অক্সিজেন পরিবহনের ক্ষত্রে ট্যাঙ্কার বা সিলিন্ডার বাহিত যান যেন যানজটের মুখে না পরে তার সমাধানে কলকাতা ট্রাফিক পুলিশের বিশেষ করিডর তৈরি করার টুইট ঘিরে বিভ্রান্তি ছড়াল সোশাল মিডিয়ায়। ফেসবুক ও হোয়াটসঅ্যাপে কলকাতা ট্রাফিক পুলিশের ওই টুইট অন্য অর্থে ছড়িয়ে পড়েছে।
নেটিজেনদের অনেকে মনে করছেন ব্যক্তিগত প্রয়োজনে অক্সিজেন সিলিন্ডারের দরকার পড়লে সংশ্লিষ্ট সরবরাহকারীদের থেকে বাড়িতে পৌঁছে দেবে কলকাতা পুলিশ।
বুমের তরফে ভাইরাল হওয়া ওই দুটি নম্বরে ফোন করলে জানানো হয় সেগুলি কলকাতা ট্রাফিক পুলিশের কন্ট্রোল রুমের নম্বর। ট্রাফিক কন্ট্রোল রুমের তরফে বলা হয়, অক্সিজেন পরিবহনের সময় যাতে যানজটের সম্মুখীন না হতে হয়, সে জন্য অক্সিজেনবাহী যানকে বিশেষ করিডর করে পৌঁছে দেওয়া হবে।
২৪ এপ্রিল ২০২১ ডিসিপি ট্রাফিক কলকাতার তরফে টুইট করে জানানো হয়, "হাসপাতাল ও অক্সিজেন সরবরাহকারী সহ সংশ্লিষ্ট সকলকে অনুরোধ করা হচ্ছে, কলকাতা শহরে অক্সিজেন ট্যাঙ্কার/সিলিন্ডার ইত্যাদির যে কোনও গতিবিধি সম্পর্কে আমাদের ০৩৩২২৫০৫০৯৬/০৩৩২২১৪৩৬৪৪ নম্বরে জানান যাতে আমরা তাদের দ্রুত চলাচলের জন্য স্বতন্ত্র করিডোর করে দিতে পারি।"
ট্রাফিক পুলিশের এই বার্তাটি অনুবাদ করার সময় সরলীকরণ করে অন্য মানে তৈরি করে নেটিজেনরা। ফেসবুক পোস্ট ও হোয়াটসঅ্যাপে ভাইরাল হওয়া বার্তায় বিভ্রান্তিকরভাবে লেখা হয় বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া হবে অক্সিজেন সিলিন্ডার।
সোশাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া মেসেজে লেখা হয়, "ফোন করলেই অক্সিজেন পৌঁছে দেবে কলকাতা পুলিশ! নম্বর দুটি হল- ০৩৩২২৫০৫০৯৬, ০৩৩২২১৪৩৬৪৪ কালোবাজারি রুখতে এবং দ্রুত অক্সিজেন পৌঁছে দিতে এই উদ্যোগ নিল কলকাতা পুলিশ। এখানে ফোন করলেই তাঁর কাছে ফোর্স পৌছে যাবে। এরপর অক্সিজেন সিলিন্ডার গ্রীন করিডর করে পৌঁছে দেওয়া হবে হাসপাতাল বা বাড়িতে।"
এরকম একটি পোস্ট দেখা যাবে এখানে। পোস্টটি আর্কাইভ করা আছে এখানে।
একই বয়ানে ওই পোস্ট টুইট করেন চলচ্চিত্র পরিচালক শ্রীজিত মুখোপাধ্যায়। পরে বিভ্রান্তিকর বার্তার ওই টুইটটি মুছে দেন তিনি। টুইটটি আর্কাইভ করা আছে এখানে।
জি ২৪ ঘন্টার প্রতিবেদন অনুযায়ী শনিবার নবান্ন সভাঘরে মুখ্যসচিব, স্বরাষ্ট্রসচিব, স্বাস্থ্যসচিব ও প্রশাসনিক আধিকারিকরা বৈঠকে বসেন। অক্সিজেন সরবরাহে নজরদারি ও কোভিড মোকাবিলায় আধিকারিকদের নিয়ে বিশেষ কন্ট্রোল রুম খোলা হচ্ছে নবান্নে।
উত্তর কলকাতার মানিকতলার বিধান সরণীতে অক্সিজেন সিলিন্ডার কালোবাজারি চক্রের হদিশ পায় কলকাতা পুলিশের এনফোর্সমেন্ট ব্রাঞ্চ। ওই অভিযানে ৫২ কোজি ওজনের ১৩টি খালি অক্সিজেন সিলিন্ডার ও ১৫ কেজি ওজনের ২টি খালি অক্সিজেন সিলিন্ডার উদ্ধর করা হয়। জেরায় ওই চক্রের চাঁইরা জানিয়েছে, ছোট অক্সিজেন সিলিন্ডারগুলি ১৮-২০ হাজার টাকায় বিক্রি করা হত, আর বড়গুলি দাম ছাড়িয়ে যেত ৩৫ হাজার টাকা। যদিও বাজেয়াপ্ত করা অক্সিজেন সিলিন্ডারগুলি সবকটিই খালি ছিল। লাইসেন্স নিয়ে সংস্থার মালিককে তলব করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: পুণের মসজিদকে কোয়রান্টিন কেন্দ্র করার পুরনো ছবি ওখলার বলে ভাইরাল