শাহিন বাগের সিএএ-বিরোধী প্রতিবাদে অংশগ্রহণ করার জন্য মাথা-পিছু ৫০০ টাকা করে ঘুষ দেওয়ার পোস্টারটি ফোটোশপ করে জোড়া হয়েছে।
ছবিটিতে দেখা যাচ্ছে, কিছু মহিলা ও শিশু একটি বন্ধ দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে রয়েছে। উপরে একটি ব্যানার ঝোলানো রয়েছে, যেখানে লেখা: "মাথা পিছু ৫০০ টাকা। শাহিন বাগে সন্ধে ৭টা থেকে রাত ১২টা।" বন্ধ দোকানের শাটারের গায়ে ব্যানারটি ঝোলানো। বুম দেখেছে, ব্যানারের লেখাটি ফোটোশপ করে জোড়া হয়েছে।
এই ফোটোশপ করা ছবিটাই ফেসবুকে ভাইরাল করা হয়েছে, যার ক্যাপশনে লেখা: "সন্ধে ৭টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত প্রতি রাত্রের জন্য আমাদের বাঁধা দর ৫০০ টাকা। কোনও দরকষাকষি নয়। এ ছাড়া অতিরিক্ত সেবার জন্য বাড়তি টাকা লাগবে। ভুল বুঝবেন না! বাড়তি সেবা বলতে মোদির বিরুদ্ধে বাচ্চাদের দিয়ে গালি দেওয়ানো, গান গাওয়ানো ও অন্যান্য এই ধরনের চাহিদা পূরণ)"
দক্ষিণ দিল্লির শাহিন বাগ এলাকায় এনআরসি, সিএএ ও এনপিআর-এর বিরুদ্ধে মহিলা ও শিশুদের সামনে রেখে এক অসাধারণ ধর্না-অবস্থান আন্দোলন চলছে। নতুন নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদে জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনকারী ছাত্রছাত্রীদের উপর পুলিশি দমননীতির প্রতিবাদে ২০১৯ সালের ১৫ ডিসেম্বর থেকে এই অবস্থান বিক্ষোভ অবিরাম চলছেl প্রধানত মুসলিম মহিলাদের নেতৃত্বে পরিচালিত এই বিক্ষোভই নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদে এ পর্যন্ত ঘটা সবচেয়ে দীর্ঘমেয়াদি আন্দোলন।
ফোটোশপ করা এই ছবিটাই বুম-এর হোয়াটসঅ্যাপ হেল্পলাইন নম্বরে (৭৭০০৯০৬১১১) পাঠিয়েও তার সত্যতা যাচাই করতে বলা হয়েছে।
তথ্য যাচাই
বুম ছবিটির খোঁজখবর চালিয়ে দেখেছে, মূল ছবিটির ব্যানারে সিএএ-বিরোধী অবস্থান-বিক্ষোভে যোগ দেওয়ার উত্কোচ হিসাবে নগদে ঘুষ দেওয়ার কোনও কথাই লেখা ছিল না।
মূল ছবিটিতে লেখা ছিল: "এনআরসি ফেরত নাও! সিএএ ফেরত নাও!"
শাহিন বাগে ছবিটি তোলা হয় ৭ জানুয়ারি, ২০২০ এবং হাফিংটনপোস্ট ইন্ডিয়া সংবাদপত্রে সেটি ছাপাও হয়। গেট্টি ইমেজেস সংস্থার জন্য ছবিটি তোলেন এএফপি-র চিত্র-সাংবাদিক মনি শর্মা।সম্প্রতি বিজেপির আই-টি বিভাগের ভারপ্রাপ্ত অমিত মালব্য সহ বেশ কয়েকজন যাচাই-করা দলীয় সদস্য-সমর্থকের টুইটার হ্যান্ডেল একটি ভিডিও টুইট করে বলার চেষ্টা করছেন যে, শাহিন বাগের বিক্ষোভ-অবস্থানে যোগ দেওয়ার জন্য প্রতিবাদীদের নগদ অর্থ ঘুষ দেওয়া হচ্ছে। বুম এ ধরনের অভিযোগে কোনও সত্যতা খুঁজে পায়নি।