একটি ভুয়ো টুইটের স্ক্রিনশটে দেখানো হয়েছে যে, নতুন কৃষি আইনের বিরুদ্ধে কৃষকদের বিক্ষোভ নিয়ে কমলা হ্যারিস ভারত সরকারকে তার অবস্থানের জন্য ভর্ৎসনা করেছেন।
পঞ্জাব ও হরিয়ানার কৃষকরা কেন্দ্রীয় সরকারের নতুন কৃষি আইনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে দিল্লির উদ্দেশে পদযাত্রা করার পরিপ্রেক্ষিতে স্ক্রিনশটটি শেয়ার করা হচ্ছে।
ভুয়ো টুইটটির সঙ্গে দেওয়া পঞ্জাবি ভাষায় লেখা ক্যাপশনে বলা হয়েছে, "কৃষকদের অধিকার সম্পর্কে মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসের মন্তব্য।"
টুইটটির স্ক্রিনশটে লেখা আছে, "যে নতুন কৃষি আইন কৃষকদের জীবিকাকে বিপর্যস্ত করবে, সেই আইনের বিরুদ্ধে কৃষকদের প্রতিবাদকে দমন করায় আমরা স্তম্ভিত। জল কামান আর কাঁদানে গ্যাস ব্যবহার করার বদলে ভারত সরকারের উচিৎ কৃষকদের সঙ্গে আলোচনা শুরু করা।" টুইটটি ৮,০০০ বার রিটুইট করা হয় ও ২৭,০০০ লাইক পায়।
পোস্টটি আর্কাইভ করা আছে এখানে।
পোস্টটি আর্কাইভ করা আছে এখানে।
পোস্টটি আর্কাইভ করা আছে এখানে।
ভুয়ো টুইটটি বুমের হোয়াটসঅ্যাপ হেল্পলাইন নম্বরেও আসে।
তথ্য যাচাই
বুম দেখে, টুইটের স্ক্রিনশটটি ভুয়ো। ভারতে কৃষক বিক্ষোভ নিয়ে কমলা হ্যারিস কোনও টুইট করেননি।
বুম কমলা হ্যারিসের ব্যক্তিগত (@KamalaHarris) ও সেনেটার হিসেবে (@SenKamalaHarris) তাঁর টু্ইটার অ্যাকাউন্টের টাইমলাইন খতিয়ে দেখে। কিন্তু কৃষকদের বিক্ষোভ সম্পর্কে কোনও টুইট চোখে পড়েনি।
সোমবার, কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো ভারতে কৃষক বিক্ষোভ সম্পর্কে তাঁর উদ্বেগ প্রকাশ করেন ও বলেন যে তাঁর সরকার ভারত সরকারের সঙ্গে নানা স্তরে যোগাযোগ করে তাঁদের উদ্বেগের প্রতি "দৃষ্টি আকর্ষণ" করেছেন।
ট্রুডোর মন্তব্য ভারত সরকারের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে। ভারত তাঁর মন্তব্যকে অযাচিত বলে বর্ণনা করেছে। ভারতের "অভ্যন্তরীণ বিষয়" সম্পর্কে মন্তব্য করার জন্য অনেক ভারতীয় রাজনৈতিক নেতা ও সোশাল মিডিয়া ব্যবহারকারী ট্রুডোর সমালোচনা করেন।
আর কয়েক দিনের মধ্যেই কমলা হ্যারিস মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট পদে আসীন হতে চলেছেন। এ অবস্থায়, উনি যদি ভারতে কৃষকদের বিক্ষোভ সম্পর্কে কোনও মন্তব্য করতেন, তা হলে তা অবশ্যই বড় খবর হত ভারতের মিডিয়ায়। কিন্তু কৃষক বিক্ষোভ সম্পর্কে হ্যারিস মন্তব্য করেছেন, এই মর্মে কোন্ও খবর আমাদের নজরে আসেনি।
টুইটটির বয়ান থেকে কি-ওয়ার্ড নিয়ে সার্চ করলে, কানাডার এক সাংসদ, জ্যাক হ্যারিসের টুইট বেরিয়ে আসে।
জ্যাক হ্যারিসের টুইট ও কমলা হ্যারিসের টুইট বলে যেটির স্ক্রিনশট শেয়ার করা হচ্ছে, সে দু'টির মধ্যে আমরা অনেক মিল খুঁজে পাই। যদিও দু'টির রিটুইট ও লাইকের সংখ্যা এক নয়, টুইট দু'টির বয়ান এক এবং দুটোই একই সময়ে টুইট করা হয়।
নীচে ভুয়ো টুইট (বাঁ দিকে) ও জ্যাক হ্যারিসের টুইট (ডান দিকে) দেওয়া হয়েছে।