সম্প্রতি হোয়াটসঅ্যাপে ভাইরাল এক বার্তায় ভারতের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের (D.Y. Chandrachud) ছবিসমেত তার নাম করে এক উক্তিতে জনগণকে রাস্তায় বের হয়ে সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানানোর আহ্বান করা হয়েছে।
বুম যাচাই করে দেখেছে উক্তিটি ভুয়ো; প্রধান বিচারপতি ও সুপ্রিম কোর্টের মহাসচিবের কার্যালয় নিশ্চিত করে জানায় শীর্ষ বিচারক কখনই এমন কোনও বিবৃতি দেননি এবং অনলাইনে প্রচারিত বার্তাগুলি মিথ্যা।
ভাইরাল উক্তির বিষয়ে প্রধান বিচারপতির কার্যালয় বুমকে বলে, "যেকোন বর্তমান বিচারকের পক্ষেই এমনটা করা অযৌক্তিক হবে।" সুপ্রিম কোর্টের মহাসচিবের কার্যালয়ও বুমকে জানিয়েছে, "এবিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে"।
প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের ছবিসহ ভাইরাল সেই বার্তার শিরোনাম হিসেবে লেখা হয়, "ভারতীয় গণতন্ত্র সুপ্রিম কোর্ট জিন্দাবাদ"। এছাড়াও ওই বার্তায় লেখা হয়, "আমরা ভারতের সংবিধান, ভারতের গণতন্ত্রকে বাঁচানোর জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করছি। কিন্তু এর জন্য আপনাদের সহযোগিতাও খুবই গুরুত্বপূর্ণ, সকল মানুষের ঐক্যবদ্ধ হওয়া ও রাস্তায় নেমে সরকারের কাছে তাদের এক্তিয়ার নিয়ে প্রশ্ন করা উচিত, এই স্বৈরাচারী সরকার মানুষকে ভয় দেখাবে, হুমকি দেবে, কিন্তু আপনারা ভয় পাবেন না, সাহস রাখুন এবং সরকারের কাছে হিসাব চান, আমি আপনাদের সাথে আছি।"
আমরা দেখতে পাই এই একই উক্তি হিন্দিতেও শেয়ার করা হচ্ছে।
তথ্য যাচাই
বুম ভাইরাল উক্তির সত্যতা যাচাইয়ে প্রধান বিচারপতির কার্যালয়ের সাথে যোগাযোগ করলে তার এই উক্তিকে কাল্পনিক বলে উড়িয়ে দেয়।
প্রধান বিচারপতির কার্যালয় দৃঢ়ভাবে জানায় এই ধরনের কোনো বিবৃতি প্রচার অথবা বিচারপতি চন্দ্রচূড় এমন কোন বক্তব্য প্রকাশ করেননি। প্রধান বিচারপতির কার্যালয় বুমকে বলে, "যেকোন বর্তমান বিচারকের পক্ষে এমনটা করা অযৌক্তিক হবে।" বিষয়টি সপ্তাহান্তে প্রধান বিচারপতির নজরে আনা হয়েছিল এবং তারা যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সুপ্রিম কোর্টের সেক্রেটারি জেনারেলের সাথে কথা বলেছে।
আমরা সুপ্রিম কোর্টের মহাসচিবের কার্যালয়েও যোগাযোগ করলে তারা একই বিষয় নিশ্চিত করেন।
"বার্তাগুলি ভুয়ো এবং এই বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে," সুপ্রিম কোর্টের মহাসচিব অতুল কুর্হেকার বুমকে জানান।
সুপ্রিম কোর্টও বার্তাটির সত্যতা অস্বীকার করে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে লেখে, "ভারতের সুপ্রিম কোর্টের নজরে এসেছে যে একটি সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে (কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার জন্য জনসাধারণকে আহ্বান জানাতে) ভারতের প্রধান বিচারপতির একটি ছবি ব্যবহার করে এক মিথ্যা উক্তি প্রচার করা হচ্ছে। পোস্টটি ভুয়ো, অসৎ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং ক্ষতিসাধনকারী। ভারতের প্রধান বিচারপতি এমন কোনো পোস্ট জারি করেননি বা তিনি এই ধরনের কোনো পোস্টের অনুমোদন দেননি। আইন প্রয়োগকারী কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে এবিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।"