একজন ব্যক্তির হাত জড়ো করে এক স্ট্রেচার সমেত বেরিয়ে আসার একটি ভিডিও পোস্ট করে সম্প্রতি দাবি করা হয় দৃশ্যটি আরজি কর হাসপাতালে হত্যা হওয়া চিকিৎসকের বাবার, যিনি তার মেয়ের মৃতদেহ এভাবেই নিয়ে যাচ্ছেন।
বুম যাচাই করে দেখে ভিডিওটির সাথে কলকাতার আরজি কর হাসপাতালে খুন হওয়া চিকিৎসকের কোনও সম্পর্ক নেই। আমরা দেখি ভিডিওটিতে অন্ধ্রপ্রদেশের বিশাখাপত্তনমের এক ঘটনা দেখতে পাওয়া যায় যেখানে প্রবীণ মেহতা নামের এক ব্যক্তি তার ছেলে মারা যাওয়ার পর তাঁর অঙ্গদান করেন।
গত ৯ আগস্ট ২০২৪ কলকাতার আরজি কর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে ৩১ বছর বয়সী এক চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুন করা হয়। এই ঘটনায় অভিযুক্ত হিসেবে সঞ্জয় রায় নামের এক ব্যক্তিকে ইতিমধ্যেই গ্রেফতার করেছে কলকাতা পুলিশ। এরই মধ্যে সোশ্যাল মিডিয়াতে নির্যাতিতার ছবি ও নামসহ নানান গুজব ছড়িয়ে পড়ছে।
সোশ্যাল মিডিয়ায় ছবিটি শেয়ার করে দাবি করা হচ্ছে ভিডিওটিতে দেখতে পাওয়া ব্যক্তি কলকাতায় মৃত ডাক্তারের বাবা তিনি তার মেয়ের মৃত দেহ নিয়ে যাচ্ছেন।
আর্কাইভটি দেখুন এখানে।
তথ্য যাচাই
বুম ভিডিওটির কিছু মূল ফ্রেমকে রিভার্স ইমেজ সার্চ করলে একটি ইনস্টাগ্রামের একটি ভিডিও খুঁজে পায়।
ভিডিওটি ১৯ জুন পোস্ট করা হয় এবং তাতে ইংরেজিতে লেখা হয়, “২৮ বছরের বিপিন মেহতা এক্সিডেন্ট হয়ে দুদিন ভেন্টিলেটরে ছিলেন, পরে তিনি মারা যান এবং তার অঙ্গ দান করা হয়। উনি রাজস্থানের জালোরের বাসিন্দা ছিলেন”।
এই তথ্যকে সূত্র ধরে আমরা গুগলে কীওয়ার্ড সার্চ করলে নিউজ ১৮ এর ২ জুন ২০২৪ প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাই।
নিউজ১৮ এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২৯ মে ২০২৪ বিশাখাপত্তনমের রাস্তায় রাজস্থানের জালোরের বাসিন্দা প্রবীণ মেহতার ছেলে বিপিন মেহতা এক দুর্ঘটনায় পড়েন। এরপর ১ জুন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা গেলে প্রবীণ মেহতা ছেলের অঙ্গদান করেন এবং হাসপাতালে তাকে সম্মান দেওয়া হয়।
এরপর আমরা ইনস্টাগ্রামের ভিডিওটি ভালো করে লক্ষ্য করলে পিনাকেল হসপিটাল লেখাটি দেখতে পাই।
বুম পিনাকেল হাসপাতালের সাথে যোগাযোগ করলে তাদের প্রশাসনিক বিভাগের পূজা নামের একজন কর্মচারী আমাদের জানান, “ভাইরাল ভিডিওটি আমাদের হাসপাতালের। বিপিন মেহতা নামের এক যুবকের মৃত্যুর পর তাঁর বাবা তাঁর অঙ্গদানে করার সিদ্ধান্ত নেন। বিপিন মেহতা দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হয়েছিলেন এবং চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।"
(অতিরিক্ত রিপোর্টিং: ঋষভ রাজ)