Explore

HomeNo Image is Available
AuthorsNo Image is Available
Contact UsNo Image is Available
MethodologyNo Image is Available
Correction PolicyNo Image is Available

Languages & Countries :






More about them

ফ্যাক্ট চেকNo Image is Available
বিশ্লেষণNo Image is Available
ফাস্ট চেকNo Image is Available
আইনNo Image is Available

Explore

HomeNo Image is Available
AuthorsNo Image is Available
Contact UsNo Image is Available
MethodologyNo Image is Available
Correction PolicyNo Image is Available

Languages & Countries :






More about them

ফ্যাক্ট চেকNo Image is Available
বিশ্লেষণNo Image is Available
ফাস্ট চেকNo Image is Available
আইনNo Image is Available
ফ্যাক্ট চেক

ব্রিটেন থেকে পাওয়া ভারতের স্বাধীনতার স্বরূপ নিয়ে ভুয়ো প্রশ্ন ছড়াল

ক্ষমতা হস্তান্তরের চুক্তি উদ্ধৃত করে ভাইরাল পোস্টে ১৯৪৭ সাল পরবর্তী ভারতের স্বাধীনতা প্রসঙ্গে ভুয়ো প্রশ্ন তোলা হচ্ছে।

By - Mohammed Kudrati | 23 April 2023 12:08 PM GMT

সোশাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া দাবিতে ক্ষমতা হস্তান্তরের চুক্তি (transfer of power agreement) উদ্ধৃত করে ভারতের (India) স্বাধীনতা (independence) কতটা সার্বভৌম, সে সম্পর্কে সংশয় ও প্রশ্ন তোলা হয়েছে। বলা হচ্ছে, এই চুক্তি বা হস্তান্তর সংক্রান্ত আইন কংগ্রেস (Congress) স্বাধীনতার পরেও দেশবাসীর কাছে গোপন (secret) রেখেছিল।

এই ধরনের দাবিগুলি সবই একতরফা এবং পরস্পর সম্পর্কহীন।

বুম ব্রিটেনের সঙ্গে ভারতের ক্ষমতা হস্তান্তর বিষয়ক কোনও চুক্তির হদিশ পায়নি। ভারত স্বাধীনতা অর্জন করেছিল ১৯৪৭-এর ‘ভারত স্বাধীনতা আইন’ বলে, যার সম্যক ধারা সকলেরই জানা রয়েছে।

এই সব পোস্টে আরও দাবি করা হয়েছে যে, ওই তথাকথিত চুক্তির কারণে নাকি ভারতের সংবিধান প্রণয়ন ও সংশোধনে নানা রকম প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয়। এ ছাড়াও ভারতকে নাকি ব্রিটেনের রাজাকে ১০০০ কোটি টাকা পেনশন দিতে হয় এবং ৩০ হাজার টন করে গোমাংস রফতানি করতে হয়, এবং ভারতীয়রা স্বাধীনতার পরেও ব্রিটিশ নাগরিকই থেকে যান।

এই সব কাল্পনিক নিদান যাতে পাল্টে ফেলা যায়, সে জন্য সমাজমাধ্যমের পোস্টগুলিতে নরেন্দ্র মোদিকে পুনরায় আগামী লোকসভা নির্বাচনে জিতিয়ে আনার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

এই বার্তাটি নীচে উদ্ধৃত করা হলো l বুমের হোয়াটসঅ্যাপ হেল্পলাইন নম্বরেও (৭৭০০৯০৬৫৮৮) বার্তাটি পাঠানো হয়েছে সত্যতা যাচাই করতে।




ফেসবুকেও বার্তাটি ব্যাপকভাবে ভাইরাল হয়েছে।


Full View


Full View



তথ্য যাচাই

১. ‘ক্ষমতা হস্তান্তর’ নামে কোনও চুক্তি কি আছে?

বার্তাটিতে এ ধরনের আজগুবি চুক্তির কথা বলা হয়েছে। তা ছাড়া, এমনও দাবি করা হয়েছে যে ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস নাকি এই চুক্তির বিষয়টি দেশবাসীর কাছে গোপন রেখেছিল। বুম অবশ্য এমন দাবির সমর্থনে কোনও তথ্য খুঁজে পায়নি।

১৯৪৭ সালের ভারত স্বাধীনতা আইনেই ভারত ও পাকিস্তান স্বাধীন হয়। ব্রিটিশ পার্লামেন্টের তৈরি এই আইন প্রকাশ্য। এর ৭ম অনুচ্ছেদে স্পষ্ট বলা আছে, নতুন এই দুই রাষ্ট্রে ব্রিটিশদের কোনও দায়িত্ব নেই এবং দু দেশের আইনসভাই নিজ-নিজ আইন প্রণয়ন করার পূর্ণ অধিকারী।

ব্রিটিশ সরকারের এই আইনটি দেখতে পারেন এখানে

২. ভারতীয় সংবিধানের কোনও অংশ কি ভারতীয় সংসদ, প্রধানমন্ত্রী কিংবা রাষ্ট্রপতি সংশোধন করতে পারেন না?

