সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় এক কিশোরের দেহে অসংখ্য আঘাতের দুটি ছবি শেয়ার করে ব্যবহারকারীরা ভুয়ো দাবি করেছেন সেগুলি মহারাষ্ট্রের (Maharashtra) একটি মন্দিরে আক্রান্ত এক তৃষ্ণার্ত শিশুর (child) ছবি।
বুম দেখে ভাইরাল ছবি পুরনো এবং ছবির শিশুটি ভারতীয় নয়। ২০২০ সালে ইয়েমেনে বাবার দ্বারা নির্মম ভাবে প্রহৃত এক কিশোরের দেহে আঘাতের চিহ্ন ভাইরাল ছবিতে দেখা যায়।
মহারাষ্ট্রের ছত্রপতি সম্ভাজিনগর থেকে মুঘল সম্রাট ঔরঙ্গজেবের সমাধি সরানোর দাবি নিয়ে বিশ্ব হিন্দু পরিষদের মিছিলে ইসলামের পবিত্র লিপিসহ একটি সবুজ চাদর জ্বালানোর গুজব ছড়ায়। এর ফলে, গত ১৭ মার্চ, ২০২৫-এ নাগপুরের বিভিন্ন জায়গায় পাথর ছোড়া ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। এই ঘটনায় এক ব্যক্তির নিহত হন এবং ৩৩ জন পুলিশকর্মীর আহত হয়।
নাগপুরে সহিংসতার পরিপ্রেক্ষিতে, ছবি দুটি মহারাষ্ট্রের বলে সমাজমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। এক ফেসবুক ব্যবহারকারী ক্যাপশনে লেখেন, "শিশুরা মন্দিরের ফুল" শুধু শুনতে ভালো লাগে। অথচ তৃষ্ণার্ত শিশু যখন মন্দিরে জল খেতে যায় তখন তাকে ধর্ম বা বর্ণ দিয়ে লাঠি প্রসাদ দেওয়া হয়। মানুষ হিসাবে এমন নিকৃষ্ট, বর্জ্য, দানবীয় ও মানবতা নিতে লজ্জা পাবে না...? (মহারাষ্ট্রের ঘটনা)"
পোস্টটির আর্কাইভ দেখুন এখানে।
তথ্য যাচাই
বুম প্রথমে ভাইরাল ছবি দুটির গুগলে রিভার্স ইমেজ সার্চ করে। সার্চের মাধ্যমে আমরা ২০২০ সালের অক্টোবর মাসে প্রকাশিত একাধিক ইয়েমেন ভিত্তিক সংবাদ প্রতিবেদনে ছবিগুলি দেখতে পাই।
ইয়েমেন নাও নিউজ সংবাদমাধ্যমের ২০২০ সালের ৪ অক্টোবরের প্রতিবেদনে ভাইরাল ছবি দুটির একটি দেখা যায়। প্রতিবেদন অনুসারে ঘটনাটি ইয়েমেনের আল মাহয়িত প্রদেশের।
ইয়েমেনের স্থানীয় সংবাদমাধ্যম ক্রেটার স্কাই তাদের প্রতিবেদনে জানায় ইয়েমেনের আল মাহয়িত প্রদেশের আর রুজুম জেলার ১২ বছরের কিশোর শামখ রাশিদ আল-কুহেইলির ছবি। প্রতিবেশীদের বয়ান অনুসারে, ওই কিশোরের বাবা তাকে শাসন করার অজুহাতে নৃশংস ভাবে মারধর করে। রিপোর্টে ভাইরাল ছবি দুটি দেখা যায়।
ইয়েমেনের নিরাপত্তা বাহিনীর আধিকারিক ওয়েবসাইটে ৫ অক্টোবর, ২০২০ তারিখে প্রকাশিত রিপোর্ট থেকে জানা যায় কিশোরের বাবা, অভিযুক্ত রাশিদ মহম্মদ আল-কুহেইলি অক্টোবরের ৩ তারিখ দড়ি দিয়ে বেঁধে তার ছেলেকে নির্মম ভাবে মারধর করে। ওই দিনই পুলিশ আক্রান্ত কিশোরকে উদ্ধার করে শুশ্রূষা করে এবং তার বাবাকে গ্রেফতার করে।