তামিলনাড়ুর তিরুপ্পুর পুলিশ সম্প্রতি লকডাউন চলাকালীন সময়ে যেন সাধারন মানুষের ঘরে থাকে এবং অত্যাবশ্যক জিনিস কিনতে বাজারে যাওয়ার সময় যেন মাস্ক ব্যবহার করে সেই বিষয়ে সচেতনতামূলক প্রচারের জন্য একটি ভিডিও বানিয়ে সোশাল মিডিয়ায় দিয়েছিল, কিন্তু সোশাল মিডিয়ায় তিরুপ্পুর পুলিশের এই ভিডিওকে নানান বিভ্রান্তিমূলক দাবি সহ ভাইরাল করা হয়েছে।
২ মিনিট ১৭ সেকেন্ডের এই ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, প্রথমে হেলমেট ও মাস্ক ছাড়া তিনজন আরোহী সহ একটি স্কুটিকে পুলিশ রাস্তার মধ্যে একটি চেকপোস্টে থামায়। তারপর দেখা যাচ্ছে পুলিশকে এই তিনজন আরোহীর সাথে তামিল ভাষায় কিছু একটা কথোপকথন করতে, সম্ভবত মাক্স ও হেমলেট কেন নেই এবং বাইরে আসার কারণ জানতে চাইছিল। তারপর পুলিশকে দেখা যায় এই তিনজন আরোহীকে রাস্তার পাশে থামানো একটি অ্যাম্বুল্যান্সের ভেতরে ঢোকানো প্রয়াস করতে। অ্যাম্বুল্যান্সের ভেতরে আগে থেকে মাক্স এবং পিপিই লাগিয়ে থাকা এক ব্যাক্তিকে দেখা যাচ্ছে। বলা হচ্ছিল ভেতরে থাকা এই ব্যাক্তি একজন কোভিড-১৯ এর রোগী। পুলিশকে রীতিমতো ধস্তাধস্তি ও বলপ্রয়োগ করে এই তিনি জন আরোহীকে অ্যাম্বুল্যান্সের ভেতরে ঢুকাতে হয়। তারপর অ্যাম্বুল্যান্সের ভেতর থেকে তারা জানালা দিয়ে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করছিল।
আরও পড়ুন: লকডাউনে বলিউড অভিনেতা আমির খানের আটায় লুকিয়ে টাকা দানের কাহিনী মনগড়া
ভিডিওটির শেষে এক পুলিশ অফিসারকে বলতে শোনা যাচ্ছে: "যথেচ্ছভাবে বাইরে ঘুরে বেড়ালে তোমাদের করোনাভাইরাস সংক্রমণ ঘটতে পারে, তোমরা জানতেও পারবে না। এই জন্যই সরকার এবং পুলিশ এই সময় সকলকে ঘরে থাকতে বলছে। একান্তই যদি কোনও নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের জন্য বাড়ির বাইরে বেরতে হয়, তাহলে অবশ্যই মাস্ক পরে বেরতে হবে।"
When people don't follow #StayHome #WearAMask rules set by Govt, and roam around not practicing #SocialDistancing,
— Apoorva Jayachandran (@Jay_Apoorva18) April 24, 2020
The #Tiruppur Police comes up with an innovative way to teach these youth a lesson they'll never forget!😂😂 #coronavirus #COVID #TNFightsCorona #CoronavirusIndia pic.twitter.com/M1CHOxBSRp
ইন্টারনেটে এই ভিডিওটি ব্যাপকভাবে শেয়ার করা হয়েছে, এবং অনেকেই তামিল পুলিশের এই ঘটনাকে সত্য বলে ধরে নিয়েছে। অর্থাৎ সত্যিই পুলিশ লকডাউন অমান্যকারীদের শাস্তি হিসেবে কোভিড রোগীর সাথে একসাথে রাখছে। বুম তার হেল্পলাইন নম্বরেও এ রকম অনেকগুলি ভিডিও পেয়েছে, যার একটিতে ক্যাপশন দেওয়া হয়েছে, "মাদ্রাজ পুলিশ রাস্তায় ঘুরে বেড়ানো কয়েকটি ছেলেকে পাকড়াও করে অ্যাম্বুল্যান্সে একজন সাজানো করোনা রোগীর সঙ্গে ঢুকিয়ে দিয়েছে। এটা অবশ্যই দেখা দরকার..."