ভাইরাল পোস্টগুলির দাবি সংবিধানের ৩৬৬, ৩৭১, ৩৭২ ও ৩৯৫ অনুচ্ছেদগুলি ভারতীয় পার্লামেন্ট, রাষ্ট্রপতি কিংবা প্রধানমন্ত্রী সংশোধন করতে পারেন না। কেন এই অনুচ্ছেদগুলিকেই পোস্টে বেছে নেওয়া হয়েছে, তা অবশ্য খোলসা করা হয়নি।

অনুচ্ছেদগুলি নিম্নরূপ।

১. ৩৬৬ নং অনুচ্ছেদটি সংবিধানের বিভিন্ন সংজ্ঞার রূপরেখা বিবৃত করেছে

২. ৩৭১ নং অনুচ্ছেদে যুক্তরাষ্ট্রের ১১টি অঙ্গরাজ্যের জন্য রকমারি বিশেষ বন্দোবস্তের কথা আছে

৩. ৩৭২ নং অনুচ্ছেদটি সংবিধান প্রণয়নের সময় থেকে চালু ধারাগুলি চালিয়ে যাওয়ার কথা বলে আর

৪. ৩৯৫ নং অনুচ্ছেদটি প্রাক-স্বাধীনতা পর্বের নানা আইন বাতিল করার নির্দেশ দেয়

সংবিধান সংশোধনের ক্ষেত্রে আইন প্রণয়নের অধিকার পার্লামেন্টের রয়েছে, কিন্তু এই ৪টি অনুচ্ছেদ সংসদও সংশোধন করতে পারে না দাবি ভুয়ো।

৩৭১ অনুচ্ছেদটি যেমন একাধিক বার সংশোধিত হয়েছে। ইন্ডিয়ানএক্সপ্রেসের এই প্রতিবেদন থেকে স্পষ্ট, এই অনুচ্ছেদটি যদিও সংবিধান প্রণয়নের সময়েই অনর্ভুক্ত করা হয়েছিল, তথাপি পরবর্তী কালে সংবিধানে সংশোধন এনে ৩৭১এ থেকে ৩৭১জে পর্যন্ত অনুচ্ছেদগুলি যোগ করা হয়।

৩. রানি এলিজাবেথকে ভারত ১০০০ কোটি টাকা পেনশন দেয়

এই দাবিতে কোনও সময়সীমা উল্লেখ করা হয়নি।

তবে ভারত ব্রিটিশ সম্রাট বা সম্রাজ্ঞীকে কোনও পেনশন দেয় বলে কোনও তথ্যের হদিশ বুম পায়নি। উল্টে বরং ভারতই এখনও ব্রিটেনের কাছে নানা খাতে আর্থিক অনুদান পেয়ে থাকে।

সারা পৃথিবী জুড়ে ব্রিটেনের নানা দান-খয়রাতির ওপর নজর রাখা সংস্থা ইন্ডিপেন্ডেন্ট কমিশন ফর এইড ইমপ্যাক্ট-এর খতিয়ান— ২০১৬ থেকে ২০২০ পর্যন্ত ভারত ব্রিটেনের কাছ থেকে ১৯০ কোটি পাউন্ড অনুদান পেয়েছে।

৪. ভারত বছরে ৩০ হাজার টন গোমাংস ব্রিটেনে রফতানি করতে বাধ্য

ভারতীয় আইনে গোমাংস রফতানি নিষিদ্ধ। গরু বা বাছুরের মাংসকেই এই পর্যায়ে ফেলা হয়। তবে মোষের মাংস রফতানি নিষিদ্ধ নয়। সংসদে এক প্রশ্নের উত্তরে সে কথা জানানোও হয়েছে। দেখুন এখানে

কেন্দ্রীয় বাণিজ্য মন্ত্রকের অধীন কৃষিপণ্য ও প্রক্রিয়াজাত পণ্যের রফতানির কর্তৃপক্ষ জানাচ্ছেন, ব্রিটেনে রফতানি হওয়া মোষের মাংসের পরিমাণ যৎসামান্য। ২০১৯-২০-তে ব্রিটেনে রফতানি হওয়া মোষের মাংসের পরিমাণ ছিল মাত্র ২৯ মেট্রিক টন (৩৯.৯০ লক্ষ টাকার)l ২০২০-২১ এবং ২১-২২-এ কোনও রফতানিই হয়নি। এই পরিসংখ্যানই বলে দেয়, বছরে ব্রিটেনে ৩০ হাজার টন গোমাংস রফতানির গুজবটি ভুয়ো। নীচের তালিকা থেকেও সেটা স্পষ্ট হবে, যেমন স্পষ্ট হবে এখানেও


ভারত থেকে মোষের মাংস রফতানির পরিমাণ। (সূত্র: এপিইডিএ)


৫. কমনওয়েল্থ গোষ্ঠীভুক্ত দেশগুলির নাগরিকরা কি এখনও ব্রিটেনের প্রজা?

