একটি ভাইরাল গ্রাফিক সোশাল মিডিয়ায়, বিশেষত ফেসবুকে শেয়ার করে বিভ্রান্তিকর দাবি করা হচ্ছে যে হালকা গরম জলে লবন অথবা ভিনিগার মিশিয়ে গার্গল করলে করোনাভাইরাসের সংক্রমন থেকে নিস্কৃতি পাওয়া সম্ভব। বুম দেখেছে এই দাবিটি ভুয়ো এবং বিভ্রান্তিকর, গরম জলে গার্গাল করাকে বিশ্বের নানা দেশের স্বাস্থ্য দপ্তর করোনাভাইরাস থেকে নিরাপদ থাকার কোনও পন্থার মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করেনি।
ফেসবুকে শেয়ার হওয়া গ্রাফিকে বাংলায় লেখা হয়েছে, "ফুসফুসে পৌছানোর আগে করোনাভাইরাস চার দিন গলায় থাকে। এবং এই সময়ে আক্রান্ত ব্যক্তির কাশি হয় এবং গলায় ব্যাথা করে। যদি তিনি প্রচুর পরিমাণ জল পান করেন এবং লবন বা ভিনিগার মিশ্রিত হালকা গরম জল দিয়ে গলগলা করে কুলি করেন তবে তার ভাইরাস দূর হয়। এই তথ্যটি ছড়িয়ে দিন কারণ এই তথ্য দিয়ে কাউকে বাঁচাতে পারেন।"
তথ্য যাচাই
বুম তথ্যের অনুসন্ধান করে দেখেছে যে কোভিড-১৯ সংক্রমণ হলে গার্গল করা হলেও গার্গল করে করোনাভাইরাসের সংক্রমনকে প্রতিহত করা যাবে এইরকম কোন বিজ্ঞানভিত্তিক তথ্য নেই।
বুম এলসেভিয়ার এবং দি লেনসেট জার্নালে প্রকাশিত মানব দেহে নভেল করোনাভাইরাসের বিস্তারের গতিপ্রকৃতি সংক্রান্ত গবেষনা পত্র খুঁজে দেখছে কোথাও উল্লেখ নেই যে, মানবদেহে সংক্রমণের পর এই ভাইরাস চার দিন পর্যন্ত মানুষের গলায় অবস্থান করে। করোনাভাইরাস সংক্রমণের এক পর্যায়ে এটি ফুসফুসের কার্যক্ষমতা নষ্ট করে দেয়।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ওয়েবসাইটে উল্লেখ আছে যে, "যদিও প্রথাগত ভাবে হালকা গরম জলে গার্গল করে কোভিডের অন্যতম লক্ষণ গলায় জ্বালা থেকে কিছুটা রক্ষা পাওয়া যায় কিন্তু গার্গল করে করোনাভাইরাসকে প্রতিহত করা যাবে এমন কোন প্রমান নেই।"
হু জানিয়েছে কোভিড-১৯ সংক্রমণের
পর ঘুমন্ত দশা থেকে ও লক্ষণ প্রকাশ পেতে ৫ দিন সময় লাগে তবে কোনও কোনও ক্ষেত্রে ১ থেকে ১৪ দিন পর্যন্ত লাগতে পারে।
হু তার নির্দেশিকায় স্পষ্ট করে বলেছে মৃদু উপসর্গের ক্ষেত্রে বিভিন্ন প্রথাগত দেশি বা পশ্চিমি উপায় গ্রহণ করা যেতেই পারে। কিন্তু ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া নিজে নিজে চিকিৎসা করার ব্যাপারে সতর্ক করা হয়েছে।
ক্যালিফোর্নিয়ার রিভারসাইডের সেন্টার ফর হেলথি কমিউনিটি বিশ্ববিদ্যালয়য়ের অধ্যাপক ব্র্যন্ডন ব্রাউন আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা
এএফপি'কে জানিয়েছেন যে, গরম জলে গারগেল করে গলায় জ্বালা থেকে সাময়িক নিরসন পাওয়া সম্ভব কিন্তু নোভেল করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে তা পর্যাপ্ত নয়।
ভাইরাল পোস্টের ছবিতে থাকা ব্যক্তিরা কোভিড-১৯ চিকিৎসার সঙ্গে যুক্ত ডাক্তার বা চিকিৎসাকর্মী কিনা বুম যাচাই করেনি।