টলিউড (Tollywood) পরিচালক ও ব্যারাকপুরের তৃণমূল (TMC) বিধায়ক রাজ চক্রবর্তীর (Raj Chakrabarty) রাজস্থানের সুফি তীর্থস্থান আজমেঢ় শরীফ দরগা (Ajmer Sharif Dargah) ভ্রমণের এক সেট পারিবারিক ছবি সোশাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে ভুয়ো দাবি করা হচ্ছে তিনি সপরিবারে ইসলাম (Islam) ধর্ম গ্রহণ করেছেন।
বুম যাচাই করে দেখে রাজ চক্রবর্তী, তাঁর পত্নী শুভশ্রী গাঙ্গুলি ও শিশু পুত্র ইউভান কেউই ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেননি। এগুলি আজমেঢ় শরীফ দরগা ভ্রমণের সময় তোলা।
ভাইরাল হওয়া এক সেট ছবিতে দেখা যায় রাজ চক্রবর্তী ও তাঁর পুত্র ইউভানের মাথাতে ইসলামিক টুপি রয়েছে। রাজের সহধর্মিনী অভিনেত্রী শুভশ্রী গাঙ্গুলিকে মাথায় ওড়না জড়াতে দেখা যায় ওই ছবিগুলিতে।
ছবিগুলি ফেসবুকে পোস্ট করে ক্যাপশনে লেখা হয়েছে, "আলহামদুলিল্লাহ আলহামদুলিল্লাহ। পরিবার সহ ইসলাম ধর্ম গ্রহন করলেন রাজ চক্রবর্তী! আল্লাহ তাদের সবাইকে তুমি গ্রহন করে নাও আমীন! মহান আল্লাহ সকল অমুসলিম ভাই বোন কে ইসলাম বুঝার তৌফিক দান করুক আমীন।"
পোস্টটি দেখতে ক্লিক করুন এখানে।
পোস্টটি দেখতে ক্লিক করুন এখানে।
আরও পড়ুন: ২০১৮ সালে ওড়িশার থানায় পুলিশের নারী নিগ্রহের ভিডিও ছড়াল পশ্চিমবঙ্গের বলে
তথ্য যাচাই
ছবিগুলি নিজস্বী তোলার ভঙ্গিমায় হওয়ায় বুম রাজ চক্রবর্তী ও শুভশ্রী গাঙ্গুলির সোশাল মিডিয়া অ্যাকাইন্টে খোঁজ করে।
বুম দেখে ছবিগুলি ব্যারাকপুরের বিধায়ক রাজ চক্রবর্তীর ফেসবুক পেজে ২৭ মার্চ ২০২২ পোস্ট করা হয়েছিল। ওই পোস্টে ছবিগুলিকে রাজস্থানের সুফি তীর্থস্থান আজমেঢ় শরিফ দরগা ভ্রমণের বলে উল্লেখ করা হয়।
ছবি সহ ফেসবুক পোস্টের ক্যাপশন লেখা হয়, "গত রাতের কথা! একবার আজমেঢ় শরিফ পরিদর্শন। সর্বশক্তিমান আমাদের সকলকে আশীর্বাদ দিন এবং রক্ষা করুন। ধন্যবাদ কাশিফ ভাই আমাদের যত্ন নেওয়ার জন্য, আত্মাকে সমৃদ্ধ করার মতো এক অভিজ্ঞতা।"
রাজ পত্নী অভিনেত্রী শুভশ্রীও তাঁর নিজস্ব ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টেও একই পোশাকে ছবিগুলি ২৮ মার্চ ২০২১ পোস্ট করেন।
সেলেব দম্পতি রাজ ও শুভশ্রী সোশাল মিডিয়ায় আজমেঢ় সফরের ছবিগুলি পোস্ট করলে নেটনাগরিকদের একাংশের কটাক্ষের শিকার হন। আক্রমণ করা হয় রাজের একরত্তি ইউভানকেও।
বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন করা হলে ২৮ মার্চ, ২০২২ আনন্দবাজার পত্রিকা অনলাইনকে রাজ বলেন, "বাংলার মানুষ হিসেবে ধর্ম নিরপেক্ষ পরিবেশে মানুষ হয়েছি। সব ধর্ম সমান আমার চোখে। সব ধর্মীয় স্থানে যাই। কোথায় যাব, কী খাব, কী পরব—তাই নিয়ে কোনও দিন কাউকে কৈফিয়ৎ দিইনি। আগামী দিনেও দেব না।"
এব্যাপারে টাইমস অফ ইন্ডিয়ার প্রতিবেদন পড়া যাবে এখানে। বুম রাজের ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করা নিয়ে কোনও প্রতিবেদন খুঁজে পায়নি।
ত্রয়োদশ শতাব্দীর সুফি সন্ত ও দার্শনিক হলেন খাজা মৈনুদ্দিন চিস্তি। ইলতুৎমিসের রাজত্বকালে ইরান থেকে তিনি দিল্লি আসেন। পরে রাজস্থানের আজমেঢ়ে থিতু হন তিনি। ক্রমশ ভারতের সর্বধর্মের বহুত্ববাদী সংস্কৃতির সমন্বয়ের পথপ্রদর্শক হয়ে ওঠেন, দেশ বিদেশে অগনিত অনুরাগী তাঁর মার্গ দর্শনে প্রভাবিত হন। আজমেঢ়েই রয়েছে খাজা চিস্তির সমাধিসৌধ।
আরও পড়ুন: মহারাষ্ট্রে জেসিবি দিয়ে ষাঁড় নিকেশের ভিডিও উত্তরপ্রদেশের বলে ছড়াল