একটি সংবাদপত্রের ক্লিপিং-এ দাবি করা হয়েছে যে, ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি (আইআইটি), খড়গপুরে পড়ার সময়, অরবিন্দ কেজরিওয়ালের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে। কিন্তু ক্লিপিংটি ভুয়ো। একটি ওয়েবসাইটের সাহায্যে তৈরি করা হয়েছে ক্লিপিংটি।
ক্লিপিংটিতে 'দ্য টেলিগ্রাফ' কাগজে প্রকাশিত একটি খবরের অংশ দেখা যাচ্ছে। খবরটির শিরোনামে বলা হয়েছে, 'আইআইটির ছাত্রের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ'। খবরের তারিখ, সোমবার, জুন ৮, ১৯৮৭। সেখানে বলা হয়েছে, "এক স্থানীয় মেয়ের অভিযোগ যে, ১৯ বছরের এক যুবক তাকে ধর্ষণ করেছে"।
খবরটিতে আরও বলা হয়েছে, অভিযুক্তের নাম অরবিন্দ কেজরিওয়াল। মেয়েটি অভিযোগ দায়ের করলে পুলিশ কেজরিওয়ালকে গ্রেপ্তার করে। খবরটির ডেটলাইনে খড়গপুরের উল্লেখ রয়েছে।
আম আদমি পার্টির নেতা, ১৯৮০'র দশকে আইআইটি খড়গপুর থেকে পাশ করেন।
ওই ক্লিপিং-এ যা বলা হয়েছে, তা এই রকম: "ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি এই জেনে স্তম্ভিত যে, তাদের এক ছাত্রের বিরুদ্ধে একজন স্থানীয় মেয়েকে ধর্ষণ করার অভিযোগ উঠেছে। পুলিশ ক্যাম্পাসে গিয়ে দেখে সে তার হস্টেলের ঘরে লুকিয়ে আছে। জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য পুলিশ আটক করেছে তাকে। পুলিশ বলেছে ১৯ বছরের ছাত্রটির নাম অরবিন্দ কেজরিওয়াল। শুক্রবার সে পার্টি করতে বন্ধুদের সঙ্গে বেরয়, কিন্তু রাত্রে হোস্টেলে ফেরেনি।"
আরও পড়ুন: অমিত মালব্য আপের র্যালির পুরনো ভিডিও বিভ্রান্তিকর ক্যাপশনের সঙ্গে শেয়ার করেছেন
৮ ফেব্রুয়ারি দিল্লির বিধানসভা নির্বাচন হতে চলেছে। তার ঠিক আগে এই ভুয়ো খবরের ক্লিপিংটি ভেসে উঠেছে।
প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড দিয়ে ফেসবুকে সার্চ করলে দেখা যায় যে, ওই ক্লিপিংটি ২০১৬ সালেও ভাইরাল হয়েছিল। 'দ্য কুইন্ট' ২০১৮'য় সেটিকে ভুয়ো বলে খণ্ডন করেছিল।
ক্লিপিংটির সত্যতা যাচাইয়ের জন্য সেটি বুমের হেল্পলাইনেও আসে।
বুম দেখে যে খবরের কাগজের ক্লিপিংটি আসল নয়। কারণ, ওই নামের কাগজের স্টাইলশিটের (ছাপার নিজস্ব নিয়মকানুন) সঙ্গে লেখাটির বিস্তর গরমিল চোখে পড়ে। কি-ওয়ার্ড দিয়ে সার্চ করার ফলে, সংবাদপত্রের ক্লিপিং তৈরি করে এমন অনলাইন জেনেরেটরের সন্ধান পাওয়া যায়। যে কোনও সংবাদপত্রের মাস্টহেড, শিরোনাম ও তারিখ দিয়ে খবরের ক্লিপিং তৈরি করা যায় ওই ওয়েবসাইটের সাহায্যে।
ওই ওয়েবসাইটে বুম একটি খবরের ক্লিপিং তৈরি করার চেষ্টা করে। দেখা যায়, প্রতিটি ক্লিপিং-এ, তৃতীয় কলমের বিষয়বস্তু একই রকম থেকে যায়।
কেজরিওয়াল সংক্রান্ত খবরের ক্লিপিং ও বুমের তৈরি ক্লিপিং তুলনা করার জন্য পাশাপাশি দেওয়া হল। দেখা যাচ্ছে, উভয় ক্লিপিংয়েই তিন নম্বর কলামের বিষয়বস্তু হুবহু এক।
নির্বাচন কমিশনকে দেওয়া কেজরিওয়ালের হলফনামাও খুঁটিয়ে দেখি আমরা। তাতে উনি জানিয়েছিলেন যে, কোনও অপরাধের জন্য তিনি কখনও দোষী সাব্যস্ত হননি। বুম দিল্লি পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তারা এ বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে অস্বীকার করেন।
ওই একই ভুয়ো খবর তৈরির ওয়েবসাইটকে আগেও ব্যবহার করা হয়েছিল। কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীর কাছে অবৈধ মাদকদ্রব্য ও হিসেব বহির্ভূত টাকা পাওয়া গিয়েছে বলে একটি সংবাদপ্রত্রের ভুয়ো ক্লিপিং তৈরি করা হয়েছিল এক সময়।