পকিস্তানি কলমচি তারেক ফাতাহ (Tarek Fatah) রাজস্থানের হাসপাতালে অস্ত্রোপচার চলা কালে দুই ডাক্তারের মধ্যে তুমুল বাদানুবাদের (arguments) ঘটনা টুইট করে দাবি করেছেন সেটি পাকিস্তানের (Pakistan) একটি হাসপাতালের ঘটনা।
বুম দেখলো, দৃশ্যটি রাজস্থানের উমায়েদ হাসপাতালের, যেখানে এক গর্ভবতী মহিলার অস্ত্রোপচারের সময়েই তাতে যুক্ত দুইশল্য চিকিৎকের মধ্যে অপারেশন থিয়েটারের ভিতরেই তুমুল ঝগড়া বেঁধে যায়।
কানাডা প্রবাসী তারেক ফাতাহ-এর বিপুল জনপ্রিয়তা রয়েছে ভারতীয় দক্ষিণপন্থীদের মধ্যে, তিনি ভিডিওটি টুইটারে উদ্ধৃত করে ক্যাপশন লিখেছেন, "একটা দেশ কেমন করে এত বেশি সংখ্যক মলনালী উৎপাদন করতে পারে? পাকিস্তানি ডাক্তাররা কী করে এটা করতে পারেন? এখানে অপারেশন থিয়েটারের ভিতরেই শল্যচিকিৎকরা নার্সদের সঙ্গে বাগবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়ছেন!"
আর্কাইভ টুইটটি দেখুন এখানে।
মুসলিমদের নিশানা করে ভুল তথ্য প্রচারের জন্য এর আগে বহু বার বুম তারেক ফাতাহ-এর পর্দাফাঁস করেছে। এই ধরনের প্রতিবেদনগুলো পড়ে দেখুন এখানে।
আবার কেউ কেউ ঘটনাটি ভারতের পাঞ্জাব রাজ্যের চণ্ডীগড়ের এক হাসপাতালের ঘটনা বলেও ভুয়ো দাবি করেছেন।
ফেসবুক পোস্টটি দেখুন এখানে।
তথ্য যাচাই
বুম ভিডিওটিকে কয়েকটিমূল ফ্রেমে ভেঙে নিয়ে খোঁজখবর চালিয়ে দেখে ২০১৭ সালের ৩০ অগস্ট ডেকান হেরাল্ড গণমাধ্যমের টুইটে এই ভিডিওটি প্রকাশিত হয়, যাতে ঘটনাটিকে রাজস্থানের যোধপুর হাসপাতালের দৃশ্য বলে দাবি করা হয়েছিল।
সেই সূত্র অনুসরণ করে আমরা আরও খোঁজখবর করে দেখি, সংবাদসংস্থা এএনআই-ও একই দিনে ওই ভিডিওটি টুইট করেছিল। তাতে লেখা ছিল, "রাজস্থান—যোধপুরের উমায়েদ হাসপাতালের ওটি-তে এক অন্তঃসত্ত্বা রোগিণীর উপর অস্ত্রোপচারকে কেন্দ্র করে দুই চিকিৎসকের মতান্তর! (২৯.০৮.১৭)"
টুইটটি দেখতে ক্লিক করুন এখানে।
গণমাধ্যম দ্য হিন্দুতেও আমরা একটি প্রতিবেদন দেখতে পাই। সেখানে লেখা রয়েছে,স্ত্রীরোগবিশেষজ্ঞ ডক্টর অশোক নৈনওয়াল এবং এম এল টাক নামের দুই ডাক্তারের মধ্যে প্রায় আধ ঘন্টা ধরে বাদানুবাদ চলে।
সে সময় যোধপুরের ওই হাসপাতালের সুপারিন্টেডেন্ট ডক্টর রঞ্জনা দেশাই বিবিসি-কে জানিয়েছিলেন—"প্রসূতি ও তার মা, উভয়েই ভালো আছে এবং মিডিয়ার একাংশ ডাক্তারদের গাফিলতিতে নবজাতকের মৃত্যু হয়েছে বলে যা রটিয়েছিল, সেটা ঠিক নয়।"
ডক্টর দেশাই বিবিসি-কে আরওজানান—"এটা ঠিক যে এক নবজাতকের মৃত্যু হয়েছিল—একই ঘরে অন্য একটি অপারেশনের টেবিলে অন্য এক প্রসূতি এক মৃত সন্তান সেদিন প্রসব করেছিলেন, কিন্তু এই দুটি ঘটনাকে মিশিয়ে ফেলা ভুল।"
হিন্দি দৈনিক পত্রিকাতে ৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৭ প্রকাশিত একটি সংবাদে লেখা হয়, যোধপুরের জেলা শাসক রবিকুমার সুরপুর বিবদমান দুই চিকিৎক অশোক নৈনওয়াল এবং এম এল টাক-কে ডাক্তারি নৈতিকতার পরিপন্থী আচরণের দায়ে দোষী সাব্যস্ত করেছিলেন এবং উভয়ের বিরুদ্ধেই শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছিলেন।