Explore

HomeNo Image is Available
AuthorsNo Image is Available
Contact UsNo Image is Available
MethodologyNo Image is Available
Correction PolicyNo Image is Available

Languages & Countries :






More about them

ফ্যাক্ট চেকNo Image is Available
বিশ্লেষণNo Image is Available
ফাস্ট চেকNo Image is Available
আইনNo Image is Available

Explore

HomeNo Image is Available
AuthorsNo Image is Available
Contact UsNo Image is Available
MethodologyNo Image is Available
Correction PolicyNo Image is Available

Languages & Countries :






More about them

ফ্যাক্ট চেকNo Image is Available
বিশ্লেষণNo Image is Available
ফাস্ট চেকNo Image is Available
আইনNo Image is Available
ফ্যাক্ট চেক

গ্রামীণ ভারতে কি প্রকাশ্যে শৌচকর্ম বন্ধ হয়েছে? সরকারি পরিসংখ্যানেই গরমিল

স্বচ্ছ ভারত প্রকল্পের দাবি, ১০০ শতাংশ গ্রামীণ পরিবারেই শৌচালয় রয়েছে। আর জাতীয় পরিসংখ্যান দফতরের তথ্য, ৭১ শতাংশ গ্রামীণ পরিবারের আছে শৌচালয়।

By - Mohammed Kudrati | 10 Dec 2019 10:58 AM GMT

জাতীয় পরিসংখ্যান দফতরের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৮ সালের জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ৭১.১ শতাংশ গ্রামীণ পরিবারের নাগালে এসেছে শৌচালয়। পরিসংখ্যান ও কর্মসূচি মন্ত্রকের অধীন এই দফতরের মতে ভারতের শহরাঞ্চলে এই শতকরা হার ৯৬.২ এবং গোটা দেশের গ্রাম-শহর মিলিয়ে এর শতাংশ ৭৯.৮।

মহাত্মা গান্ধীর ১৫০ তম জন্মদিবসের অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ভারতকে খোলা জায়গায় মলত্যাগ-মুক্ত দেশ বলে ঘোষণা করার দু মাস পরে জাতীয় পরিসংখ্যান দফতরের(এনএসও) এক খতিয়ানে এই তথ্য সামনে এল। প্রধানমন্ত্রী এই সাফল্যের জন্য স্বচ্ছ ভারত অভিযানকে কৃতিত্ব দেন। যার অধীনে সারা দেশে ১০ কোটি ১০ লক্ষ শৌচালয় দেশের প্রায় ৬ লক্ষ গ্রামে তৈরি করে দেওয়া হয় এবং শহরাঞ্চলে ৬০ লক্ষ শৌচালয় তৈরি করে দেওয়া হয়। ২০১৪ সালের ২ অক্টোবর থেকে পাঁচ বছরের মধ্যেই এই সাফল্য অর্জিত হয়েছে বলে দাবি করা হয়।

এ বছরের ২ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা করেন, '‍'ভারতবাসী খোলা জায়গায় মলত্যাগের অভিশাপ থেকে নিজেদের মুক্ত করে ফেলেছে।''

কিন্তু জাতীয় পরিসংখ্যান দফতরের প্রকাশিত রিপোর্টে অন্য তথ্য দেওয়া হয়েছে। এই রিপোর্ট ১ লক্ষ ৬ হাজার ৮৩৮ টি বাড়ির নমুনা সমীক্ষার ভিত্তিতে তারা তথ্য তৈরি করে, যার মধ্যে রয়েছে ৬৩,৭৮৬টি গ্রামীণ এবং ৪৩, ১০২টি শহুরে পরিবার।

এনএসও বনাম স্বচ্ছ ভারত

মজার ব্যাপার হলো, স্বচ্ছ ভারত ওয়েবসাইটে এই একই সময়ের জন্য যে পরিসংখ্যান পেশ করা হয়েছে, তা এনএসও-র দেওয়া পরিসংখ্যানের থেকে অনেকটাই আলাদা।

২০১৯ আর্থিক বছরের শেষে এসে স্বচ্ছ ভারত যেখানে গ্রামীণ ভারতে ৯৮.৬৩ শতাংশ পরিবারে শৌচালয় তৈরি করে দেওয়ার দাবি জানাচ্ছে, সেখানে এনএসও-র হিসাবে সেটা নেহাতই ৭১.১ শতংশ।

এনএসও-র পরিসংখ্যান অনুসারে শৌচালয় আছে এমন গ্রামীণ পরিবারের সংখ্যা সবচেয়ে কম ওড়িশা এবং উত্তরপ্রদেশে—যথাক্রমে ৪৯.৩ এবং ৫২ শতাংশ। অথচ স্বচ্ছ ভারত প্রকল্পের ওয়েবসাইট অনুযায়ী এই পরিসংখ্যান ওড়িশার ক্ষেত্রে ৮৭.০৬ শতাংশ এবং উত্তরপ্রদেশের ক্ষেত্রে ১০০ শতাংশ। উভয় পরিসংখ্যানেই অবশ্য তালিকার একেবারে শেষে রয়েছে ওড়িশা।

লোকসভার প্রশ্নোত্তরে স্বচ্ছ ভারত প্রকল্পের দেওয়া পরিসংখ্যানই পুনরুচ্চারিত হয়েছে।

