নেপালের (Nepal) একটি সরকারি দফতরে জেন-জি বিক্ষোভের (Gen Z protest) ভিডিও সম্প্রতি সমাজমাধ্যমে পশুপতিনাথ মন্দিরে (Pashupatinath temple) আন্দোলনকারীদের হামলার দৃশ্য দাবি করে ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়।
বুম দেখে ভিডিওয় আসলে নেপালের কৈলালী জেলায় ধনগড়ীতে সুদূর পশ্চিম প্রদেশ সভার দফতরের দৃশ্য দেখা যায়।
গত ৯ সেপ্টেম্বর দুর্নীতিবিরোধী বা জেন-জি আন্দোলনের প্রভাবে নেপালের প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলি পদত্যাগ করলে তৎকালীন সরকারের পতন হয়। নেপালের সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি সুশীলা কার্কী বর্তমানে গঠিত অন্তর্বর্তী সরকারের ভারপ্রাপ্ত প্রধানমন্ত্রী হিসাবে দায়িত্বগ্রহণ করেছেন।
ভাইরাল দাবি
কয়েকজন যুবকের একটি প্রবেশ দ্বারের মাথায় উঠে তার চুড়াটি ভাঙার চেষ্টা ও নেপালের জাতীয় পতাকা দোলানোর ভিডিওটি শেয়ার করে সমাজমাধ্যম ব্যবহারকারীরা সেটিকে কাঠমান্ডুর পশুপতিনাথ মন্দিরের দৃশ্য বলে ভুয়ো দাবি করে শেয়ার করেছে। এক ফেসবুক ব্যবহারকারী ভিডিওটি পোস্ট করে ক্যাপশনে লেখেন, "ওদিকে, নেপালের জাগরিত হিন্দু জেনজি বিপ্লবীরা পশুপতিনাথে কেবল হামলাই করেনি, লাইভ করে ভাঙচুর চালিয়েছে। মজার কথা, নেপালের কমিউনিস্ট সরকারের আমলে কিন্তু হিন্দুদের পবিত্র এই ধর্মস্থানে কোনদিন এরকম উপদ্রব হয়নি। বরং তারা মন্দিরটির রক্ষণাবেক্ষণ করেছে। উল্টোদিকে চাড্ডিমতে যারা জাগ্রত হিন্দু, হিন্দুরাষ্ট্রপন্থী, তারাই এখন ভাঙচুর হামলা করলো পশুপতিনাথে!"
পোস্টটি দেখুন এখানে, আর্কাইভ দেখুন এখানে।
অনুসন্ধানে আমরা কী পেলাম
১. সুদূর পশ্চিম প্রদেশ সভায় হামলা: বুম লক্ষ্য করে ভাইরাল ভিডিওয় প্রবেশ দ্বারের উপর নেপালি ভাষায় লেখা রয়েছে, "সুদূরপশ্চিম প্রদেশ সভা ধনগড়ী, কৈলালী"।
এর থেকে ইঙ্গিত নিয়ে আমরা কিওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে ইনস্টাগ্রামে এক ব্যবহারকারীর ৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৫-এর পোস্টে অনুরূপ দৃশ্য দেখতে পাই। ওই পোস্টের ক্যাপশন অনুসারে, ভিডিওয় জেন জি আন্দোলনকারীদের সুদূর পশ্চিম প্রদেশ সভায় আগুন লাগিয়ে দিতে দেখা যায়।
আমরা দেখি, নেপাল সরকারের সুদূর পশ্চিম প্রদেশ সভা দফতর কৈলালী জেলার ধনগড়ী শহরে অবস্থিত যার সঙ্গে বাগমতি প্রদেশে কাঠমান্ডুর পশুপতিনাথ মন্দিরের কোনও যোগ নেই।
২. ঘটনা সংক্রান্ত প্রতিবেদন: আমরা অনুসন্ধানের মাধ্যমে নেপালি গণমাধ্যম সোধপত্রর ফেসবুক পেজে ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৫-এর একটি পোস্টে ধনগড়ীতে সুদূর পশ্চিম প্রদেশ সভার উপর জেন-জি বিক্ষোভের প্রভাব সংক্রান্ত একটি ভিডিও রিপোর্ট দেখতে পাই। সেখানে ভাইরাল ভিডিওয় দৃশ্যমান প্রবেশ দ্বারটিও দেখা যায়। সোধপত্রর রিপোর্টে, অগ্নিদগ্ধ হওয়ার পর ওই সরকারি দফতরের ভেতরে বর্তমান অবস্থাও দেখা যায়।
এছাড়াও, আমরা কিওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে অমর উজালার ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৫-এর প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, সুদূরপশ্চিম প্রদেশের বিভিন্ন জেলায় সরকারি দফতরগুলিতে জেন-জি বিক্ষোভকারীরা আগুন লাগিয়ে দেয়। প্রতিবেদনে কৈলালীর ধনগড়ীতে সুদূর পশ্চিম প্রদেশ সভা দফতরে অগ্নিসংযোগের কোথাও উল্লেখ করা হয়।
নেপাল নিউজও তাদের ১০ সেপ্টেম্বরের প্রতিবেদনে, নেপালের বিভিন্ন প্রদেশে ক্ষতিগ্রস্ত সরকারি ভবন ও দফতরগুলি সম্পর্কে প্রতিবেদন প্রকাশ করে।