ফেসবুকে বাংলাদেশের আওয়ামী উলেমা লিগের গোষ্ঠী কোন্দলের জেরে বচসার পুরনো ছবি শেয়ার করে মিথ্যে দাবি করা হয়েছে সেটি দিল্লির দাঙ্গায় হিন্দুদের উপর ইসলাম ধর্মের মানুষদের অত্যাচার করার ছবি।
সম্প্রতি দিল্লির উত্তর পূর্বের অঞ্চলের দাঙ্গায় এপর্যন্ত প্রায় ৪২ জন মানুষ মারা গেছে, হাসপাতালে গুরুতর ভাবে আহত হয়ে ভর্তি প্রায় শতাধিক মানুষ।
বুম খুঁজে পেয়েছে এই ছবিটি বাংলাদেশের। ২০১৫ সালে অক্টোবর মাসে ঢাকার জাতীয় প্রেস ক্লাবের বাইরে উলেমা সংগঠন বচসায় জড়িয়ে পরে।
ভাইরাল হওয়া ছবিটিতে দেখা যাচ্ছে টুপি পরিহিত এক পাঞ্জাবি পাজামা পরা একই ধরণের বেশ ভূষার এক ব্যক্তিকে চুলের মুঠি ধরে টানা হেঁচড়া করছে। আক্রমণের শিকার হওয়া ব্যক্তির মাথায় টুপি নেই। তার পাশে একজন কমবয়সী ছেলে ডান্ডা হাতে নিয়ে ওই ব্যক্তির দিকে ধেয়ে যাচ্ছে। অদূরে ভীত সন্ত্রস্ত মাথায় টুপি ছাড়া এক ব্যক্তি দঁড়িয়ে আছে।
ফেসবুকে ভাইরাল হওয়া পোস্টটির ক্যাপশন লেখা হয়েছে, ''দিল্লিতে কিভাবে হিন্দুদের উপর অত্যাচার করছে ইসলামিক জিহাদিরা।'' পোস্টটি আর্কাইভ করা আছে এখানে।
আরও পড়ুন: মিথ্যা: দিল্লির দাঙ্গায় পুলিশ মুসলিমদের বাড়িতে রাসায়নিক গ্যাস প্রয়োগ করেছে
তথ্য যাচাই
বুম রিভার্স সার্চ করে খুঁজে পেয়েছে ছবিটি দিল্লি দাঙ্গার সঙ্গে সম্পর্কিত নয়। ছবিটিতে আক্রমণকারী ও আক্রান্তরা উভয়েই একই ধর্মের মানুষ।
২০১৫ সালের অক্টোবর মাসে বাংলাদেশের ঢাকার জাতীয় প্রেস ক্লাবের বাইরে এই ছবিটি তোলা হয়েছিল। আওয়ামী উলেমা লিগের গোষ্ঠী কোন্দলের জেরে তাদের মধ্যে বচসা হাতাহাতিতে পৌছায়।
ওই উলেমা সংগঠনের ইলিয়াস হোসেন বিন হেলালি এবং মহাম্মদ দিলওয়ার হোসেনের নেতৃত্বে তার সমর্থকরা ধেয়ে গিয়ে আখতার হোসেন ও আবুল হাসানের নেতৃত্বাধীন গোষ্ঠীর লোকজনদের মারে।
আবুল হাসান অভিযোগ করে হেলালির সমর্থকরা বঙ্গবন্ধু নিয়ে তাদের বক্তব্যে বাধা দিয়েছিল। হেলালি গোষ্ঠী আঙুল তোলে অপর গোষ্ঠী জামাত ও হেফাজতে ইসলামের হয়ে কাজ করছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে মানব বন্ধন কর্ম সূচিতে অংশ নেওয়ার সময় বচসায় জড়িয়ে পরে তারা। এই ঘটনায় প্রায় হেলালির ১৬ জন সমর্থক আহত হয় বলে দাবি করে ইলিয়াস হোসেন বিন হেলালি।
ছবিটি বিডিনিউজ, বিডিনিউজ বাংলা ও দ্য ডেইলি নিউ নেশনের প্রতিবেদনে দেখা যাবে। নীচে বিডিনিউজ-এর প্রতিবেদনের স্ক্রিনশট দেওয়া হল।
আরও পড়ুন: ঔরঙ্গাবাদে রাস্তার বচসাকে দিল্লিতে মুসলিমদের বাসে আক্রমণ বলা হল