অল ইন্ডিয়া মজলিস-এ-ইত্তেহাদুল মুসলিমিন-এর (এআইএমআইএম) নেতা আসাদুদ্দিন ওয়েইসি-কে (Asaduddin Owaisi) কটাক্ষ করে তৈরি একটি ব্যঙ্গাত্মক ভিডিও থেকে নেওয়া ক্লিপ মিথ্যে দাবি সমেত শেয়ার করা হচ্ছে। বলা হচ্ছে, ওই ভিডিওটিতে ‘জয় শ্রীরাম’-এই ধর্মীয় স্লোগানের ওপর ভারতে নিষেধাজ্ঞা জারি করার দাবি তুলতে দেখা যাচ্ছে একজন মুসলিম ধর্মগুরুকে।
পুলিশ কর্মীদের সামনে, উত্তরপ্রদেশের প্রয়াগরাজ-এ, গুণ্ডা তথা রাজনৈতিক নেতা আতিক আহমেদ ও তাঁর ভাই আসরাফ আহমেদকে হত্যার ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের পদত্যাগ দাবি করতে শোনা যাচ্ছে এক ব্যক্তিকে। এবং পুলিশ তাদের পাকড়াও করার মুহূর্তে নিহত দু’জন ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগান দিয়েছিল বলে ওই ব্যক্তির দাবি ছিল, স্লোগানটির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা উচিত।
ভিডিওটির সঙ্গে দেওয়া ক্যাপশনটি অনুবাদ করলে, তার মানে দাঁড়ায়, “কাকাবাবু, কথাটা শুনুন, নইলে পরে পস্তাবেন। ‘জয় শ্রীরাম,’ স্লোগানটির ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা উচিত সারা ভারতে।”
দেখার জন্য এখানে ক্লিক করুন।
একই মিথ্যে ক্যাপশন সহ ভিডিওটি টুইট করেছেন একাধিক টুইটার ব্যবহারকারী।
দেখার জন্য এখানে ক্লিক করুন।
তথ্য যাচাই
বুম দেথে, এআইএমআইএম-এর নেতা আসাদুদ্দিন ওয়েইসিকে কটাক্ষ করে টিভি ব্যক্তিত্ব ড. সৈয়দ রিজওয়ান আহমেদ-এর তৈরি একটি ব্যঙ্গাত্মক ভিডিও থেকে নেওয়া হয়েছে ভাইরাল ক্লিপটি।
ভাইরাল ক্লিপটিতে যাঁকে দেখা যাচ্ছে, তিনি কোনও ধর্মগুরু নন। এবং কোনও আসল সাক্ষাৎকারও দেখানো হয়নি ভিডিওটিতে, যেমনটি দাবি করা হচ্ছে।
ভাইরাল ভিডিওটি সম্পর্কে মন্তব্যগুলির মধ্যে একজন টুইটার ব্যবহারকারী লেখেন, ভিডিওতে যাঁকে দেখা যাচ্ছে, তিনি হলেন সৈয়দ রিজওয়ান আহমেদ, যিনি একজন দক্ষিণপন্থী মানুষ।
এই সূত্রের সুবাদে আমরা আসল ভিডিওটির সন্ধান পাই। ৯.০৪ মিনিটের ওই ভিডিওটি ড. রিজওয়ান আহমেদ-এর ব্যবস্থাপনায় চালিত ইউটিউব চ্যানেল ‘ফেস-টু-ফেস’-এ পোস্ট করা হয়।
ড. আহমেদ হলেন একজন দক্ষিণপন্থী টিভি প্যানেলিস্ট যিনি টিভি অনুষ্ঠানে অংশ নেন।
ভিডিওটির ক্যাপশন থেকে বোঝা যায় যে, আহমেদ ওয়েইসিকে নকল করছেন। ভিডিওটি ব্যঙ্গাত্মক । এবং তাতে যে সাক্ষাৎকারটি দেখানো হয়েছে সেটি আসল নয়। মূল ভিডিওটি থেকে মাত্র এক মিনিটের একটি আলাদা করে নেওয়া অংশ ভাইরাল হয়েছে। এবং সেটি মিথ্যে দাবি সমেত শেয়ার করা হচ্ছে।
দেখার জন্য এখানে ক্লিক করুন।
ড. আহমেদ আরও একটি ব্যঙ্গাত্মক ভিডিও টুইটারে পোস্ট করেন। তাতে উনি ওয়েইসির কাছে ‘ক্ষমা চান’। আহমেদ-এর মুখের গঠন ভাইরাল ভিডিওর ব্যক্তিটির সঙ্গে মিলে যায়।
উত্তরপ্রদেশে গুণ্ডা তথা রাজনীতিক আতিক আহমেদ ও তাঁর ভাই আসরাফ-এর হত্যার কারণে, ১৬ এপ্রিল, ২০২৩-এ, এআইএমআইএম প্রেসিডেন্ট উত্তরপ্রদেশের বিজেপি সরকারের তীব্র সমালোচনা করেন। তিনি মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের পদত্যাগ ও সুপ্রিম কোর্টের তত্বাবধানে ওই ঘটনার তদন্ত দাবি করেন।
ওই ঘটনা সম্পর্কে বিদ্রুপ করে তৈরি করা হয়েছে ব্যঙ্গাত্মক ভিডিওটি। এবং ওয়েইসিকে নকল করে ড. সৈয়দ রিজওয়ান আহমেদ-এর অতিরঞ্জিত মন্তব্যগুলি রয়েছে ভাইরাল ভিডিওটিতে।
ড. আহমেদ-এর টুইট করা মিথ্যে খবর বুম আগেও খণ্ডন করেছে।