সোশ্যাল মিডিয়ায় একাধিক সাধুকে মারধর করার একটি সম্প্রতি ভাইরাল ভিডিও শেয়ার করে ব্যবহারকারীরা দাবি করেছেন গাজিয়াবাদের (Ghaziabad) একটি মন্দিরে অবস্থিত মহিলাদের পোশাক পরিবর্তনের (ladies' changing room) ঘরে সিসিটিভি (CCTV) রাখার দায়ে ধরা পড়ে যাওয়ায় তাদের প্রহার করা হচ্ছে।
বুম যাচাই করে দেখে ভাইরাল ভিডিওটি গাজিয়াবাদ বা উত্তর প্রদেশের নয়। ২০২৪ সালে গঙ্গাসাগরগামী উত্তর প্রদেশ থেকে আসা তিন সাধুকে পশ্চিমবঙ্গের পুরুলিয়ার স্থানীয় বাসিন্দারা এই ভাবে মারধর করে।
ভাইরাল দাবি
ভাইরাল ভিডিওয় তিন সাধুকে একটি নীল দেওয়ালের সঙ্গে আটক করে একাধিক ব্যক্তিকে তাদের উপর চড়াও হয়ে মারধর করতে দেখা যায়। ঘটনাটি উত্তরপ্রদেশের গাজিয়াবাদের মুরাদনগরের একটি মন্দিরের দাবি করে এক ফেসবুক ব্যবহারকারী ক্যাপশনে লেখেন, "গাজীয়াবাদের মুরাদ নগরে মন্দিরের বাইরে মহিলাদের জন্য একটা কাপড় পরিবর্তনের রুম ট্রাস্ট কর্তৃপক্ষ রেখেছিলো। আশ্চর্যের বিষয় ঐ রুমে CCTV লাগানো পাওয়া গেছে যার ডাইরেক্ট লাইভ মন্দিরের পূজারী ও মোহন্তদের মোবাইল ফোনে পাওয়া গিয়েছে। মহিলাদের FIR-এর ভিত্তিতে পুলিশি তদন্তে এরা ধরা পড়ে। তারপর যারা ধরা পড়েছে এই হাল, মূল অভিযুক্ত এখণোও ফেরার।"
পোস্টটি দেখুন এখানে, আর্কাইভ দেখুন এখানে।
অনুসন্ধানে আমরা কী পেলাম
১. ভাইরাল ভিডিও পশ্চিমবঙ্গের: বুম ভাইরাল ভিডিওর কিফ্রেমের রিভার্স ইমেজ করে ভিডিওর অনুরূপ স্ক্রিনশটসহ ১৩ জানুয়ারি, ২০২৪-এ প্রকাশিত ইন্ডিয়া.কম-এর একটি প্রতিবেদন পায়। প্রতিবেদন অনুসারে, মকর সংক্রান্তি উপলক্ষে গঙ্গাসাগর মেলাগামী তিন সাধুকে পশ্চিমবঙ্গের পুরুলিয়ায় স্থানীয় বাসিন্দারা মারধর করে।
বিজেপি আইটি সেলের প্রধান অমিত মালব্যও ঘটনার নিন্দা করে ১৩ জানুয়ারি, ২০২৪-এ ভাইরাল দৃশ্যসহ ভিডিওটির একটি দীর্ঘতর সংস্করণ পোস্ট করেন।
এই ঘটনা সংক্রান্ত আনন্দবাজার পত্রিকার সেসময় প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, উত্তরপ্রদেশের বরেলির তিন সাধু গঙ্গাসাগর যাওয়ার পথে পুরুলিয়ার কাশীপুর থানার গৌরাঙ্গডি গ্রামে খাওয়াদাওয়ার জন্য রাস্তার ধারে গাড়ি থামান। তাদের বিরুদ্ধে নাবালিকা অপহরণের চেষ্টার গুজব ছড়ায় যার ফলে স্থানীয় বাসিন্দারা ওই তিন সাধু, তাদের গাড়ির চালক ও রাধুনিকেও মারধর করে।
২. পুরুলিয়া পুলিশের বক্তব্য: পুরুলিয়া পুলিশ তাদের এক্স হ্যান্ডেলে পোস্ট করে ঘটনার বিস্তারিত জানায়। পুলিশের তরফ থেকে বলা হয়, ১১ জানুয়ারি, ২০২৪-এ ভাষাগত পার্থক্যর কারণে তিন জন নাবালিকা ও সাধুদের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি হয়। ওই নাবালিকারা ভয় পেয়ে পালালে স্থানীয় বাসিন্দারা অপহরণের অভিযোগ করে সাধুদের উপর চড়াও হয়। পুলিশ সাধুদের উদ্ধার করে এবং ঘটনায় ১২ জনকে গ্রেফতারও করা হয়েছে।