আসানসোল মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশনের সাইনবোর্ডের একটি ছবি সোশাল মিডিয়ায় ভেসে বেড়াচ্ছে। তাতে দেখা যাচ্ছে নামটা ইংরেজি, উর্দু ও হিন্দিতে লেখা হয়েছে। দাবি করা হচ্ছে, এ ক্ষেত্রে রাজ্য সরকার উর্দুকে বাংলার চেয়েও বেশি গুরুত্ব দিয়েছে।
এই কারসাজি করা ছবিটি টুইটার ও ফেসবুকে ঘুরছে আর নেটিজেনরা তৃণমূল কংগ্রেস পরিচালিত রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন এই মনে করে যে, সরকার উর্দুকে হিন্দি বা বাংলার ওপর স্থান দিয়েছে। তাঁরা এও জানতে চাইছেন যে, এ রাজ্যে আরও যে যে ভাষায় মানুষ কথা বলেন, সেগুলিকে কেন স্থান দেওয়া হয়নি। সে রকম একটি টুইটে বলা হয়েছে, "পশ্চিমবঙ্গে [west বানান লেখা হয়েছে waste, অর্থাৎ, বর্জ্য] হিন্দির চেয়ে উর্দু আগে আসে। আর ১০-২০ বছরের মধ্যে সুরাবর্দির মতন একজন Mullox মুখ্যমন্ত্রী আশা করতে পারেন আর সেই সঙ্গে ডিরেক্ট অ্যাকশন ডে। ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি হতে চলেছে। ঘুমিয়ে থাকা বাঙালি ভদ্রলোকেরা এর থেকে একটা স্পষ্ট বার্তা শুনে নিন।"
টুইটটি দেখতে এখানে ক্লিক করুন; আর্কাইভ দেখতে এখানে।
ছবিটি বাংলায় একই ধরনের বিবরণ সহ শেয়ার করা হয়েছে। সে রকম একটি পোস্টে বলা হয়েছে, "#বাংলা_পক্ষ এই বিষয়ে তোমাদের মতামত কি? #বাংলা_ছেড়ে_উর্দু_প্রেম #TMছিঃ_Shame_Shame যদি উর্দু থাকে তাহলে অলচিকি, গুরুমুখী, তামিল, তেলেগু, ওড়িয়া, মারাঠী ইত্যাদিতেও লেখা হবে না কেন⁉"
এই রকম দু'টি পোস্ট আর্কাইভে আছে এখানে ও এখানে।
আরও পড়ুন: মুসলিম কিশোরীকে সামায়িক এক দিনের পুলিশ করার ছবি নিল সাম্প্রদায়িক রঙ
তথ্য যাচাই
কয়েকটি কি-ওয়ার্ড দিয়ে বুম সার্চ করলে ফেসবুক লাইভ-এ আসানসোল কর্পোরেশনের মেয়র জিতেন্দ্র তিওয়ারির দেওয়া মিউনিসিপ্যালিটি ভবনে স্বাধীনতা দিবস উদযাপনের ছবি পাওয়া যায়। ১১ সেকেন্ডের মাথায় আমরা ওই একই বাড়ির ছবি দেখতে পাই, যার সাইনবোর্ডে আসানসোল মিউনিসিপ্যাল করপোরেশন নামটা বাংলায় লেখা আছে।
ভিডিওটির ক্যাপশনে লেখা: "লাইভ: স্বাধীনতা দিবসের প্রাক্কালে আসানসোল মিউনিসিপ্যাল করপোরেশনের মেইন অফিসে পতাকা উত্তোলন।"
নীচে সেটির স্ক্রিনশট দেওয়া হল।
৮ সেপ্টেম্বর তারিখের একটি ফেসবুক পোস্টে রাজ্যব্যাপী পৌর স্বাস্থ্য কর্মীদের বিক্ষোভের ছবি দেওয়া হয়। তাতে আসানসোল কর্পোরেশন ভবনের ছবিতে দু'টি সাইনরোর্ড দেখা যাচ্ছে। সেগুলিতে নামটা ইংরেজি, বাংলা, হিন্দি ও উর্দুতে লেখা আছে।
ছবিটির আর্কাইভ সংস্করণ এখানে রয়েছে।
কাটছাঁট করা ছবিটি নস্যাৎ করার জন্য অন্য এক ফেসবুক ব্যবহারকারি পুরো বাড়িটিরই একটি ছবি পোস্ট করেন।
কাটছাঁট করা ভাইরাল ছবিটিতে যে সাইনবোর্ডটি দেখা যাচ্ছে, সেটি ১৫ অগস্টের পর লাগানো হয়েছিল কিনা বুম তা স্বাধীনভাবে জানতে পারেনি। এর জন্য আমরা তিওয়ারির সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। তাঁর কাছ থেকে জানার পর এই প্রতিবেদন আপডেট করা হবে।
আরও পড়ুন: কঙ্গনা-সেনা বচসা: মধ্যপ্রদেশের মসজিদের ছবি মুম্বাইয়ের বলে ভাইরাল