মালয়ালি (Malayalam) অভিনেত্রী অনিকা বিজয় বিক্রমণে (Anicka Vijay Vikhraman) তাঁর প্রাক্তন প্রেমিকের বিরুদ্ধে শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগের ছবি সোশাল মিডিয়ায় ভুয়ো সাম্প্রদায়িক (communal spin) দাবি সহ ছড়নো হচ্ছে যে, অনিকা মুসলিম (Muslim) ছেলের প্রেমে পড়ে এই নির্যাতনের শিকার হয়েছেন।
বুম যাচাই করে দেখে অনিকা বিজয় বিক্রমণ শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগ তোলেন প্রাক্তন প্রেমিক অনুপ পিল্লাইয়ে (Anoop Pillai) বিরুদ্ধে। পিল্লাই মুসলিম ধর্মাবল্মী নন।
ফেসবুকে ভাইরাল হওয়া পোস্টে অনিকা বিজয় বিক্রমণের কালশিটে দাগ সহ মুখের তিনটি ছবি শেয়ার করা হয়েছে; শারীরিক আঘাতের স্পষ্ট ছাপ রয়েছে তাতে।
ছবিগুলি ফেসবুক পোস্টে শেয়ার করে ক্যাপশন লেখা হয়েছে, “ধর্মকে ত্যাগ দিয়ে প্রেম কে জয় করতে গেছিলো। ধর্মান্তরিত মরা ভালো থাকে না। প্রেমে মরা জলে ডুবে না। অংকিতা বিজয় নামে এক সাম্যবাদী সেকুলার হিন্দু মেয়ে আব্দুলের প্রেমে পড়ে সব ত্যাগ করে জান্নাতী হতে চেয়ে ছিল কিন্তু ঐ আব্দুল ই তাকে জীবিত অবস্থায় নরক দেখিয়ে দিলো। এটিই হচ্ছে হিন্দু মুসলিমের প্রেম! জীবিত বা মৃত্যু নরক যন্ত্রণা ভূগতে হয় হিন্দু ছেলে কিংবা মেয়েকে। যেমন কর্ম তেমন ফল....”
ফেসবুক পোস্টটি দেখুন এখানে।
বুম দেখে ব্যাপকভাবে ছবিটি ফেসবুকে বিভিন্ন পেজে একই দাবিতে শেয়ার করা হয়েছে।
তথ্য যাচাই
বুম পোস্টে ব্যবহার করা একটি ছবি সোশাল মিডিয়ায় রিভার্স সার্চ করে এব্যাপারে একাধিক প্রতিবেদন খুঁজে পায়।
৭ মার্চ, ২০২৩ নিউজ১৮ প্রকাশিত প্রতিবেদনে দেখে ছবিগুলি মালয়ালি অভিনেত্রী অনিকা বিজয় বিক্রমণের। কিন্তু অনিকা তাঁর মুুসলিম প্রেমিককে বিয়ে করে এই নির্যাতনের শিকার হয়েছেন ভাইরাল পোস্টের এই দাবি সত্যি নয়।
অনিক তাঁর প্রাক্তন প্রেমিক অনুপ পিল্লাইয়ে বিরুদ্ধে শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগ তোলেন, তিনি ধর্ম পরিচয়ে মুসলিম নন।
নিউজ১৮-এর প্রতিবেদনে অনিকার একটি ফেসবুক পোস্টের স্ক্রিনশটের ছবি শেয়ার করা হয়েছে। ওই পোস্টেই ভাইরাল ছবিগুলি পোস্ট করা হয়।
অনিকা তাঁর ফেসবুক পোস্ট লেখেন, “এই সব ঘটনা ছেড়ে দিলেও আমি হুমকি ফোন পেয়ে চলেছি। এবং আমাকে ও আমার পরিবারকে ক্রমাগত নিচে নামানো হচ্ছে। আমার প্রাক্তন প্রেমিক আক্রমণের আগে শেষ ছবিটি তোলা হয়েছিল। আমি খুব আল্লাদিত ছিলাম আমার চুল কাটা দেখাতে। যাইহোক এটা এখন অতীত। আমি এই সপ্তাহ থেকে ছবি পোস্ট করা শুরু করব।”
হিন্দুস্তান টাইমসে ৭ মার্চ প্রকাশিত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা ওই ফেসবুক পোস্টের বাকী লেখায় আনিকা বলেন, “আমি সম্পূর্ণ সেরে উঠেছি এখন। শ্যুটিং শুরু করেছি। আশা রাখি এরপর সব ভালো হবে।”
বর্তমানে অবশ্য ওই ফেসবুক পোস্টটি অনীকার ফেসবুক প্রোফাইলে নেই।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস ও এই সময় গণমাধ্যমের প্রতিবেদনেও নির্যাতনকারী হিসাবে তাঁর প্রাক্তন প্রেমিক অনুপ পিল্লাইয়ে নাম উল্লেখ করা হয়েছে। কোনও মুসলিম ব্যক্তিকে বিবাহের পর তিনি নির্যাতনের শিকার হয়েছেন একথা খবরে বলা হয়নি।
মালয়ালি গণমাধ্যম মাধ্যায়ামমে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, অনুপ অবশ্য শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগকে ভিত্তিহীন বলে দাবি করেন। অনুপের দাবি, মদ্যপ অবস্থায় অনীক নিজে আহত হয়ে এই সব অভিযোগ তুলেছে।