এক দল লোক একটি বাসে আক্রমন করছে—এই রকম এক ফুটেজ দিল্লির দাঙ্গায় মুসলমানরা জনগণের সম্পত্তি ধ্বংস করছে বলো মিথ্যে দাবি করা হচ্ছে। ভিডিওটিতে মহারাষ্ট্রের ঔরঙ্গাবাদ জেলার কান্নাডে একদল লোককে এক বাস চালককে মারতে দেখা যাচ্ছে। একটি পথ দুর্ঘটনার পর ওই হাঙ্গামা শুরু হয়।
বুম কান্নাড পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করে। তাঁরা বলেন, দুর্ঘটনার পর কিছু ক্ষিপ্ত মানুষ ওই তাণ্ডব চালান। তার সঙ্গে সাম্প্রদায়িকতার কোনও সম্পর্ক নেই।
দিল্লির ভয়াবহ দাঙ্গার পরিপ্রেক্ষিতে ওই ভিডিও শেয়ার করা হচ্ছে। এই প্রতিবেদন লেখার সময় পর্যন্ত দিল্লির হিংসায় ২৫ জন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে ও আহতের সংখ্যা শতাধিক।
ভিডিওটি অনেকে শেয়ার করেন। তাঁদের মধ্যে আছেন 'ফ্যাক্ট হান্ট'-এর সহ-প্রতিষ্ঠাতা শশাঙ্ক সিং। ফ্যাক্ট হান্ট নিজেদের একটি তথ্য-যাচাই সংস্থা বলে দাবি করে। ঘটনাটিতে সাম্প্রদায়িক রঙ চড়াতে শেয়ার-করা ভিডিওর ক্যাপশনে বলা হচ্ছে যে, মাথায় ফেজ-পরা লোকজনকে দেখা যাচ্ছে তাতে, এবং এও বলা হচ্ছে যে ঘটনাটি দিল্লিতে ঘটেছে।
তথ্য যাচাই
ভাইরাল ভিডিওটির কয়েটি প্রধান ফ্রেম দিয়ে বুম রিভার্স ইমেজ সার্চ করে। তার ফলে, ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২০-তে আপলোড করা 'এবিপি-মাঝা'র খবরের একটি অংশ সামনে আসে। তাতে ওই একই ফুটেজ দেখতে পাওয়া যায়।
ওই ফুটেজের ক্যাপশনে বলা হয় যে, কান্নাড-ঔরঙ্গাবাদ শিরপুর রুটের বাসের চালককে ১০-১৫ জন মারধোর করে কান্নাড শহরে। মারপিট শুরু হয় যখন বাসের চালক একটি গাড়িকে পেরিয়ে যাওয়ার জন্য যথেষ্ট জায়গা দিতে অস্বীকার করেন। ওই চ্যানেলে আরও বলা হয় যে, কান্নাড পুলিশ স্টেশনে একটি মামলা রুজু করা হয়েছে আর দুই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড দিয়ে বুম সার্চ করে। তার ফলে, 'টাইমস অফ ইন্ডিয়া' ও 'মহারাষ্ট্র টাইমস'-এর রিপোর্ট সামনে আসে। ইউটিউবে আপলোড-করা ভিডিওর ক্যাপশনে যে কথা বলা হয়, ওই রিপোর্টগুলিও একই কথা বলে। মহারাষ্ট্র টাইমস আরও জানায় যে, ভিডিওটি তোলেন ওই বাসেরই এক যাত্রী।
বুম কান্নাড পুলিশের ইন্সপেক্টর বিপি রাউতের সঙ্গে যোগাযোগ করে। ওই ঘটনার সঙ্গে সাম্প্রদায়িকতার কোনও সম্পর্কের কথা নস্যাৎ করেন রাউত। "এটা একটা ব্যক্তিগত ঝগড়া। একটি বাস একটি গাড়িকে ধাক্কা মারলে, ঝামেলা শুরু হয়। এটা কোনও সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষ নয় এবং আদৌ দিল্লিতে ঘটেনি। এটা ঘটেছে ঔরঙ্গাবাদের কান্নাডে," রাউত বুমকে একথা বলেন।