথ্য যাচাই
বুম দেখে, ভিডিওর ওই ব্যক্তির নাম রিক ল্যাক্স। তিনি নিজেকে জাদুকর হিসেবে পরিচয় দেন। এবং এই ধরনের প্যারডি ভিডিও তৈরি করে থাকেন।
‘বেলুন এনার্জি ড্রিঙ্ক এক্সপেরিমেন্ট’ – এই কি-ওয়ার্ড দিয়ে খোঁজ করলে, ১৮ জানুয়ারি, ২০২০তে ফেসবুকে আপলোড করা একটি ভিডিও দেখতে পাই আমরা। রিক ল্যাক্স শো নামের একটি পাতায় সেটি পোস্ট করেন লেক্সি & ওশান & রিক। ওই ভিডিও ভাইরাল ভিডিওটির সঙ্গে হুবহু মিলে যায়। সেটির শিরোনামে লেখা হয়, “শক্তিবর্ধক পানীয়র কাণ্ড যা আপনি আগে কখনও দেখেননি। (রিক ল্যাক্স-এক বিস্ময়কর ম্যাজিক)”
রিক ল্যাক্স নিজের প্রোফাইলেও একই ভিডিও শেয়ার করেন। দেখুন এখানে। মন্তব্যের অংশে আমরা দেখি ল্যাক্স লিখেছেন যে, ওই ম্যাজিক দেখানোর জন্য উনি “পুরনো কিছু হাতের কারসাজি ও পদ্ধতি” ব্যবহার করেন। প্যারডি ভিডিওটি সংক্রান্ত মন্তব্যটি অনেককে হাসির খোরাক যোগায়।
রিক ল্যাক্স-এর ফেসবুক পাতাটিও আমরা দেখি। সেখানে এই ধরনের আরও কিছু ভিডিও ছিল। যেমন, একটিতে উনি মাটির একটি ফুলদানি হাতুড়ি দিয়ে ভেঙ্গে ফেলেন। তারপর, ডিম, দাড়ি কামানোর ক্রিম ও শুকনো নুডুল দিয়ে সেটিকে আবার পুনর্গঠন করেন।
শক্তিবর্ধক পানীয়র ক্ষতিকর প্রভাব সম্পর্কে এই ভিডিওটি ভুয়ো হলেও, বাস্তবে ওই ধরনের পানীয়র খারাপ প্রভাব সম্পর্কে একাধিক গবেষণা হয়েছে। পড়ুন এখানে ও এখানে।