নদীয়ার (Nadia) বাসিন্দা মালগাড়ির চালক শুভেন্দু বড়াইয়ের (Suvendu Borai) ছবি সোশাল মিডিয়ায় ভুয়ো দাবি সহ বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের (Vande Bharat Express) চালক (Loco Pilot) বলে ছড়ানো হচ্ছে।
বুম যাচাই করে দেখে পশ্চিমবঙ্গে চালু হওয়া বন্দে ভারত এক্সপ্রেস চালান বর্ধমানের বাসিন্দা অনিল কুমার (Anil Kumar)।
৩০ ডিসেম্বর ২০২২ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে হাওড়া ও নিউ জলপাইগুড়ির মধ্যে উচ্চ গতিসম্পন্ন ট্রেন বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের সূচনা করেন। ওই দিন প্রধানমন্ত্রীর বঙ্গ সফর নির্ধারিত থাকলেও তাঁর মা হীরাবেন মোদীর প্রয়াণ সংবাদের পর তা বাতিল করা হয়। বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের সূচনার পাশাপাশি ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ওই দিন অন্যান্য একগুচ্ছ রেল প্রকল্পের সূচনা করেন তিনি। হাওড়ায় উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, রাজ্যপাল সি ভি আনন্দবোস ও অন্যান্য রেলের বরিষ্ঠ আধিকারিকরা। ভাইরাল ছবিটি বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের সূচনা প্রসঙ্গে সোশাল মিডিয়ায় ছড়ানো হচ্ছে।
ফেসবুকে ভাইরাল হওয়া নীল জামা পরা এক ব্যক্তির ছবি সহ গ্রাফিকে লেখা হয়েছে, "চাকদহের গৌরব। রাজ্য প্রথম বন্দে ভারত এক্সপ্রেস হাওড়া থেকে জলপাইগুড়ি, এবং সেই ট্রেনের চালক হলেন নদীয়া চাকদহের গৌরব শুভেন্দু বড়াই।" গ্রাফিকটি ফেসবুকে শেয়ার করে ক্যাপশন লেখা হয়েছে, "নদীয়া চাকদহের গৌরবকে জানাই অনেক অনেক অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা!
ফেসবুক পোস্টটি দেখুন এখানে।
বুম দেখে একই দাবি সহ ছবিটি ফেসবুকে ব্যাপকভাবে ছড়ানো হয়েছে।
তথ্য যাচাই
বুম "বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের চালক" বিষয়ে গুগলে কিওয়ার্ড সার্চ করে একাধিক গণমাধ্যমের প্রতিবেদন খুঁজে পায়।
এবিপি আনন্দে ৩০ ডিসেম্বর ২০২২ প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের প্রধান চালক বর্ধমানের বাসিন্দা অনিল কুমার। অনিলের স্ত্রী সুনিতা কুমারী ওই গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন,
চলতি মাসের ৭ তারিখে বন্দে ভারত এক্সপ্রেস চালানোর জন্য স্পেশাল ট্রেনিং নিতে উত্তরপ্রদেশের গাজিয়াবাদে গিয়েছিলেন অনিল।
অনিল থাকেন বর্ধমানের সারদাপল্লীতে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে সংবাদ প্রতিদিনও।
"অনিল কুমার রাজ্যের প্রথম বন্দে ভারত ট্রেনটি চালিয়ে নিয়ে যাবেন", এই ক্যাপশন সহ ফেসবুকে ৩০ ডিসেম্বর খবর প্রকাশ করে আকাশবাণী কলকাতা।
এশিয়ানেট বাংলা গণমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, বন্দে ভারত এক্সপ্রেসে অনিল কুমারের সহযোগী লোকো পাইলট ছিলেন কমলেশ কুমার।
শুভেন্দু বন্দে ভারত এক্সপ্রেস চালাননি
নদীয়া জেলার চাকদহের বাসিন্দা শুভেন্দু বড়াই বন্দে ভারত এক্সপ্রেস চালননি। তিনি আসলে কোনও যাত্রীবাহী ট্রেনের চালকও নন। তিনি ভারতীয় রেলে মালগাড়ি চালান। এব্যাপারে ৩১ ডিসেম্বর ২০২২ আনন্দবাজার অনলাইনে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছিল।
এই সময় গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, হাওড়া স্টেশন থেকে রওনা হওয়া বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের ছবি তুলে শুভেন্দু পোস্ট করার পর ছবিটি ভুয়ো দাবিতে সোশাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে যায়। ২০১৫ সালে চাকুরিতে যোগ দেন শুভেন্দু। বর্তমানে তিনি হাওড়া শাখায় মালগাড়ির চালক।