দক্ষিণ আফ্রিকায় একটি রিসর্টের প্রাঙ্গনে চিতাবাঘ ঘুরে বেড়ানোর দৃশ্যকে ভুয়ো দাবি সহ সোশাল মিডিয়ায় শেয়ার করা হয়েছে এবং বলা হয়েছে ঘটয়াটি রাজস্থানের রণথম্ভোরের।
একটি কক্ষের ভেতর থেকে রেকর্ড করা এই ভিডিওতে দেখা যায় একটি চিতাবাঘ কোনও একটি রিসর্টের প্রাঙ্গনে ঘুরে বেড়াচ্ছে এবং সুইমিং পুল থেকে জলপান করছে। যে ব্যক্তি ভিডিওটি রেকর্ড করেছেন তাকে ভিডিওটির শেষের দিকে ইংরেজিতে কথা বলতেও শোনা যায়।
গণমাধ্যমের প্রতিবেদন
বাংলা সংবাদ ওয়েবসাইট 'দ্য ওয়াল' থেকেও চিতাবাঘের এই ভিডিও নিয়ে ভুয়ো প্রতিবেদন করা হয়েছে। দ্য ওয়াল তাদের প্রতিবেদনের শিরনামে লিখেছে, "রণথম্বোরে তাজ হোটেলের সুইমিং পুলে জল খাচ্ছে লেপার্ড, পাশেই ঘন জঙ্গল, সামনে এল রোমাঞ্চকর ছবি।" প্রতিবেদনের বিবরণে লেখা হয়েছে, "রণথম্বোর জাতীয় উদ্যানের মধ্যেই লাক্সারি তাজ হোটেল। তারই সুইমিং পুলে নিশ্চিন্তে জল খাচ্ছে পূর্ণবয়স্ক লেপার্ড তারপর ধীরে সুস্থে জল খেয়ে সে তার পথ ধরে।"
প্রতিবেদনটি আর্কাইভ করা আছে এখানে।
সংবাদ চ্যানেল কলকাতা টিভি তাদের প্রতিবেদনে উল্লেখ করে, "রণথম্বোর ন্যাশনাল পার্কের ভেতরে বেশ কয়েকটি লাক্সারি হোটেল আছে যেগুলি আগে হান্টিং লজ হিসাবে ব্যবহৃত হত।.. পর্যটকরা জঙ্গল ও প্রকৃতির সৌন্দর্য যাতে পুরোপুরি উপভোগ করতে পারেন, সেইজন্য জঙ্গল এবং হোটেলের মাঝে কোনো পাঁচিল তোলা হয়নি। যার ফলে হোটেলে থাকতে আসা পর্যটকদের মাঝে মধ্যেই বন্যপ্রাণীর দর্শন পাওয়ার সম্ভাবনা থেকেই যায়।.." ভিডিওটির উৎস হিসেবে উল্লেখ করে অনিল চোপড়া নামে এক ব্যক্তির সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট। প্রতিবেদনটি আর্কাইভ করা আছে এখানে।
সোশাল মিডিয়ায় ভাইরাল
ভিডিওটি টুইটারেও ভাইরাল হয়েছে, ক্যাপশনে লেখা হয়েছে, "তাজ রনথম্ভোর অতিথি আপ্যায়ন"
তথ্য যাচাই
বুম ইউটিউবে কিওয়ার্ড সার্চ করে ক্রুগার সাইটিং নামে একটি চ্যানেলে একটি রিসোর্টের রেস্টুরেন্টের প্রাঙ্গনে চিতাবাঘ ঘুরে বেড়ানোর ভিডিও খুঁজে পায়। ভিডিওটি ২০২০ সালের ৬ সেপ্টেম্বর আপলোড করা হয়েছিল এবং বর্ণনায় বলা হয়েছে দৃশ্যটি সিঙ্গিটা ইবোনি লজে রেকর্ড করা।
ওই চ্যানেলে আপলোড করা অন্যান্য সব ভিডিওর মধ্যে ২০১৪ সালের ২৮ অক্টোবর আপলোড করা একটি ভিডিও দেখে যেটি ভাইরাল ভিডিওর সাথে মিলে যায়। ওই ভিডিওতেও দেখা যায় একটি চিতাবাঘকে দক্ষিণ আফ্রিকার ক্রুগার ন্যাশনাল পার্কার একটি রিসর্টের কক্ষের বেলকুনিতে ঘুরে বেড়াতে দেখা যাচ্ছে।
বুম তারপর সিঙ্গিটা ইবোনি লজের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে একটি ভিডিও খুঁজে পায় যেখানে দেখানো কক্ষগুলির সাজসজ্জা ভাইরাল ভিডিওর সাথে মিলে যায়। সেখানে কাঁচের দরজা এবং সুইমিং পুলও দেখা যায়।
ট্রিপ এডভাইসরে ইবোনি লজের কক্ষের ভেতরের দিকের ছবি দেখা যায় যা পুরোপুরি ভাইরাল ভিডিওর সাথে মিলে যায়।
ইনস্টাগ্রামে ইংল্যান্ডের ক্রিকেটার কেভিন পিটারসনের পোস্ট করা একই ভিডিওতে সিঙ্গিটা ইবোনি লজের অফিসিয়াল ইনস্টাগ্রাম পেজ থেকে মন্তব্য করা হয়েছে। যদিও এটা সম্পূর্ণ পরিষ্কার নয় যে ভিডিওটি কি কেভিন পিটারসন ক্যামেরাবন্দী করেছিলেন কি না।