২০১৮ সালে এক ব্যবসায়ী খুনের প্রতিবাদে তেজস্বী যাদব একটি মোমবাতি মিছিল বার করেছিলেন। কিন্তু সেই মিছিলের ছবি এখন এই মিথ্যে দাবি সমতে শেয়ার করা হচ্ছে যে, রাষ্ট্রীয় জনতা দলের নেতা, গুলনাজ খাতুনের জন্য ন্যায়বিচার চেয়ে মিছিল করছেন। ২০ বছর বয়সী গুলনাজ খাতুনকে বিহারের বৈশালী জেলায় পুড়িয়ে মারা হয়। কারণ, তিন ব্যক্তি কয়েক দিন ধরে তাঁকে অনুসরণ করছিল বলে, তিনি প্রতিবাদ করেছিলেন।
ছবিটি গুলনাজ খাতুনের নারকীয় হত্যার ঘটনার সঙ্গে জুড়ে দেওয়া হচ্ছে। ৩০ অক্টোবর ২০২০ বিহারের বৈশালী জেলার রসুল হাবিব গ্রামে, তিন ব্যক্তি গুলনাজের গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। বলা হচ্ছে যে, বেশ কয়েক দিন ধরেই তারা গুলনাজকে অনুসরণ করছিল ও হুমকি দিচ্ছিল। ১৫ নভেম্বর, মৃত্যুর সঙ্গে লড়াইয়ে হেরে যান গুলনাজ। ঘটনাটি সোশাল মিডিয়ায় ঝড় তোলে।। টুইটারে #জাস্টিসফরগুলনাজ (গুলনাজের জন্য ন্যায়বিচার চাই) বলে গুলনাজের জন্য ন্যায়বিচারের দাবি শেয়ার করা হতে থাকে। অন্য দিকে, আততায়ীদের গ্রেফতারি চেয়ে, মৃতের পরিবারের সদস্যরা ধর্নায় বসেন। স্থানীয় পুলিশ বুমকে জানায় যে, একজন অভিযুক্ত গ্রেফতার হয়েছে আর বাকি দু'জন পালিয়ে বেড়াচ্ছে।
ছবিটিতে যাদবকে তাঁর অনুগামীদের সঙ্গে একটি মোমবাতি মিছিলে অংশ নিতে দেখা যাচ্ছে। ছবিটির সঙ্গে দেওয়া হিন্দি ক্যাপশনে বলা হয়, "বিহারের মেয়ে গুলনাজের জন্য বিচার দাবি করে জনতার সঙ্গে মোমবাতি হাতে মিছিলে যোগ দিয়েছেন তেজস্বী। তেজস্বীর সমর্থকরা বিচারের জন্য লড়াইকে জোরদার করবেন এবং, ইনশাহ আল্লা, গুলনাজ ন্যায়বিচার পাবেন। #জাস্টিসফরগুলনাজ।"
(হিন্দিতে লেখা ক্যাপশন: बिहार की बेटी गुलनाज़ के इंसाफ के लिए #Tejashwi #Yadav कैंडल मार्च के साथ सड़क पर उतर गए हैं। तेजस्वी भैया के आने से इस लड़ाई में मज़बूती मिलेगी और इंशा अल्लाह गुलनाज़ को इंसाफ मिलेगे। #JusticeforGulnaz)
টুইটটি আর্কাইভ করা আছে এখানে।
ফেসবুকে ভাইরাল
একই ক্যাপশন দিয়ে ফেসবুকে সার্চ করলে দেখা যায়, সেখানেও ছবিটি মিথ্যে দাবি সমেত শেয়ার করা হচ্ছে।
তথ্য যাচাই
ছবিটির রিভার্স ইমেজ সার্চ করলে, ডিসেম্বর ২০১৮-য় প্রকাশিত কয়েকটি সংবাদ প্রতিবেদন সামনে আসে। তাতে বলা হয় যে, গুঞ্জন খেমকা নামের এক ব্যবসায়ী খুন হওয়ার প্রতিবাদে, তেজস্বী যাদব একটি মোমবাতি মিছিলে অংশ নেন। রাষ্ট্রীয় জনতা দলের অন্যান্য নেতারা ও পাটনার ব্যবসায়ীরাও ওই মিছিলে যোগ দেন।
২৪ ডিসেম্বর ২০১৮-য়, জি নিউজ-এর প্রতিবেদনে বলা হয় যে, এক তরুণ ব্যবসায়ীর হত্যার প্রতিবাদে, বিহারের রাজধানীর ব্যবসায়ী মহলও যাদবের সঙ্গে যোগ দেয় ও বিচার দাবি করে। ভাইরাল ছবিতে যাঁদের যাদবের পাশে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যাচ্ছে, প্রতিবেদনটির সঙ্গে দেওয়া ছবিতেও ওই ব্যক্তিরা রয়েছেন।
২০১৮-য় তেজস্বী যাদব নিজেও ওই মিছিলের ছবি টুইট করে বিহারের ব্যবসায়ীদের প্রতি তাঁর সমর্থন জানান। সেই সঙ্গে রাজ্যে আইন শৃঙ্খলার অবনতির জন্য নীতীশ কুমারের নেতৃত্বাধীন জনতা দল (ইউনাইটেড) ও ভারতীয় জনতা পার্টির জোট সরকারের সমালোচনা করেন।