সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় ডিডি নিউজের সম্পাদক সুধীর চৌধুরীর একটি ডিপফেক (deepfake) ভিডিও ভাইরাল হয়েছে যেখানে তাকে দাবি করতে শোনা যায় ভারত (India) ১৫৪ দেশের সমর্থনে জাতিসংঘে ভেটো (Veto) ক্ষমতা অর্জন করেছে।
বুম দেখে ভাইরাল ভিডিওর অডিও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দিয়ে তৈরি।
ভাইরাল দাবি
ভাইরাল ভিডিওয় সুধীর চৌধুরীকে দাবি করতে শোনা যায় ভারত জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে (UNGA) ভেটো ক্ষমতা অর্জন করেছে, যে “ঐতিহাসিক মুহূর্ত” দশকের পর দশক ধরে অপেক্ষা করার পর এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিরোধিতা সত্ত্বে এসেছে। ভিডিওয় চৌধুরীকে দাবি করতে শোনা যায় ১৫৪টিরও বেশি দেশ ভারতের পক্ষে ভোট দেওয়ায়, ভারত ভেটো ক্ষমতা পেয়ে বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী জাতিগুলোর মধ্যে স্থান অধিকার করেছে।
এক ফেসবুক ব্যবহারকারী ভিডিওটি পোস্ট করে ক্যাপশনে লেখেন, “ভেটো পাওয়ারের শেষ সিল ভারতের জন্য ঐতিহাসিক বিজয়। এখন বিশ্ব বুঝেছে ভারতই আগামী দিনের নেতৃত্ব দেবে। যাদের হজম হয় না, তারা যতই চিৎকার করুক না কেন, ভারতের অগ্রযাত্রা আর ঠেকানো যাবে না। এই সিদ্ধান্তে বিরোধীদের বুক ফেটে যাচ্ছে, অথচ দেশের মানুষ গর্বে ভরে উঠছে। জয় ভারত।”
পোস্টটি দেখুন এখানে, আর্কাইভ দেখুন এখানে।
অনুসন্ধানে আমরা কী পেলাম
১. এমন কোনও প্রতিবেদন নেই: বুম প্রথমে কিওয়ার্ড সার্চ করে কিন্তু ভাইরাল দাবির সমর্থনে কোনো বিশ্বাসযোগ্য প্রতিবেদন খুঁজে পায়নি। এরপর, আমরা জাতিসংঘের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে অনুসন্ধান করে দেখে ভেটো ক্ষমতা পাঁচটি দেশের হাতে রয়েছে - চীন, ফ্রান্স, সোভিয়েত ইউনিয়ন (এখন রাশিয়ান ফেডারেশন), যুক্তরাজ্য এবং যুক্তরাষ্ট্র - কারণ তারা জাতিসংঘ প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। ভারত তাদের মধ্যে তালিকাভুক্ত নয়।
জাতিসংঘের ওয়েবসাইট থেকে জানা যায়, "তাদের সিকিউরিটি কাউনসিলের স্থায়ী সদস্য রাষ্ট্র হিসেবে বিশেষ মর্যাদা দেওয়া হয়, সাথে একটি বিশেষ ভোটিং ক্ষমতা প্রদান করা হয় যা 'ভেটো করার অধিকার' নামে পরিচিত। ঠিক করা হয়েছিল যে যদি পাঁচটি স্থায়ী সদস্যের মধ্যে কোনও একজন ১৫ সদস্যের নিরাপত্তা পরিষদে যদি নেতিবাচক ভোট দেয়, তবে সেই প্রস্তাব বা সিদ্ধান্ত অনুমোদিত হবে না।"
২. এআই অডিও ডিটেক্টর টুলে: ভিডিওতে সাংবাদিক সুধীর চৌধুরীকে ৬ সেকেন্ডের জন্য দেখা যায় এবং একটি অডিও শোনা যায়। তবে, ভাইরাল দৃশ্যে চৌধুরীর ঠোঁটের নড়াচড়ার সঙ্গে অডিওর শব্দগুলি মেলে না। আমরা অডিওটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা যাচাইকারী টুল হিয়া এআই এবং ডিপফেক-ও-মিটারে পরীক্ষা করি। দুটি টুলই অডিওটি এআই দিয়ে তৈরি হিসাবে শনাক্ত করে।