হিমাচল প্রদেশের চম্বার একটি ক্লিপে এক দল লোককে পাথর ফেলে রাস্তা বন্ধ করে রাখতে দেখা যাচ্ছে। কিন্তু সেটি ভাইরাল হয়েছে এই মিথ্যে দাবি সমেত যে, উত্তরাখণ্ডের তেহরিতে মুসলমানরা রাস্তা আটকে রেখেছে।
চম্বা পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তাঁরা বুমকে বলেন, ঘটনাটির সঙ্গে সাম্প্রদায়িকতার কোনও যোগ নেই। তাঁরা জানান দুই মুসলমান গোষ্ঠীর মধ্যে বিবাদ চলছিল এবং পরে তা মিটমাট হয়ে যায়।
ভাইরাল ক্লিপটিতে এক দল লোককে পাথর ফেলে একটি রাস্তা অবরোধ করতে দেখা যাচ্ছে। আর ছবিতে দেখা যাচ্ছে না এমন একজনকে বলতে শোনা যাচ্ছে যে, রাস্তাটি একটি সরকারি রাস্তা। তিনি আরও অভিযোগ করেন যে, অপর গোষ্ঠীর লোকেরা তাঁদের বার বার হুমকি দিচ্ছে। এবং তাঁর পরিবারের যদি কোনও ক্ষতি হয়, তাহলে তাঁর প্রতিপক্ষরাই এর জন্য দায়ী থাকবেন। এর পর তিনি চম্বার পুলিশ সুপার সহ স্থানীয় প্রশাসনকে এই ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করতে এবং তাঁর পরিবারকে রক্ষা করতে অনুরোধ করেন।
ক্লিপটি উত্তরপ্রদেশের একটি ঘটনার বলে শেয়ার করা হচ্ছে। ক্যাপশনে বলা হয়েছে, "এই ভিডিওটি দেবভূমি উত্তরাখণ্ডের তেহরিতে তোলা। এখানে একটি 'শান্তিপ্রিয়' সম্প্রদায় রাস্তা বন্ধ করে গ্রামটিকে তলোয়ার দিয়ে কেটে ফেলার হুমকি দিচ্ছে। হাসতে থাকুন। অপনি ভারতে আছেন।"
পোস্টটি আর্কাইভ করা আছে এখানে।
(হিন্দিতে লেখা ক্যাপশন: "ये वीडियो देवभूमि उत्तराखण्ड के tehri का है, यहाँ शांतिप्रिय समुदाय गाँव का रास्ता बंद करके गाँव वालों को तलवार से काटने की धमकी दे रहे हैं, मुस्कुराईये आप हिंदुस्तान मे हैं।")
টুইটটি আর্কাইভ করা আছে এখানে।
ফেসবুকে ভাইরাল
ওই ক্যাপশন দিয়ে ফেসবুকে সার্চ করলে দেখা যায় ক্লিপটি সেখানেও ওই মিথ্যে দাবি সমেত শেয়ার করা হচ্ছে।
তথ্য যাচাই
বুম দেখে ভাইরাল ক্লিপটি হিমাচল প্রদেশের চম্বায় তোলা। সেখানে একই সম্প্রদায়ের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে একটি রাস্তা ব্যবহার করা নিয়ে বিবাদ চলছিল।
যে ব্যক্তি ক্লিপটি তুলছেন, তাঁকে চম্বার পুলিশ সুপারের কাছে সাহায্য চাইতে শোনা যায়। তাই আমরা 'চম্বা' সার্চ করি। দেখা যায় যে, জায়গাটি হিমাচল প্রদেশে, উত্তরাখণ্ডে নয়।
চম্বা থানার অ্যাসিসটেন্ট সাব-ইন্সপেক্টর (এএসআই) পুষ্পেন্দ্র ঠাকুরের সঙ্গে যোগাযোগ করলে উনি জানান যে, ঘটনাটির সঙ্গে সাম্প্রদায়িকতার কোনও সম্পর্ক নেই। একটি স্থানীয় রাস্তা ব্যবহার করাকে কেন্দ্র করে একই সম্প্রদায়ের দুটি গোষ্ঠীর মধ্যে বিবাদ সৃষ্টি হয়েছিল, বলেন ঠাকুর।
"ঘটনাটি সাত আট দিন আগে ঘটে। এখন বিবাদটি মিটে গেছে। দুই গোষ্ঠীর লোকেরাই মুসলমান। ওই জায়গাটিতে একটি নতুন রাস্তা তৈরি করা হয়। যে রাস্তাটি পাথর ফেলে বন্ধ করা হয়েছিল, সেটি পুরনো রাস্তা। নতুন রাস্তাটি তৈরি করার জন্য যাঁরা জমি দান করেছিলেন, তাঁরা পুরনো রাস্তাটির ব্যবহার চাইছিলেন না," বলেন পুষ্পেন্দ্র ঠাকুর।
আরও পড়ুন: মুর্শিদাবাদে এক পরিবারের তিন সদস্য খুনের পুরনো ঘটনা ভুয়ো দাবিতে ভাইরাল