এক বালক জড়িয়ে আছে তার বাবার মৃতদেহ, এমন একটি মর্মান্তিক ছবি ভাইরাল হল। ছবিটি ভারতীয় সেনাবাহিনীর এক অফিসারের। তিনি গত বছর অসমের জোড়হাটে মারা যান। ছবিটি সম্প্রতি ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়েছে। পোস্টে দাবি করা হয়েছে, গালওয়ান উপত্যকায় যে সমস্ত ভারতীয় সেনারা নিহত হয়েছেন, ছবিটি তাঁদেরই এক জনের মৃতদেহের। লাদাখের এই সংঘর্ষে ২০ জন ভারতীয় সেনা নিহত হয়েছেন।
বুম দেখেছে ছবটি গত বছর তামিলনাড়ুতে লেফ্ট্যান্যান্ট কর্নেল সুব্রমনিয়াম আনন্দের শেষকৃত্যের সময় তোলা হয়।
১৫ এবং ১৬ জুন পূর্ব লাদাখের গালওয়ান উপত্যকায় চিনের পিপল'স লিবারেশন আর্মির বাহিনীর সঙ্গে ভারতীয় বাহিনীর সংঘর্ষের পর এই ছবিটি নতুন করে প্রচারে উঠে এসেছে। গত কয়েক মাস ধরে লাইন অব অ্যাকচুয়াল কন্ট্রোলে দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা চলছে। ভারতীয় সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এই সংঘর্ষের ফলে এক জন কম্যান্ডিং অফিসারসহ ২০ জন সেনা নিহত হন। যদিও চিন এখনও তাদের তরফে মৃতের সংখ্যা জানায়নি।
গালওয়ান উপত্যকায় নিহত সৈনিকদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে নেটিজেনরা যে সব পোস্ট শেয়ার করছেন, তার মধ্যে লেফ্ট্যান্যান্ট কর্নেল সুব্রমনিয়াম আনন্দের ছেলের তাঁর মৃতদেহ জড়িয়ে থাকার ছবিটিও আছে। এ রকম একটি পোস্টের আর্কাইভ দেখতে
এখানে ক্লিক করুন।
প্রাক্তন ক্রিকেটার বীরেন্দর শহবাগ এবং ভারতীয় সেনাবাহিনীর প্রাক্তন অফিসার এবং ভারতীয় জনতা পার্টির সদস্য সুরিন্দর পুনিয়া একই বয়ানসমেত ছবিটি টুইট করেছেন। টুইটটির আর্কাইভ দেখতে
এখানে এবং
এখানে ক্লিক করুন।
তথ্য যাচাই
বুম ছবিটির উপর রিভার্স ইমেজ সার্চ করে এবং ডিফেন্স স্টোরি নামক প্রতিরক্ষাবিষয়ক সংবাদ পরিবেশনকারী সংস্থার একটি প্রতিবেদন দেখতে পায়। ডিফেন্স স্টোরির
প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, লেফ্ট্যান্যান্ট কর্নেল সুব্রমনিয়াম আনন্দ ৪ শিখ লাইট ইনফ্যান্ট্রির সদস্য ছিলেন এবং তিনি ২৯ জুন অসমে মারা যান। এই প্রতিবেদন অনুসারে তিনি মাল্টি-অরগ্যান ফেলিওর হয়ে মারা যান। ২০১৯ সালের ৩০ জুন তামিলনাড়ুর কন্যাকুমারী জেলায় তাঁর নিজের গ্রামে লেফ্ট্যান্যান্ট কর্নেল আনন্দের শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়। তাঁর স্ত্রী এবং ছেলে রয়েছেন।
কন্যাকুমারী জওয়ান নামক চ্যানেলের অফিসিয়াল ইউটিউব চ্যানেলে বুম তাঁর শেষকৃত্যের একটি ভিডিও দেখতে পায়। এই ভিডিওতে ৬ মিনিট ৫০ সেকেন্ড পর লেফ্ট্যান্যান্ট কর্নেল সুব্রমনিয়াম আনন্দের ছেলেকে দেখতে পাওয়া যায়। ভাইরাল হওয়া ছবিটিও শেষকৃত্যের এই ভিডিওতে দেখতে পাওয়া যায়। শেষকৃত্যের সময় কন্যাকুমারী জওয়ান নামক সংস্থার সদস্যদের মৃতের পরিবারকে সাহায্য করতে দেখা যায়।
২০১৯ সালে লেফ্ট্যান্যান্ট কর্নেল আনন্দের মৃত্যুর পরও অনেকেই এই মর্মান্তিক ছবিটি শেয়ার করেছিলেন।
ক্যাফে কন্যকুমার নামে একটি স্থানীয় ম্যাগাজিনে ২ জুলাই এই বিষয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।