You have to appreciate this. Just brilliant. pic.twitter.com/ba81tJDKpb
— Vishnu Manchu (@iVishnuManchu) April 24, 2020
यह वीडियो बनाया है तमिलनाडू #Tiruppur की पुलिस ने... @ThirupurP
— Nighat Abbass (@officialnighta) April 24, 2020
पुलिसकर्मी बिना मास्क पहने लोगों को पकड़कर एक #नकली कोरोना रोगी के साथ एम्बुलेंस में बैठने पर मजबूर करते है, देखिये क्या होता है फिर...
TN Police ROCKS
DON'T MISS THE VIDEO.
👇 pic.twitter.com/4jRWa0M83b
Tamil Nadu Police at work. What an idea 👏🏼 lockdown violators put in an ambulance with fake COVID patient pic.twitter.com/zTbaON3bEy
— Snehesh Alex Philip (@sneheshphilip) April 24, 2020
এই ঘটনাকে নিয়ে 'ইন্ডিয়া টুডে', 'টাইমস নাউ' এবং 'ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস টাইমস' এর ওয়েব পোর্টাল থেকেও রিপোর্ট করা হয় কিন্তু কোথাও ঘটনাটি সত্য না অভিনীত তা উল্লেখ করা হয়নি, ফলত গোটা ঘটনা নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়িয়ে দেওয়া সহজ হয়ে পরে।
সচেতনতামূলক এই ভিডিওটি অভিনীত
বুম ভিডিওটির শেষভাগ খুঁজে পায়, সেখানে দেখা যায় একজন পুলিশ অফিসার স্পষ্টভাবে বলছেন, এই গোটা ভিডিওর দৃশ্যটাই সাজিয়ে তোলা হয়েছে, এটা কোনো সত্য ঘটনা না। এবং যে ছেলেগুলিকে পুলিশ জোর করে ঠেলে অ্যাম্বুল্যান্সে তুলছিল, তাদেরকেও সেখানে পুলিশের পিছনেই দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যাচ্ছে।
When people don't follow #StayHome #WearAMask rules set by Govt, and roam around not practicing #SocialDistancing,
— Apoorva Jayachandran (@Jay_Apoorva18) April 24, 2020
The #Tiruppur Police comes up with an innovative way to teach these youth a lesson they'll never forget!😂😂 #coronavirus #COVID #TNFightsCorona #CoronavirusIndia pic.twitter.com/M1CHOxBSRp
বুম তিরুপ্পুর জেলার পুলিশ সুপার, আইপিএস অফিসার দিশা মিত্তাল-এর সঙ্গে এই বিষয়ে কথা বলে। তিনি জানান, পুরো ভিডিওটাই পুলিশ সাজিয়ে তুলেছে এবং ভিডিওতে যাদের দেখা যাচ্ছে, তারা সবাই কেবল অভিনয়ই করেছে।
তিনি বুমকে বলেন, "শুটিং-এর আগে যাবতীয় সতর্কতামূলক ব্যবস্থাই অবলম্বন করা হয়। ভিডিওর দৃশ্যে যে ছেলেগুলিকে দেখানো হয়েছে, তারা সকলেই সাধারন নাগরিক, যারা অভিনয়টা করেছে। যতক্ষণ না লোকেদের চোখে আঙুল দিয়ে কিছু দেখানো হচ্ছে, ততক্ষণ তারা বিষয়টাতে গুরুত্ব দিতে চায় না। এখানে সাজানো করোনা রোগীটি নিজেই মূর্তিমান করোনা হয়ে ওঠে এবং তারপর লোকে তার সংস্পর্শে আসতে আতঙ্কিত হয়। ভিডিওটি তোলার পিছনেও এটাই ছিল উদ্দেশ্য।"
আরও পড়ুন: বিভ্রান্তিকর দাবি সহ ছড়ালো সুইশ শিল্পীর ম্যাটারহর্ন শৃঙ্গের আলোর ছবি