২০১৫ সালে পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার ডায়মন্ড হারবার স্টেশনে পরিত্যক্ত ট্রেন থেকে শিশু উদ্ধারের ছবি বাংলাদেশের ঘটনা বলে শেয়ার করা হচ্ছে।
গোলাপি সোয়েটার পরা ঘুমন্ত ওই শিশুপুত্রের ভাইরাল ছবিটি বংলাদেশের একাধিক ফেসবুক পেজে শেয়ার করে ক্যাপশন লেখা হয়েছে, ''এই শিশুসন্তানটিকে গতকাল ভোরে লাকসামে সাগরিকা ট্রেনে পাওয়া গিয়েছে। সঙ্গে ছিল দুধের বোতল আর বেশ ভালো ড্রেসেই ট্রেন কম্পার্টমেন্টে একা একা পড়েছিল। উদ্ধার হওয়া শিশুপুত্রটি এখন সম্পুর্ণ সুস্থই রয়েছে এবং সুরক্ষিত স্থানেই রয়েছে। ওর পরিবারের কোনও সন্ধান থাকলে লাকসাম ষ্টেশনে অবশ্যই জানান। শিশুটির ব্যাপারে তথ্য দরকার হলে, যোগাযোগ করুন এই নম্বরে: 01711425817 লাইক এবং দয়া করে শেয়ার করুন.... কেউ না কেউ হয়তো চিনতে পারবে.....।''
বুম ছবিটিতে শিশুর মুখটি অস্বচ্ছ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
ফেসবুকে ভাইরাল
একই ক্যাপশন সহ ছবিটি একাধিক ফেসবুক পেজ ও গ্রুপে শেয়ার করা হচ্ছে।
তথ্য যচাই
বুম যাচাই করে দেখে বাংলাদেশে সাম্প্রতিক শিশু পরিত্যক্ত হওয়ার ছবি এটি নয়। ২০১৫ সালে ট্রেনের কামরা থেকে শিশু উদ্ধারের এই ঘটনাটি ঘটে।
বুম ছবিটিকে রিভার্স সার্চ করে ২৯ নভেম্বর ২০১৫ প্রকাশিত 'এই সময়' গণমাধ্যমের একটি প্রতিবেদনের হদিস পায়।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয় ডায়মন্ড হারবার স্টেশনে নিত্যযাত্রীরা সকালে শিয়ালদা লোকাল ধরতে যাওয়ার সময় কারসেড থেকে আসা লোকাল ট্রেনে আনুমানিক ৭-৮ মাস বয়সের শিশুপুত্রটিকে দেখতে পায়।
এক প্রত্যক্ষদর্শী ওই গণমাধ্যমকে জানান, ''মগরাহাট ও বারুইপুরে যাব বলে ট্রেনে উঠেছিলাম আমরা৷ সিটে বসতে গিয়ে দেখি তোয়ালে জড়ানো একটি শিশু পড়ে রয়েছে৷ মনে হয় রাতেই কারশেডে ট্রেনের কামরায় ওকে রেখে পালিয়ে গেছেন কেউ৷ কিন্ত্ত আমরা অবাক হয়ে যাচ্ছি কুকুরটিকে দেখে৷ কুকুরটা কিছুতেই কাউকে শিশুটির কাছে ঘেঁষতে দিচ্ছিল না৷ রাতভর কুকুরটি ওকে পাহারা দিয়ে রেখেছিল৷''
ট্রেন ছাড়ার মিনিট দশেক আগে বিষয়টি নজরে আসে জিআরপি থানার পুলিশকর্মীদের৷ ডায়মন্ড হারবার চাইল্ড লাইনে খবর দেওয়া হয়৷ খবর পেয়ে চাইল্ড লাইনের কর্মীরা ও পুলিশকর্মীরা উদ্ধার হওয়া শিশুপুত্রটিকে চিকিত্সার জন্য ডায়মন্ড হারবার জেলা হাসপাতালে ভর্তি করে৷
গণমাধ্যম এই সময়কে উদ্ধৃত করে বাংলাদেশের গণমাধ্যম কালেরকন্ঠ একই ছবি সহ বিষয়টি নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল।