সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় কলকাতায় ভুয়ো ডাক্তার (Fake doctors) চক্র ফাঁস সংক্রান্ত এনডিটিভির (NDTV) পুরনো একটি ভিডিও প্রতিবেদন সাম্প্রতিক দাবি করে ভাইরাল হয়েছে।
বুম যাচাই করে দেখে এনডিটিভির এই প্রতিবেদন ২০১৭ সালের। সাম্প্রতিককালে কোনও ভুয়ো ডাক্তার চক্র ধরা পড়েনি।
এনডিটিভির নিউজ বুলেটিনের ১:৪৮ মিনিটের ভিডিওটিতে একজন সংবাদপাঠিকাকে কলকাতায় জাল ডিগ্রিসহ ভুয়ো ডাক্তারদের চক্র ধরা পড়ার খবর ইংরেজিতে পাঠ করতে দেখা যায়। ভিডিওটিতে চারজন ভুয়ো ডাক্তার গ্রেফতার হওয়ার খবর শোনা যায়। গ্রেফতার হওয়া ডাক্তারদের মধ্যে একজন ভুয়ো ডাক্তার রাষ্ট্রপতি পুরস্কার প্রাপ্ত বলে জানা গিয়েছে। প্রতিবেদন অনুযায়ী এই ভুয়ো ডাক্তারদের কয়েকজন কলকাতার নামী হাসপাতাল যেমন বেলভিউ ও কোঠারি নার্সিং হোমগুলিতেও ডাক্তারি করতেন। ভিডিওটিতে ডাঃ নির্মল মাঝিকেও এই চক্র ফাঁস সম্পর্কে কথা বলতে শোনা যায়। রমেশচন্দ্র বৈদ্য নামক এক ব্যক্তিকে জাল ডাক্তারি ডিগ্রি তৈরি এবং বিক্রি করার জন্য দায়ী বলে চিহ্নিত করা হয়। প্রতিবেদন অনুযায়ী পুলিশের সিআইডি বিভাগ তদন্ত করে জানতে পেরেছে ৫৬০টি জাল ডাক্তারি ডিগ্রি সাম্প্রতিককালে বিক্রি করা হয়েছে। ভাইরাল ভিডিওটিতে ইংরেজিতে "৫৬০ জাল মেডিকাল ডিগ্রি কলকাতায় বিক্রি করা হয়েছে", "কলকাতায় ভুয়ো ডাক্তারদের মহামারী" এইধরণের বাক্যাংশগুলি লেখা দেখা যায়।
ভাইরাল ভিডিওটি ফেসবুকে শেয়ার করে এক ব্যবহারকারী ক্যাপশন হিসাবে লিখেছেন, "আবার ভুয়ো ডাক্তার শয়ে শয়ে খাস কলকাতার বুকে এই আমলে সব সম্ভব"।
পোস্টটি দেখুন এখানে।
ভাইরাল ভিডিওটি আরও এক ফেসবুক ব্যবহারকারী শেয়ার করে ক্যাপশনে লিখেছেন, "কলকাতায় ভুয়ো ডাক্তার"।
পোস্টটি দেখুন এখানে।
তথ্য যাচাই
এই একই ভিডিওটি ২০২২ সালে সাম্প্রতিক দাবি করে ভাইরাল হলে বুম তার তথ্য যাচাই করে।
সেসময় বুম ইউটিউবে "কলকাতায় ভুয়ো ডাক্তার" সংক্রান্ত কিওয়ার্ড সার্চ করে এনডিটিভির ইউটিউব চ্যানেলে একই ভিডিও পায়। আমরা দেখি "এক মাসে বাংলায় ৬ জন ভুয়ো ডাক্তার গ্রেফতার, কলকাতার শীর্ষস্থানীয় হাসপাতাল থেকে ৩ জুন" শীর্ষক প্রতিবেদনটি ৯ জুন ২০১৭ আপলোড করা হয়েছিল।
ভিডিওটি দেখুন এখানে।
বুম গুগলে কিওয়ার্ড সার্চ করে এই ঘটনা সংক্রান্ত সংবাদ প্রতিবেদন পায়।
এনডিটিভির প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১৭ সালের মে থেকে জুন মাস পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গে ছয়জন ভুয়ো ডাক্তারকে গ্রেফতার করা হয়েছে। জাল এমবিবিএস শংসাপত্র বিক্রির জন্য আরও এক ব্যাক্তিকে গ্রেফতার করা হয়। এছাড়াও, হুগলি জেলা থেকে প্রচুর পরিমাণে জাল ওষুধও বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।
রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের কাছ থেকে পুরস্কার পাওয়া ডাক্তার শুভেন্দু ভট্টাচার্য নামক এক চিকিৎসককে পুলিশ গ্রেফতার করে। ৩ জুন ২০১৭ ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস প্রতিবেদন অনুযায়ী, অভিযুক্ত সিআইডির নজরদারির অধীনে ছিল।