পশ্চিমবঙ্গে ভারতীয় জনতা পার্টির এক নেতাকে তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মীরা মারধর করে বলে অভিযোগ করা হয়— চার বছরের পুরানো সেই ঘটনার সেই ভিডিও ক্লিপটিকেই কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষ বর্ধন সম্প্রতি নিগৃহীত হয়েছেন বলে মিথ্যে দাবি করে শেয়ার করা হয়েছে।
ভাইরাল হওয়া ক্লিপে দেখা যাচ্ছে একদল লোক এক ব্যক্তিকে মারধর করছে আর পুলিশ ওই ব্যক্তিকে উদ্ধার করে সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে।
পাঞ্জাবি ভাষায় লেখা ক্যাপশনের অনুবাদ, "দেখো বন্ধুরা, এ বার কাজ শুরু হয়ে গেছে। জমির মালিকরা বিজেপি সাংসদ হর্ষবর্ধনকে ধরে মারলেন।"
(পাঞ্জাবি ভাষায় লেখা মূল টেক্সট "ਲਓ ਭਰਾਵੋ ਕੰਮ ਚਲ ਪਿਆ ਜੁੱਤੀਆਂ ਦਾ BJP ਸੰਸਦ ਹਰਸ਼ਵਰਧਨ ਦੀ ਸੇਵਾ ਕਰਤੀ ਜ਼ਿਮੀਂਦਾਰਾ ਨੇਂ)
কেন্দ্র সরকারের আনা নতুন কৃষক বিলের বিরুদ্ধে পাঞ্জাবে যে প্রতিবাদ চলছে তার পরিপ্রেক্ষিতে এই ভিডিওটি শেয়ার করা হয়েছে।
ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে
একই ক্যাপশন দিয়ে সার্চ করার পর আমরা দেখতে পাই ওই একই ক্লিপ মিথ্যে দাবির সঙ্গে শেয়ার করা হয়েছে।
তথ্য যাচাই
বুম অনুসন্ধান করে দেখেছে ক্লিপে দেখানো ভিডিওটি ২০১৬ সালের। ওই ভাইরাল হওয়া ক্লিপে যাকে দেখা যাচ্ছে তিনি ভারতীয় জনতা পার্টির পশ্চিমবঙ্গের একজন নেতা সুব্রত মিশ্র। তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মীরা (টিএমসি) তাঁকে মারধর করে বলে অভিযোগ করা হয়।
২০১৬ সালের ২০ অক্টোবরের এনডটিভির প্রতিবেদন থেকে জানা যায় যে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ও আসানসোলের বিজেপি সাংসদ বাবুল সুপ্রিয় আসানসোলের বিএনআর মোড়ে পৌঁছালে দুই দলের কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। তৃণমূল কর্মীরা পার্টির বর্ষীয়ান নেতা সুব্রত মিশ্রকে মারধর করে এবং বাবুল সুপ্রিয়কেও আঘাত করে বলে অভিযোগ করা হয়।
এ এন আই'র ভিডিও প্রতিবেদনেও ওই একই দৃশ্য দেখতে পাওয়া যায় এবং সেই ভিডিওতে ১৪ সেকেন্ডের মাথায় ওই একই ব্যক্তিকে মারধর করতে দেখা যায়।
নীচে ২০১৬ সালের ১৯ অক্টোবরের ছবিতে মিশ্রকে দেখতে পাওয়া যাবে।
২০১৬ সালে ডিমানিটাইজেশনের পর এই একই ছবি ভাইরাল হয়েছিল। তখন ওই ছবিতে মিথ্যে দাবি করা হয়েছিল যে, দিল্লির একটি ব্যাঙ্কের বাইরে উত্তেজিত জনতা বিজেপি সাংসদ হর্ষবর্ধনকে মারধর করে।
বর্ধন তখন টুইট করে জানান যে ভাইরাল ভিডিওতে যা দাবি করা হয়েছে তা বিদ্বেষপূর্ণ এবং অসৎ উদ্দেশ্যে ছড়ানো হয়েছে।
বুম এর আগে রাজনৈতিক নেতাদের জনতা মারধর করছে বলে মিথ্যে দাবি করে শেয়ার করা সম্পূর্ণ সম্পর্কহীন ভিডিওর তথ্য যাচাই করেছে এবং তা মিথ্যে প্রমান করেছে।