কেন্দ্রীয় সরকারের অর্থ বন্টন সম্পর্কে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে (Amit Shah) এক সাংবাদিকের (journalist) করা প্রশ্নের উত্তরের ছাঁটাই ভিডিও বিভ্রান্তিকর দাবি সহ সোশাল মিডিয়ায় পোস্ট করে দাবি করা হচ্ছে প্রশ্ন শুনে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এতোটাই বিব্রত বোধ করেন যে, কোনও উত্তরই দিতে পারেননি।
ওই ভিডিওটির একটি বড় সংস্করণে কিন্তু বুম দেখে, ২০২০তে অমিত শাহ হায়দরাবাদে (Hyderabad) অনুষ্ঠিত এক জনসভায় প্রশ্নের উত্তর দিয়েছিলেন। এবং তাঁকে বিব্রত বোধ করতে দেখা যায়নি।
কাটছাঁট করা ভিডিওটিতে একজন সাংবাদিক অমিত শাহকে হিন্দিতে প্রশ্ন করছেন। তাঁর প্রশ্ন হল, "এখানে বৃষ্টি হয়েছে, বন্যা হয়েছে, কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকার এক পয়সাও পাঠায়নি। এমন অবস্থায়, কিসের ভিত্তিতে দিল্লির নেতারা এখানে মুখ দেখাতে আসেন?"
হিন্দি ক্যাপশন সহ ভিডিওটি এখন ছড়ানো হচ্ছে। তাতে বলা হয়েছে, "দক্ষিণের চিত্র তারকাদের মতো দক্ষিণের (তেলেঙ্গানা) এক সাংবাদিককেও সক্রিয় হতে দেখা যাচ্ছে।"
পোস্টটি দেখতে ক্লিক করুন এখানে।
ভিডিওটির অন্য একটি ক্যাপশনে বলা হয়েছে, "যখন সৎ সাংবাদিকতা হয়, তখন একনায়করা চুপ করে যায়।"
পোস্টটি দেখতে ক্লিক করুন এখানে।
আরও পড়ুন: জাপানের ইয়াহাগি নদী বাঁধের ভিডিও ভুয়ো দাবিতে ছড়াল ভারতের নয়া বাঁধ বলে
তথ্য যাচাই
বুম দেখে ভাইরাল ভিডিওটিতে ভি৬ নিউজ-এর লোগো রয়েছে। এবং যে সাংবাদিক অমিত শাহকে প্রশ্ন করছেন, তাঁর মাইকেও ওই একই লোগো দেখা যাচ্ছে। সেই সূত্র ধরে আমরা ফেসবুকে সার্চ করি। তার ফলে, ভি৬ নিউজ-এর যাচাই করা ফেসবুক পেজ আমাদের সামনে আসে।
এরপর, 'অমিত শাহ' কিওয়ার্ড দিয়ে সার্চ করলে, ভাইরাল ভিডিওটির একটি বড় সংস্করণ আমরা দেখতে পাই। সেটি ২৯ নভেম্বর, ২০২০ চ্যানেলটির অফিসিয়াল পেজে আপলোড করা হয়।
৩ মিনিট ২ সেকেন্ডের ইন্টারভিউটি 'অমিত শাহ', 'হায়দরাবাদ' ও 'জিএইচএমসিইলেকশনস২০২০' হ্যাশট্যাগ দিয়ে আপলোড করা হয়।
ভিডিওটি দেখুন এখানে।
আসল ভিডিওটিতে আমরা শাহকে প্রশ্নের উত্তর দিতে শুনতে পাই। ভাইরাল ভিডিওটিতে তিনি চুপ করে আছেন বলে মনে হলেও, তিনি চুপ করে থাকেননি।
ভিডিওটিতে, সাংবাদিক তাঁর কাছে প্রথমে জানতে চান, "এখানে বৃষ্টি হয়েছে, বন্যা হয়েছে, কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকার এক পয়সাও পাঠায়নি। এই পরিস্থিতিতে, কিসের ভিত্তিতে দিল্লির নেতারা এখানে মুখ দেখাতে আসেন?"
ভাইরাল ভিডিওটিতে তিনি চুপ করে আছেন মনে হলেও, আসল ভিডিওটিতে শাহ সাংবাদিকটির প্রশ্নের উত্তর দেন। উনি বলেন, "আমরা হায়দরাবাদের জন্য সবচেয়ে বেশি টাকা বরাদ্দ করেছি। আমি এইটুকু্ই বলতে চাই যে, যখন সাত লক্ষ মানুষের বাড়িতে জল ঢুকে যায় তখন শ্রী ওয়েসি ও শ্রী কেসিআর কোথায় ছিলেন। তাঁরা একজনের বাড়িতেও যাননি এবং তাঁদের দেখাও পাওয়া যায়নি কোথাও। আমাদের কর্মীরা, আমাদের সাংসদ ও মন্ত্রীরা মানুষের কাছে যান। জল দাঁড়িয়ে যাওয়ার কারণ কি? ওয়েসির অনুমতির ফলে যে জবরদখল হয়েছে, সেটাই এখানে জল জমে যাওয়ার কারণ।"
উনি আরও বলেন, "আমরা হায়দরাবাদের মানুষকে এই আশ্বাস দিতে পারি যে, পৌর নিগম যদি বিজেপির হাতে আসে, তাহলে আমরা জবরদখলকারীদের উৎখাত করব ও হায়দরাবাদকে জলমগ্ন হওয়া থেকে বাঁচাবো। আমরা একে একটি আধুনিক শহর হিসেবে গড়ে তুলব যেখানে থাকবে একটি বিশ্বমানের আইটি হাব।"
ওই সাক্ষাৎকারের পরের দিকে, ওই সাংবাদিক আবারও অর্থ বন্টন নিয়ে গড়মিল সংক্রান্ত একটি প্রশ্ন করেন শাহকে। সেই প্রশ্নের তৎক্ষনাৎ জবাব দেন শাহ। তিনি ওই সাংবাদিককে বলেন, "বিস্তারিত হিসেব সঙ্গে নিয়েই আমি আজকে (এখানে) এসেছি।"
আরও পড়ুন: আরএসএস প্রধান মোহন ভগবতের সঙ্গে দ্রৌপদী মুর্মুর ছবিটি সম্পাদিত