মিশরে (Egypt) প্রতিবাদের অঙ্গ হিসাবে কাফন ঢাকা মাটিতে শোয়ানো বেশ কিছু মানুষের পুরনো ভিডিও সোশাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দাবি করা হচ্ছে এটি ইজরায়েল-প্যালেস্তাইন সংর্ষের (Israel Palestine Conflict) সঙ্গে সম্পর্কিত। সেই সঙ্গে ক্যাপশনে ব্যঙ্গ করে বলা হয়েছে, প্যালেস্তাইনিয়রা মরে যওয়ার ভান করছেন।
বুম দেখে, ২০১৩'র ভিডিওটিতে মিশরের কায়রোতে আল-আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের প্রতিবাদের ছবি দেখা যাচ্ছে।
সংবাদ সরবরাহকারী সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস (এপি) তাদের প্রতিবেদনে জানিয়েছে, গাজায় অন্ততপক্ষে ১৮২ জন প্রাণ হারিয়েছেন। তার মধ্যে ৫২ জন শিশু ও ৩১ জন মহিলা। আর আহত হন ১,২২৫ জন। একটি ৫ বছরের শিশু ও এক সেনা সমেত ৮ জন ইজরায়েলি নিহত হন।
দু'মিনিটের ভিডিওটিতে দেখা যাচ্ছে, কাফনে মোড়া দেহের সারি মাটিতে শোয়ান রয়েছে। কিন্তু কফনের তলায় একটি দেহকে নড়তে দেখা যাচ্ছে। একজন কাপড়টি সরিয়ে নিলে, কাফনের নীচে শুয়ে থাকা ব্যক্তিকে নাক চুলকোতে দেখা যায়। সে মুচকি হাসে। তারপর তার মুখ আবার ঢেকে দেওয়া হয়।
ভিডিওটির সঙ্গে দেওয়া ক্যাপশনে বলা হয়, "মৃত প্যালেস্তাইনিয়রা শহীদরা নাক চুলকোয়। ব্লাডি টেররিস্ট।"
ভিডিওটি দেখার জন্য এখানে ক্লিক করুন; আর্কাইভের জন্য এখানে।
ভিডিওটির আর্কাইভ এখানে।
যাচাইয়ের জন্য ভিডিওটি বুমের টিপলাইন নম্বরে (৯১৭৭০০৯০৬৫৮৮) আসে।
আরও পড়ুন : করোনা রুখতে পশ্চিমবঙ্গের নয়া লকডাউন বিধি নিয়ে ছড়াল বিভ্রান্তিকর তথ্য
তথ্য যাচাই
ভিডিওটির একটি প্রধান ফ্রেম নিয়ে আমরা রিভার্স ইমেজ সার্চ করি। দেখা যায়, ওই ভিডিওটির একটি বড় সংস্করণ মিশরের আল-বাদিল খবরের কাগজের ইউটিউব চ্যানেলে ২৮ অক্টেবর ২০১৩তে আপলোড করা হয়েছিল।
ভিডিওটির আরবি ভাষায় লেখা শিরোনামে বলা হয়. "আল-আজহার ইউনিভার্সিটিতে দেহের ছবি।"
আল-বাদিলের ইউটিউব ভিডিওর বিবরণে বলা হয়, "আল-আজহার ইউনিভারসিটির বেশ কিছু মুসলিম ব্রাদারহুড ছাত্র কলেজ প্রশাসনিক ভবনের সামনে একটি গণ প্রতিবাদ সংঘটিত করেন। ছাত্ররা সেনাবাহিনী ও পুলিশের বিরুদ্ধে স্লোগান দেন।"
বুম ফেসবুক ১৩ অক্টোবর ২০১৩ তে করা একটি পোস্টও দেখে। তাতে ওই একই ভিডিওটি ছিল।
'স্নোপস' ও 'এএফপি'র তথ্য যাচাই দল ভিডিওটি আগেই খণ্ডন করেছিল।
'আহরাম' নামের একটি ওয়েবসাইটে ২৬ অক্টোবর ২০১৩'য় প্রকাশিত একটি রিপোর্ট দেখতে পায় বুম। তাতে আল-আজহার উইনিভারসিটির মুসলিম ব্রাদারহুড ছাত্রদের ২০১৩'র প্রতিবাদের বিস্তারিত বিবরণ দেওয়া হয়। ওই রিপোর্টে বলা হয়, "ছাত্রদের বেশ কিছু দল, তাঁদের কথা অনুযায়ী, তাঁরা 'সামরিক অভ্যুত্থানের' বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাচ্ছিলেন, যে অভ্যুত্থান ইসলামি রাষ্ট্রপতি মোহম্মদ মোরসিকে ক্ষমতাচ্যুত করে। তাঁরা দেশের অন্তরবর্তী নেতৃত্বকে প্রত্যাখ্যান করে মোরসির পুনর্বহালের ডাক দেন।"
আরও পড়ুন : আঘাতের ভেক ধরছে প্যালেস্তাইনের নাগরিকরা? ছড়াল পুরনো ভিডিও