উত্তরপ্রদেশের (Uttar Pradesh) বারাণসীর জ্ঞানবাপী মসজিদের সঙ্গে সম্পূর্ণ সম্পর্কহীন ওড়িশার বালাসোরের ভূষণ্ডেশ্বর মন্দিরের একটি পুরানো ছবি মিথ্যে দাবির সঙ্গে শেয়ার করা হয়েছে। দাবি করা হল যে, জ্ঞানবাপী মসজিদে সম্প্রতি যে শিবলিঙ্গ 'পাওয়া গেছে', ওই ছবিতে সেটিই দেখা যাচ্ছে।
মসজিদ চত্বরে আদালতের নির্দেশে হওয়া সমীক্ষায় একটি শিবলিঙ্গ পাওয়া গিয়েছে বলে এক মামলায় হিন্দু বাদীপক্ষ দাবি করে, এবং তার পর ২০২২ সালের ১৬ মে বারাণসীর এক আদালত জ্ঞানবাপী মসজিদের একটা অংশ সিল করে দেওয়ার নির্দেশ দেয়। তবে ওই মামলার মুসলিম পক্ষের তরফে আঞ্জুমান ইন্তেজামিয়া মসজিদ কমিটি দাবি করেছে যে, যাকে শিবলিঙ্গ বলা হচ্ছে, সেটি আসলে ওজু করার জায়গার একটি ছোট ঝর্না।
মুঘল আমলে তৈরি উত্তরপ্রদেশের বারাণসীর জ্ঞানবাপী মসজিদ আসলে একটি হিন্দু মন্দিরের উপর তৈরি বলে হিন্দু বাদী পক্ষের তরফ থেকে দাবি করা হয়েছে। অন্য পক্ষ তার বিরোধিতা করেছে।
একটি শিবলিঙ্গের ছবি শেয়ার করে সঙ্গে হিন্দিতে যে ক্যাপশন লেখা হয়েছে তার অনুবাদ, "জ্ঞানবাপী মসজিদ সার্ভে কেসে জ্ঞানবাপী মসজিদের ভিতর যে পুকুরের মধ্যে "শিবলিঙ্গ" দেখতে পাওয়া গেছে। উত্তরপ্রদেশ আদালত সেই অংশ সিল করে দেওয়ার আদেশ দিয়েছে। সূত্র অনুসারে জ্ঞানবাপী মসজিদ সার্ভে চলার সময় মসজিদের উপরের অংশে যেখানে নামাজ পড়া হয় সেখানে একটি জায়গায় ওজু করা হয়…"
পোস্টটি দেখার জন্য এখানে ক্লিক করুন।
(হিন্দি- ज्ञानवापी मस्जिद सर्वे मामले में उत्तर प्रदेश की एक अदालत ने ज्ञानवापी मस्जिद परिसर के उस तालाब को सील करने का आदेश दिया है, जहां "शिवलिंग" पाया गया है...)
এই একই ছবি তেলেগু ভাষায় লেখা ক্যাপশনের সঙ্গে শেয়ার করা হয়েছে। ওই ক্যাপশনের অনুবাদ, "এইমাত্র খবর পাওয়া গেল যে, জ্ঞানবাপী মসজিদে সার্ভে চলার সময় ১২ ফুট ৮ ইঞ্চি লম্বা শিবলিঙ্গ পাওয়া গেছে। বারাণসী আদালত ওই জ্যোতির্লিঙ্গ ও তার আশপাশের জায়গা সিল করে দেওয়ার, এবং সেখানকার নিরাপত্তা বাড়ানোর নির্দেশ দিয়েছে। আদালত সেখানে সঙ্গে সঙ্গে সিআরপিএফ মোতায়েন করার আদেশ দেয়।"
পোস্টটি দেখার জন্য এখানে ক্লিক করুন।
(তেলেগু- ఇప్పుడే అందిన వార్త *జ్ఞ్యానవ్యాపి మసీదు* సర్వేలో *12 అడుగుల ఎనిమిది అంగుళాల* ఎత్తు ఉన్న *శివ లింగము* దొరికినది. ఈ జ్యోతిర్లింగమును,దాని పరిసరములను సీలు వేసి,భద్రత పెంచాలని *వారణాసి కోర్టు* ఆదేశించింది. *సి ఆర్ పి ఎఫ్ భద్రత* దళాలను మోహరించాలని కోర్టు తక్షణమే ఆదేశాలను జారీ చేశారు.)
আরও পড়ুন: না, ভিডিওর মারধর খাওয়া ব্যক্তি শ্রীলঙ্কার তথ্য বা জনকল্যাণ মন্ত্রী নন
তথ্য যাচাই
গুগল ইমেজ ব্যবহার করে রিভার্স ইমেজ সার্চ করে আমরা দেখতে পাই যে, ভাইরাল ছবিটি আসলে একটি পুরানো ছবি এবং এটি ওড়িশার বালাসোরের ভূষণ্ডেশ্বর মন্দিরের।
উইকিপিডিয়ায় মনোজিত পাল নামে এক ব্যক্তিকে ছবির কৃতিত্ব দেওয়া হয়েছে। সেখানে উল্লেখ করা হয়েছে যে, ছবিটি বালাসোরের ভূষণ্ডেশ্বর মন্দিরে তোলা হয়েছে এবং ছবিটি ২০১৪ সালের ২৩ নভেম্বর আপলোড করা হয়।
ভাইরাল হওয়া ছবিটি পালের তোলা আসল ছবির সঙ্গে হুবহু মিলে যায়।
পোস্টটি দেখার জন্য এখানে ক্লিক করুন।
তাছাড়া বাবা ভূষণ্ডেশ্বর মন্দিরের অন্যান্য ছবিও ভাইরাল হওয়া ছবির সঙ্গে মিলে যায়। সঙ্কেত টিভি নামে এক ডিজিটাল ওড়িয়া সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনও আমরা দেখতে পাই।
২০১৯ সালে প্রকাশিত ওই সংবাদ প্রতিবেদনে ব্যবহৃত ছবির সঙ্গে মন্দিরের বিভিন্ন ছবি এবং শিবলিঙ্গের আকৃতি মিলে যায়। ১ মিনিট ৪০ সেকেন্ডের পর থেকে আমরা তা দেখতে পাই।
আরও পড়ুন: শ্রীলঙ্কার অর্থনৈতিক সংকট: এনডিটিভির প্রতিবেদনের স্ক্রিনশট সম্পাদিত