না কমনওয়েল্থ হলো সেই সকল দেশের সরকারগুলির সংগঠন, যারা এক সময় ব্রিটেনের সাম্রাজ্যের অধীন ছিল বা এখনও ব্রিটিশ শাসন শিরোধার্য করে। যে কোনও সময় এই রাষ্ট্রগোষ্ঠী ছেড়ে বেরিয়ে যাওয়া যায়, আবার তাতে দ্রুত ফিরেও আসা যায়। মলদ্বীপ যেমন ২০১৬ সালে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপের অভিযোগে এই জোট থেকে বেরিয়ে গিয়েছিল, আবার ২০২০ সালেই সেই জোটে ফিরেও আসে

এই জোট বা গোষ্ঠীর সদস্যপদ স্বেচ্ছামূলক, তা সে দেশ শাসিতই হোক, বা সার্বভৌম প্রজাতন্ত্র, যেমন সিঙ্গাপুর, ভারত বা দক্ষিণ আফ্রিকা, যেখানে রাষ্ট্রপ্রধানরা সেই দেশের নাগরিকদের দ্বারাই নির্বাচিত হন, আবার কানাডা, অস্ট্রেলিয়া কিংবা নিউজিল্যান্ড-এর মতো ডমিনিয়ন, যেখানে ব্রিটিশ সম্রাটই এক-একজন গভর্নর জেনারেল মারফত ওই সব দেশের আনুষ্ঠানিক রাষ্ট্রপ্রধান রূপে গণ্য হয়ে থাকেন।

এখন যারা কমনওয়েলথভুক্ত দেশগুলির নাগরিক, তাঁরা আর ব্রিটেনের প্রজা রূপে বিবেচিত হন না, তাঁরা নিজ-নিজ দেশের স্বাধীন নাগরিক বলেই গণ্য। দেখুন এখানে

৬. কমনওয়েলথ ভুক্ত দেশগুলি নিজেদের মধ্যে পারস্পরিক প্রতিনিধিত্ব হাইকমিশনার মারফত করেন কেন?

যখন দুটি দেশের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপিত হলে তা বজায় রাখেন রাষ্ট্রদূতরা, তখন কমনওয়েলথভুক্ত দেশগুলির ক্ষেত্রে সে কাজ করেন হাইকমিশনাররা। ভাইরাল হওয়া পোস্টগুলির দাবি —এতেই নাকি প্রমাণ হয় যে, এই সব রাষ্ট্র পূর্ণমাত্রায় স্বাধীন নয়।

তবে এটা নিছকই পরিভাষাগত প্রভেদ। কারণ হাইকমিশনাররাও রাষ্ট্রদূতদের মতোই স্বশাসিত সার্বভৌমত্ব ভোগ করেন। হাইকমিশনার বনাম রাষ্ট্রদূত পদ নিয়ে এই বিভ্রান্তি ১৯৬৫ সালে ব্রিটিশ পার্লামেন্টে আলোচিত হয়েছিল, যখন কমনওয়েলথ জোটের সদস্য রাষ্ট্রগুলি হাইকমিশনার মারফতই ব্রিটেনে নিজেদের প্রতিনিধিত্ব করতো এবং ব্রিটেনও ওই সব দেশে সেটাই করতো।

ব্রিটিশ পার্লামেন্টের এক সদস্য জিওফ্রে ডি ফ্রিটাস (যিনি নিজেও একদা হাইকমিশনার পদে ছিলেন) সে সময় হাউস অফ কমন্স-এ প্রধানমন্ত্রী অ্যালেক ডগলাস হিউমের কাছে জানতে চেয়েছিলেন, হাইকমিশনারের পদ, মর্যাদা ও ক্ষমতা রাষ্ট্রদূতদের চেয়ে বেশি কিনা।

জবাবে ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, “যে দেশে আমাদের থেকে স্বতন্ত্র রাষ্ট্র্রপ্রধান রয়েছেন, সেখানে রষ্ট্রদূত নিয়োগে কিছু বিচারবিভাগীয়, আইনগত সমস্যা তো আছেই, তবে তা ছাড়াও ওই সব কমনওয়েলথভুক্ত দেশের সঙ্গে আমাদের বিশেষ সম্পর্কটি হাইকমিশনার নামক বিশেষ পদের মধ্য দিয়ে যাপিত হয়।” দেখুন এখানে

ভুয়ো তথ্য প্রচারের প্রতিযোগিতায় ইতিহাসকে সংশোধন করার প্রবণতা ক্রমশ বেড়ে চলেছে l এর আগেও বুম এ ধরনের একটি ভুয়ো খবরের পর্দাফাঁস করেছিল, তাতে দাবি করা হয় যে গাঁধীকে ‘মহাত্মা’ উপাধি নাকি ব্রিটিশরা প্রদান করে



Related Stories