সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি সমাবেশের ভিডিও ভাইরাল হয়েছে যেখানে উপস্থিত জনগণের হাতে সবুজ রঙের উপর সাদা চাঁদ-তারা আঁকা পতাকা দেখা যাচ্ছে, সেখানে বেশ কিছু মানুষের মাথায় সবুজ কাপড়ও দেখা যায়। সমাজমাধ্যম ব্যবহারকারীরা ভিডিওটি শেয়ার করে দাবি করেছেন কেরলের ওয়েনাড়ের (Wayanad) লোকসভা উপনির্বাচনে ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস (Indian National Congress) প্রার্থী প্রিয়াঙ্কা গান্ধী বঢরার (Priyanka Gandhi Vadra) মনোনয়ন পত্র জমা দেওয়ার সমর্থনে জনসমাবেশের দৃশ্য।
ভাইরাল ভিডিওতে "রাহুল গান্ধী জিন্দাবাদ" স্লোগানও শোনা যায়।
বুম যাচাই করে দেখে ভাইরাল ভিডিওটি ২০১৯ সালের এবং ওয়েনাড় উপনির্বাচনে প্রিয়াঙ্কা গান্ধী বঢরার মনোনয়ন পত্র জমা দেওয়ার সঙ্গে সম্পর্কিত নয়। ভাইরাল ভিডিওটি কেরলের স্থানীয় রাজনৈতিক দল ইন্ডিয়ান ইউনিয়ন মুসলিম লীগের (আইইউএমএল) এবং উপস্থিত সমর্থকদের হাতের পতাকাগুলিও দলীয়, পাকিস্তানের নয়।
২০২৪ সালের ভারতীয় লোকসভা নির্বাচনে কংগ্রেস প্রার্থী রাহুল গান্ধী রায়বরেলী ও ওয়েনাড়— এই দুই আসন থেকে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন ও জয়ী হন। পরে, রায়বরেলি আসনটি রেখে, তিনি ওয়েনাড় আসনটি ছেড়ে দেন। এই ওয়েনাড় লোকসভা উপনির্বাচন কেন্দ্রেই কংগ্রেসের প্রার্থী হয়েছেন প্রিয়াঙ্কা গান্ধী বঢরা।
ভাইরাল ভিডিওটি ফেসবুকে শেয়ার করে এক ব্যবহারকারী ক্যাপশনে দাবি করেছেন, "বেগম প্রিয়াঙ্কা খাতুন দুঃখিত প্রিয়াঙ্কা ভাদ্রা লাহোর থেকে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন, দুঃখিত ওয়েনাড থেকে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন। ভাই, প্রিয়াঙ্কা ভাদ্রার সমর্থনে সমাবেশের ভিডিও দেখার পর, আমি বিশ্বাস করতে পারিনি যে ভারতের ওয়েনাড থেকে মনোনয়ন দাখিল করা হয়েছে। তেরঙাও নয়, কংগ্রেসের পতাকাও নয় সবুজ পতাকা শুধুমাত্র এবং শুধুমাত্র ইসলামী আন্দোলনের হাতে।"
ভাইরাল ভিডিওটি দেখুন এখানে, আর্কাইভ দেখুন এখানে
তথ্য যাচাই
বুম একই ভিডিওর তথ্য যাচাই করে ২০২৪ সালের এপ্রিল মাসে যখন ভিডিওটি রাহুল গান্ধীর সমর্থনে কেরলের ওয়েনাড়ে মিছিল দাবি করে ভাইরাল হয়।
আমরা সেসময় এক্সে কিওয়ার্ড সার্চ করে দেখি একই ভিডিও ২০১৯ সালের ২৪ মে পোস্ট করা হয়েছিল। ওই পোস্টের হিন্দি ক্যাপশনে দাবি করা হয় ভিডিওটি সেই বছর ওয়েনাড়ে রাহুল গান্ধীর জয়ী হওয়ার পর বিজয় মিছিলের।
আর্কাইভ দেখুন এখানে।
এর থেকে বোঝা যায়, ভিডিওটি সাম্প্রতিক নয়।
এরপর, আমরা এই ভিডিওটির কিফ্রেমের গুগলে রিভার্স ইমেজ সার্চ করি। সার্চের মাধ্যমে আমরা দেখি একই ভিডিও ২০১৯ সালে ইউটিউবে আপলোড করা হয়েছে এবং ক্যাপশন অনুযায়ী ভিডিওটি কেরলের রাজনৈতিক দল ইন্ডিয়ান ইউনিয়ন মুসলিম লীগের।
এরপর, আমরা ভাইরাল ভিডিওতে দৃশ্যমান পতাকার স্ক্রিনশটের সঙ্গে পাকিস্তানের জাতীয় পতাকা এবং আইইউএমএলের পতাকার তুলনা করি। আমরা লক্ষ্য করি ভাইরাল ভিডিওতে উপস্থিত জনগণের হাতের পতাকাগুলি আইইউএমএল পার্টির দলীয় পতাকা, পাকিস্তানের জাতীয় পতাকা নয়।
তুলনাটি দেখুন নীচে।