বিহারে (Bihar) দারভাঙ্গায় যুব কংগ্রেসের (Youth Congress) জনসভায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে (Narendra Modi) নিয়ে অশালীন মন্তব্য করার দায়ে গ্রেফতার হওয়া মহম্মদ রিজভি (Mohammad Rizvi) বলে সমনামের অন্য এক ব্যক্তির ছবি শেয়ার করে দাবি করা হয়েছে অভিযুক্ত আসলে ভারতীয় জনতা পার্টির (BJP) সঙ্গে যুক্ত।
ওই ব্যক্তির গলায় একটি বিজেপির উত্তরীয় সহ ছবি শেয়ার করে সমাজমাধ্যম ব্যবহারকারীরা ভুয়ো দাবি করেছে তিনিই বিহারের ঘটনায় অভিযুক্ত রিজভি।
বুম দেখে ভাইরাল ছবিটি মধ্যপ্রদেশের অনুপ্পুর জেলার বিজেপি কর্মী নেক মহম্মদ রিজভির; গ্রেফতার হওয়া দারভাঙ্গার বাসিন্দা মহম্মদ রিজভি, ওরফে রাজার নয়।
বিহার পুলিশ ভাইরাল দাবিটি খারিজ করে অভিযুক্তের প্রকৃত ছবি শনাক্ত করেছে। এছাড়াও, নেক মহম্মদ রিজভি সোশ্যাল মিডিয়ায় তাকে ভুলভাবে চিহ্নিত করার বিষয়ে অভিযোগ দায়ের করেছেন।
ভাইরাল দাবি
এক ফেসবুক ব্যবহারকারী ভাইরাল ছবিটি শেয়ার করে ক্যাপশনে দাবি করেন, "গট আপ গেম ছবি দেখে গেম প্ল্যান স্পষ্ট। শিবরাজ সিং চৌহানের পাশের লোকটির নাম নেক রিজভি। এই লোকটি কাল রাহুল গান্ধীর সভায় নরেন্দ্র মোদীকে গালাগালি দিয়ে গ্রেপ্তার হয়েছে। তার প্রতিবাদে আজ পাটনা এবং কংগ্রেস অফিসে বিজেপি হামলা করেছে, ভাঙচুরও করেছে।"
পোস্টটি দেখুন এখানে, আর্কাইভ দেখুন এখানে।
কংগ্রেস নেতা চন্দন সিংহ যাদবও এক্সে ছবিটি শেয়ার করে একই দাবি করেছেন।
অনুসন্ধানে আমরা কী পেলাম
১. মধ্যপ্রদেশের বিজেপি কর্মীর ছবি: আমরা দেখি একাধিক ব্যবহারকারী যাদবের এক্স পোস্টের মন্তব্যে ছবির ব্যক্তিকে নেক মহম্মদ রিজভি হিসেবে শনাক্ত করেছেন। আমরা এরপর অনুসন্ধানের মাধ্যমে নেক মহম্মদ রিজভির ফেসবুক প্রোফাইল পাই, যেখানে শিবরাজ সিংহ চৌহানের সাথে তার ছবি কভার ফটো হিসেবে আপলোড করা হয়েছে।
নেক মহম্মদ রিজভি নিজেকে মধ্যপ্রদেশের বিজেপি কর্মী হিসেবে পরিচয় দিয়েছেন। তিনি ফেসবুকে একটি ভিডিও আপলোড করে ভাইরাল দাবির খণ্ডন করেছেন এবং তার ছবির অপব্যবহার হওয়ার অভিযোগ করেন।
তিনি বুমকে জানান, তিনি মধ্যপ্রদেশের অনুপ্পুর জেলার কোটমা বিধানসভা কেন্দ্রের বিজেপি কর্মী। তিনি বলেন, "আমার পুরো নাম নেক মহম্মদ রিজভি, আর অভিযুক্ত হলেন মহম্মদ রিজভি ওরফে রাজা। আমি আমার ছবির অপব্যবহারের বিষয়ে কোটমা থানায় অভিযোগ দায়ের করেছি।" অভিযোগের একটি কপি বুমের কাছে রয়েছে।
২. উভয় ছবির তুলনা: দারভাঙ্গার স্থানীয় সাংবাদিক প্রহ্লাদ কুমার বুমকে জানায়, দারভাঙ্গার সিমরি থানায় মহম্মদ রিজভির বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছিল এবং তাকে ২৯ আগস্ট, ২০২৫-এ গ্রেফতার করা হয়। তিনি আমাদের অভিযুক্তের একটি ছবিও পাঠান। অভিযুক্তের ছবি থেকে স্পষ্ট বোঝা যায়, ভাইরাল ছবির ব্যক্তি ও রাজা দুজন ভিন্ন মানুষ।
পুলিশের নিশ্চিতকরণ: দারভাঙ্গা পুলিশের একটি প্রেস নোট অভিযুক্তকে সাকিনা ভাপুরা ওয়ার্ড নং ১, সিংহওয়ারা থানা এলাকার বাসিন্দা মহম্মদ রিজভি ওরফে রাজা (২০) হিসেবে শনাক্ত করেছে। নিশ্চিত হতে, আমরা দারভাঙ্গা সদর এসডিপিও ২ এস কে সুমনের সাথে অভিযুক্তের ছবি শেয়ার করি। সুমন ছবিটি গ্রেফতার হওয়া মহম্মদ রিজভির বলে শনাক্ত করেছেন। তবে, বুম অভিযুক্ত কোন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত তা স্বাধীনভাবে যাচাই করেনি।