একটি প্রশ্নের উত্তরে পানীয় জল ও জল নিষ্কাশন দফতরের ভারপ্রাপ্ত মন্ত্রী ২০১৮ সালের ১৩ ডিসেম্বর লোকসভায় জানান, ৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত উত্তরপ্রদেশের একশ শতাংশ গ্রামীণ পরিবারকে শৌচালয়ের আওতায় এনে ফেলা হয়েছে, যেখানে ওড়িশায় পরিসংখ্যান ৭৩. ৯৭ শতাংশ। আর তখনই ২০১৯ সালের ৩ অক্টোবরের আগেই একশ শতাংশ বাড়িতে শৌচালয় তৈরি করে দেওয়ার লক্ষ্য পূরণের শপথও পুনরুচ্চারিত হয়, এ বছর যা অর্জন করে ফেলার কৃতিত্বই দাবি করে বসেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী।

এনএসও-র পরিসংখ্যানে আরও উল্লেখ করা হয় যে, সারা দেশের মধ্যেই ওড়িশা ও উত্তরপ্রদেশ পরিবার-পিছু ব্যক্তিগত শৌচালয় তৈরির ক্ষেত্রেও সবচেয়ে পিছিয়ে।

এনএসও বনাম জাতীয় বার্ষিক গ্রামীণ জল-নিষ্কাশন সমীক্ষা

এনএসও-র সমীক্ষা এক্ষেত্রেও জাতীয় জলনিষ্কাশন সমীক্ষার থেকে ভিন্ন পরিসংখ্যান পেশ করেছে। বিশ্ব ব্যাঙ্ক থেকে ১৫০ কোটি ডলার ঋণ নিয়ে তৈরি এই দ্বিতীয় প্রকল্পটি ২০১৮-র অক্টোবর থেকে ২০১৯-এর ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সময়ে পায়খানা ব্যবহারের পরিসংখ্যান স্বাধীন ও নিরপেক্ষভাবে সমীক্ষা করে। সমীক্ষায় ৬১৩৬টি গ্রাম, ৯২ হাজার ৪০টি পরিবার, ৫৭৮২টি স্কুল, ৫৮০৩টি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র, ১০১৫টি সুলভ শৌচালয়, এবং ৬০৫৫টি জনস্থান খতিয়ে দেখা হয়।

সরকারের তরফেই এটিকে জলনিকাশি বন্দোবস্তের বৃহত্তম নিরপেক্ষ সমীক্ষা বলে দাবি করা হয়, যে সমীক্ষা অনুযায়ী ৯৩.১ শতাংশ গ্রামীণ ভারত এখন শৌচালয়ের সুবিধা ভোগ করছেন। এই পরিসংখ্যান স্বচ্ছ ভারত প্রকল্পের পেশ করা তথ্যের কাছাকাছি, তবে এনএসও-র দেওয়া রিপোর্ট থেকে অনেকটাই আলাদা।

তবে এই বার্ষিক জলনিকাশি সমীক্ষার পদ্ধতি নিয়ে রয়টার্স-এর মতো কোনও-কোনও সংস্থা প্রশ্ন তুলেছে। যার উত্তরে আবার সরকার প্রতিটি প্রশ্ন ধরে-ধরে জবাবও দিয়েছে।

এনএসও তার সমীক্ষায় ঘাটতির সম্ভাবনা স্বীকার করেছে

গ্রামীণ জলনিকাশি সংক্রান্ত সমীক্ষার ক্ষেত্রে উত্তরদাতারা যে অনেক সময় সঠিক উত্তর দেননি, এমন সম্ভাবনা এনএসও মেনে নিয়েছে। বাড়িতে শৌচকর্ম করার ব্যবস্থা রয়েছে কিনা, সেই প্রশ্ন করার আগেই এ সংক্রান্ত সরকারি প্রকল্পের সুবিধা পরিবারগুলি পেয়েছে কিনা, তা জানতে চাওয়া হয়েছিল। "এমন হওয়া সম্ভব যে, সরকারি প্রকল্পের সুবিধা না-পাওয়ার কথা বললে সেই সুবিধা আরও বেশি করে পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে, এই মনোভাব থেকে উত্তর দেওয়া হয়। সরকারি প্রকল্পের কোনও সুবিধা পাচ্ছি না, এ কথা বললে যদি আরও বেশি করে সেই সব সুবিধা পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে, এই মনোভাব অনেক ক্ষেত্রেই উত্তরদাতাদের ক্ষেত্রে কাজ করে থাকতে পারে। প্রথাগত নমুনা সমীক্ষা পদ্ধতির ক্ষেত্রে এ ধরনের সীমাবদ্ধতা থেকেই যায়।"

তবে যে পরিসংখ্যানটাই সঠিক বা গ্রাহ্য হোক, ২০১৪ সালে যখন স্বচ্ছ ভারত প্রকল্প গৃহীত হয়, তখনকার তুলনায় গ্রামীণ জলনিকাশি ব্যবস্থায় যে প্রভূত অগ্রগতি ঘটেছে, সে বিষয়ে সন্দেহ নেই, কারণ সে সময় গ্রামীণ ভারতের মাত্র ৩৮.৭ শতাংশ পরিবারের নাগালে শৌচালয় ছিল।

Related Stories