একটি মেসেজে দাবি করা হয়েছে যে, ভারত সরকার একটি সতর্কবার্তা জারি করে জানিয়েছে, কিছু দুর্বৃত্ত জনগণনার কাজে নিযুক্ত আধিকারিক সেজে, বা আয়ুষ্মান ভারত স্কিমের জন্য তথ্য সংগ্রহ করার ভান করে মানুষের বাড়িতে ঢুকে লুটপাট চালাচ্ছে। এই বার্তাটি ভুয়ো।
বুম স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক ও ন্যাশনাল হেলথ অথরিটির সঙ্গে যোগাযোগ করলে তারা এ রকম কোনও বিজ্ঞপ্তি জারি করার কথা অস্বীকার করে।
আমরা দেখতে পাই যে ২০১৬ সাল থেকে সোশ্যাল মিডিয়ায় এই মেসেজটি ঘুরছে। বিভিন্ন দেশে এটি ভাইরালও হয়েছে। বার্তাটি শুধু সেই দেশের দফতর এবং পরিপ্রেক্ষিত অনুসারে টেক্সট এডিট করে দেওয়া হয়েছে। আমরা প্রমাণ পাই যে ২০১৭ সালে দক্ষিণ আফ্রিকায় একটি দল এই পদ্ধতি অনুসরণ করে লুটতরাজ চালাচ্ছিল। তৎকালীন দক্ষিণ আফ্রিকা সরকারের পক্ষ থেকে নাগরিকদের জন্য সতর্কবার্তা জারি করা হয়। ২০১৯ ভোটের আগে দক্ষিণ আফ্রিকার সরকার সরকার ফের এই স্ক্যামের বিরুদ্ধে বিবৃতি দেয়।
ফেসবুকে মেসেজটি ভাইরাল হয়েছে এবং বুম তার হোয়্যাটসঅ্যাপ হেল্পলাইনে যাচাই করার জন্য এই মেসেজটি পেয়েছে।
বিগত কিছু দিন ধরে বহু ফেসবুক ইউজার এই মেসেজটি শেয়ার করেছেন।
আরও পড়ুন: ভিন্ন-ধর্মে দম্পতির বিয়ের কার্ডের সঙ্গে ভাইরাল খুনের সম্পর্কহীন ছবি
Full View
তথ্য যাচাই
"স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক আধিকারিক লুটপাট" এই কিওয়ার্ড দিয়ে সার্চ করে আমরা এই স্ক্যামের বিরুদ্ধে কোনও সতর্কবার্তা জারি করা হয়েছে বা ভারতের কেউ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে উল্লেখ করে কোনও সংবাদ প্রতিবেদন দেখতে পাইনি। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক বা ন্যাশনাল হেলথ অথরিটি কোনও প্রেস বিজ্ঞপ্তি বা বার্তা জারি করেনি, যেমনটা ভাইরাল হওয়া মেসেজে দাবি করা হয়েছে।
তার পর আমরা মেসেজটি ভাল করে পর্যালোচনা করি, এবং দেখতে পাই যে এই মেসেজে যে সব প্রকল্প এবং মন্ত্রকের কথা বলা হয়েছে, তাদের নাম উল্লেখে ত্রুটি রয়েছে। ভাইরাল হওয়া মেসেজে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রককে স্বরাষ্ট্র দফতর এবং আয়ুষ্মান ভারত স্বাস্থ্য পরিকল্পনাকে 'আয়ুশ্যমান' ভারত বলে উল্লেখ করা হয়েছে। আয়ুষ্মান ভারত একটি সরকারি পরিকল্পনা যার মাধ্যমে ৪০ শতাংশেরও বেশি নাগরিককে স্বাস্থ্য বিমা দেওয়া হবে। আয়ুষ্মান ভারতের এই পরিকল্পনার নাম বদলে প্রধানমন্ত্রী জন আরোগ্য যোজনা করা হয়েছে।
জনগণনার সরকারি তারিখ সার্চ করলে দেখা যাচ্ছে সরকার এখনও জনগণনার সরকারি তারিখ ঘোষণা করেনি। দ্য প্রিন্ট তাদের প্রতিবেদনে জানিয়েছে, "জনগণনার কাজ এই বছরের শেষের দিকে শুরু হতে পারে।"
তবে
২০১৭ সালে সাউথ আফ্রিকার স্বরাষ্ট্র দফতর এই ধরনের স্ক্যামের বিরুদ্ধে একটি সতর্কবার্তা জারি করেছিল এবং ২০১৯ সালের এপ্রিল মাসে ওই দেশের সরকার নাগরিকদের উদ্দেশে একই বার্তা আবার দিয়েছিল।
আমরা সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন সংবাদ প্রতিবেদন দেখতে পাই, যাতে এটিকে ভুয়ো দাবি বলে প্রমাণ করা হয়েছে। ২০১৯ সালে কুইন্ট একই দাবি মিথ্যে বলে প্রমাণ করে, তবে তখন এই মেসেজে আয়ুষ্মান ভারতের বিষয়টি যুক্ত ছিল না।
আরও পড়ুন: আসানসোল পৌরনিগমের সাইনবোর্ডর কাটছাঁট করা ছবি মিথ্যে দাবি সহ ভাইরাল