সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় বর্তমান পত্রিকার (Bartaman Patrika) একটি ভুয়ো প্রতিবেদন ভাইরাল হয়েছে। ভুয়ো প্রতিবেদনটি অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর (Narendra Modi) সঙ্গে কথা বলার পর প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর রঞ্জন চৌধুরী (Adhir Ranjan Chowdhury) জুন মাসে ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস (INC) ছেড়ে বিজেপিতে (BJP) যোগ দেবেন।
পশ্চিমবঙ্গের প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী বহরমপুরের বর্তমান সাংসদ এবং চলতি লোকসভা নির্বাচনেও তিনি বহরমপুর থেকে কংগ্রেসের প্রার্থী হয়েছেন। এই মাসের শুরুতে অধীর চৌধুরীর বক্তৃতার ছোট একটি সম্পাদিত অংশ ভুয়ো দাবিসহ ভাইরাল হয়। তার বক্তৃতার ভুল ব্যাখ্যা করে দাবি করা হয় যে তিনি তৃণমূলের থেকে বিজেপিকে ভোট দেওয়া ভালো বলেছেন। বুম সেসময় ভুয়ো দাবিটির তথ্য যাচাই করে দেখে তিনি মূল ভিডিওতে তৃণমূল বা বিজেপি নয়, কংগ্রেস প্রার্থী মোর্তাজা হোসেনকে ভোট দেওয়ার কথা বলছিলেন।
ভাইরাল ছবিতে বর্তমান পত্রিকার ওয়েবসাইটের একটি প্রতিবেদনের স্ক্রিনশট দেখা যাচ্ছে। প্রতিবেদনটির শিরোনামে লেখা আছে, "রাতেই ফোন মোদির, কংগ্রেস ছেড়ে জুন মাসে বিজেপিতে অধীর। মধ্যপ্রদেশ থেকে অফার বিজেপির রাজ্য সভার সাংসদ।"
এই ভাইরাল প্রতিবেদনটির ছবি ফেসবুকে শেয়ার করে একজন ব্যবহারকারী ক্যাপশন হিসাবে লিখেছেন, "নিশ্চয়ই অধীর দার কোন ভিডিও বা তথ্য CBI ও ED এর কাছে রয়েছে।"
পোস্টটি দেখুন এখানে, আর্কাইভ দেখুন এখানে।
আরও একজন ফেসবুক ব্যবহারকারী পোস্টটি শেয়ার করে ক্যাপশনে লিখেছেন, "মুর্শিদাবাদের আর এক নতুন মীরজাফর অধীর।"
পোস্টটি দেখুন এখানে, আর্কাইভ দেখুন এখানে।
তথ্য যাচাই
বুম লক্ষ্য করে ভাইরাল পোস্টে ১৪ মে ২০২৪ তারিখটি লেখা আছে। এই সূত্রধরে আমরা বর্তমান প্রত্রিকার অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে গিয়ে ১৪ মে তারিখে প্রকাশিত সবকটি প্রতিবেদন দেখি কিন্তু অধীর চৌধুরীর জুন মাসে বিজেপিতে যোগ দেওয়া সংক্রান্ত কোনও প্রতিবেদন দেখতে পাইনা।
উল্লেখযোগ্যভাবে, আমরা বর্তমানের তরফ থেকে এই ভাইরাল পোস্ট নিয়ে একটি স্পষ্টীকরণ দেখতে পাই। সেই স্পষ্টীকরণে তারা পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছে ভাইরাল পোস্টার প্রতিবেদনটি বর্তমানের নয় এবং বর্তমান এই ভুয়ো পোস্ট নিয়ে আইনি ব্যবস্থা নিচ্ছে।
স্পষ্টীকরণে লেখা হয়েছে, "এই খবর বর্তমান-এর নয়। সম্পূর্ণ উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে কোনও অসৎ ব্যক্তি বা সংগঠন বর্তমান-এর নাম ব্যবহার করে বর্তমানকে হেয় করার চেষ্টা চালাচ্ছে এবং এই ধরনের অপপ্রচার করছে। এই খবরের সঙ্গে বর্তমান-এর কোনও সম্পর্ক নেই। বর্তমান এর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিচ্ছে।"
স্পষ্টীকরণটি এখানে দেখা যাবে।
এছাড়াও, আমরা বর্তমান পত্রিকার প্রকাশিত আসল প্রতিবেদনগুলির সঙ্গে ভাইরাল পোস্টের প্রতিবেদন লেখার হরফের পার্থক্য লক্ষ্য করি। ভাইরাল পোস্টে প্রতিবেদনের শিরোনাম এবং বর্ণনা দুটোই মোটা হরফে লেখা কিন্তু, বর্তমানের আসল প্রতিবেদনগুলিতে শুধুমাত্র শিরোনামই মোটা হরফে লেখা আছে। নীচে একটি তুলনা দেওয়া হল।
এভাবেই, আমরা নিশ্চিত হই ভাইরাল প্রতিবেদনের ছবিটি ভুয়ো এবং সম্পাদনা করে তৈরি করা হয়েছে।