নীল রঙের এক আলোক বলয়ের (Lighting Ball) রেললাইন পেরিয়ে যাওয়ার একটি ভিডিও সম্প্রতি সত্যিকারের ঘটনা দাবিতে সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করা হচ্ছে।
বুম যাচাই করে দেখে ভিডিওটি কম্পিউটার গ্রাফিক্সের (CGI) মাধ্যমে তৈরি। ২০১৯ সালে বেলারুশের একজন থ্রিডি শিল্পী এই ভিডিও তৈরি করেছিলেন।
২০ সেকেন্ডের ভাইরাল সেই ভিডিওতে অদ্ভুত এক নীল রংয়ের গোলাকার বিদ্যুতের বলয়কে রেললাইন পেরিয়ে যেতে দেখা যায়। ভিডিওটি আসল ঘটনা দাবিতে শেয়ার করে ব্যবহারকারীরা লেখেন, “আবিশ্বাস্য, দেখে নিন এই অদ্ভুত সুন্দর জিনিসটাকে.. "বল লাইটনিং" ⚪⚡ কখনো কদাচিৎ এ ধরনের বিদ্যুতের কথা শোনা যায়, যেটা ঠিক বলেরই আকার ধারণ করে কিছুক্ষণের জন্য ভেসে বেড়িয়ে হটাৎ এক্সপ্লোড করে। সে বিদ্যুত একটি মানুষের কাছ দিয়ে যাবার ফলে যদি দেখা যায় যে সেই মানুষের মধ্যে একটা বিশেষ কোন পরিবর্তন ঘটে গেছে, তাহলে বলার কিছু নেই। এই "বল লাইটনিং" এর ব্যাপারে সত্যজিত রায় তাঁর "নকুড়বাবু ও এল ডোরাডো" গল্পে লিখে গেছেন, যেটি পরবর্তিকালে "প্রফেসর শঙ্কু ও এল ডোরাডো" সিনেমা রূপে প্রকাশ পায়। তবে..IT HAPPENS ONCE IN 100 MILLIONS। রাজদীপ ঘোষাল”।
ভিডিওটি দেখতে ক্লিক করুন এখানে।
তথ্য যাচাই
বুম ভিডিওটিকে কিছু মূল ফ্রেমে নিয়ে সেগুলিকে নিয়ে রিভার্স ইমেজ সার্চ করলে আমরা হিস্ট্রি ইউটিউব চ্যানেলে ১৪ জানুয়ারি ২০২১ এ আপলোড করা একটি ভিডিও খুঁজে পাই। ভিডিওটির শিরোনামের বাংলায় অনুবাদ হল,“প্রমাণ বেরিয়ে গেছে: ক্যামেরায় ধরা পড়া অদ্ভুত বজ্রপাতের ঘটনা (সিজন ১) | হিস্ট্রি”
(ইংরেজিতে মূল শিরোনাম: The Proof Is Out There: Unexplained Lightning Phenomenon Caught On Camera (Season 1) | History)
০.১১ থেকে ০.৫৪ সময়ে ভিডিওটিতে বলা হয় মে ২০১৯ আন্দ্রে ট্রুখোনোভেটস নামে এক ব্যক্তি এই ভিডিওটি ইউটিউবে প্রথম আপলোড করেছিলেন। ভিডিওটির শেষ অংশে ৩.৩৫- ৩.৪৮ সময়ে আন্দ্রে ট্রুখোনোভেটস বলতে শোনা যায় তিনি এই ভিডিওটি আসলে কম্পিউটার গ্রাফিক্সের মাধ্যমে তৈরি করেছিলেন।
এটিকে সূত্র ধরে আমরা আন্দ্রে ট্রুখোনোভেটসের ইউটিউব চ্যানেল সার্চ করলে সেখানে ২৭ মে ২০১৯ আপলোড করা ওই ভাইরাল ভিডিওটি দেখতে পাই। আন্দ্রে ভিডিওটির বর্ণনায় লিখেন তিনি এই ভিডিওটি তার কম্পিউটারের মাধ্যমে তৈরি করেছিলেন। এছাড়াও ভিডিওটির শিরোনামে সিজিআই (CGI) বলে উল্লেখ রয়েছে।
ভিডিওটি ২০২১ সালের ডিসেম্বরে ভাইরাল হলে আন্তর্জাতিক সংবাদসংস্থা এএফপি ভিডিওটির তথ্য যাচাই করে। ২০২১ সালে এএফপির তরফে আন্দ্রের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, ভিডিওটি অ্যাডোব এডিটিং সফটওয়্যারের সাহায্যে তৈরি করে তিনি ইউটিউবে আপলোড করেছিলেন।