জনতার হাতে পুলিশের নিগৃহীত হওয়ার একটি ভিডিও সোশাল মিডিয়ায় সাম্প্রদায়িক (Communal Spin) রঙ সহ শেয়ার করে দাবি করা হচ্ছে জরিমানা করার পর উত্তরপ্রদেশে (Uttar Pradesh) মুসলিম (Muslims) জনতার পুলিশের উপর আক্রমণের ঘটনা।
বুম দেখে ঘটনাটি উত্তরপ্রদেশে নয়, রাজস্থানে ঘটেছে এবং গত ফেব্রুয়ারি মাসে ঘটেছে। এবং এর সঙ্গে কোনও সাম্প্রদায়িক রঙ লেগে নেই।
ভিডিওটিতে দেখা যাচ্ছে, দুজন উর্দিধারী পুলিশকে এক উন্মত্ত জনতা বেদম প্রহার করছে। ভিডিওটির হিন্দি ক্যাপশনে লেখা রয়েছে, "বরেলী সিভিল লাইন্স নিউজঃ যখন পুলিশ তাদের জরিমানা করে, মুসলিম জনতা পুলিশকে আক্রমণ করে। এই ভিডিও থেকেই স্পষ্ট, আগামী দিনে এ দেশের ভবিষ্যত কী হতে চলেছে। কারা এই দেশ শাসন করবে এবং আমাদের ভবিষ্যতই বা কেমন হবে? ঘটনা হচ্ছে, বর্তমানে এই দেশে বাইরের শত্রুদের চেয়েও অনেক বেশি বিপদ ঘরের ভিতরের শত্রুদের থেকে।"
ভিডিওটির দৃশ্যগুলি যেহেতু খুব অস্বস্তিকর, তাই আমরা সেটি আমাদের মূল প্রতিবেদনের অন্তর্ভুক্ত করিনি। তবে সেটি দেখতে চাইলে ক্লিক করুন এখানে। ভিডিওটি আর্কাইভ করা আছে এখানে।
(মূল হিন্দিতে: बरेली सिविल लाईन्स न्यूज़ पुलिस द्वारा चालान काटने पर मुस्लिम लोगों ने उनकी पिटाई की जो कानून को चुनौती है! यह वीडियो बताता है की आगे हिन्दुस्तान मे क्या क्या होगा | कौन देश चलायेगा! और सबका भविष्य क्या होगा ! कड़वा सच यह है कि देश को बाहर से ज्यादा अन्दर से बहुत ज्यादा खतरा है!)
একই ধরনের ভুয়ো দাবি সহ ভিডিওটি আরও অনেক ফেসবুক পেজে পোস্ট হয়েছে।
তথ্য যাচাই
বুম ভিডিওটির একটি স্ক্রিনশট নিয়ে তার সঙ্গে হিন্দি কয়েকটি শব্দ বসিয়ে খোঁজখবর চালিয়ে একটি সংবাদ-প্রতিবেদনের সন্ধান পেয়েছে, যেটি গত ২৫ মার্চ ইটিভি ভারত-এ প্রকাশিত হয়েছিল।
প্রতিবেদনটির হিন্দি শিরোনাম ছিল এই রকম, হরিয়ানা পুলিশ এক প্রহৃত দম্পতির খোঁজ করছে। ভিডিও ভাইরাল। প্রতিবেদনটিতে এই ভাইরাল ভিডিওটি শেয়ার করা হয়।
২৫ মার্চ ইটিভি-তে প্রকাশিত প্রতিবেদনে ওই ভিডিও ক্লিপটিও শেয়ার করা হয়। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, ঘটনাটি মাসখানেকের পুরনো। তাতে আরও বলা হয় যে, হরিয়ানা পুলিশের একটি গাড়ি যখন রাজস্থানের জুরহারায় বাজারে একজন লোককে ধাক্কা মারে, তখনই ঘটনার সূত্রপাত। হরিয়ানা পুলিশ একটি মামলার তদন্তে রাজস্থানে যাচ্ছিল। স্থানীয় লোকদের সঙ্গে এ নিয়ে বাগবিতণ্ডার জেরে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে এবং জড়ো হওয়া জনতা পুলিশকে আক্রমণ করে। খবর পেয়ে জুরহারার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছয় এবং হরিয়ানা পুলিশের সঙ্গে স্থানীয়দের বিবাদ মীমাংসা করে দেয়। এ নিয়ে কোনও অভিযোগও দায়ের হয়নি।
এই একই ভিডিও অন্য একটি দাবি সহ ভাইরাল হওয়ার পর বুম ভরতপুর পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল। ভরতপুরের পুলিশ সুপার দেবেন্দ্র বিশনোই আমাদের জানালেন, "ভিডিওর ঘটনাটি ২০২১ ফেব্রুয়ারি মাসের। এবং দুই তরফেই অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। ব্যাপারটা একটা দুর্ঘটনা এবং দুই পক্ষই প্রাথমিকভাবে অভিযোগ না করতে মনস্থ করেছিল। ঘটনাটির মধ্যে কোনও রকম সাম্প্রদায়িক ব্যাপারও ছিল না। পুলিশ সুপার বুমকে জানান, ভিডিওতে যে পুলিশদের দেখা যাচ্ছে, তারা হরিয়ানার পুনহানা এলাকার।"
ভরতপুর পুলিশের সরকারি টুইটার হ্যান্ডেল থেকে পাওয়া একটি জবাবে আমরা দেখেছি, সেখানে ভরতপুর পুলিশ জুরহারা থানাকেও ভিডিওটি পাঠিয়েছে।