বাংলাদেশের ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় স্টেশনের প্ল্যাটফর্ম ভাঙচুর করার ভিডিওকে কলকাতার বলে চালানো হচ্ছে সোশাল মিডিয়ায়; মিথ্যে দাবি করে বলা হচ্ছে ভাঙচুরকারীরা হলেন বাংলাদেশি উদ্বাস্তু। বুম দেখে ভিডিওটি বাংলাদেশের। সেখানে মাদ্রাসার ছাত্ররা ব্রাহ্মণবাড়িয়া স্টেশনে ভাঙচুর চালিয়েছিল।
৪ মিনিট ৫৮ সেকেন্ডের ভিডিওটিতে, এক উশৃঙ্খল জনতাকে বাংলায় স্লোগান দিতে দিতে স্টেশন ভাঙচুর করতে দেখা যায়।
দেশজুড়ে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ চলাকালে ভিডিওটি ভাইরাল হয়েছে। সেটির ক্যাপশনে বলা হয়েছে, "এই দৃশ্যটি কলকাতার। এরা বাংলাদেশি উদ্বাস্তু। তাদের কোনও নাগরিকত্ব নেই। নাগরিকত্ব ছাড়াই যদি তারা এই রকম কাণ্ড করতে পারে, তাহলে নাগরিকত্ব দেওয়া হলে তারা কি করবে? ভগবান এই দেশকে রক্ষা করুন।"
পোস্টটির আর্কাইভ করা আছে এখানে।
ফেসবুকে ভাইরাল
সিএএ-বিরোধী আন্দোলন একাধিক শহরে হিংসাত্মক হয়ে ওঠে। পশ্চিমবঙ্গের কিছু শহরেও বিক্ষোভকারীরা ট্রেনের কামরার ওপর ঢিল ছোঁড়ে, বেশ কিছু গাড়ি জ্বালিয়ে দেয়। মুর্শিদাবাদ জেলায়, একাধিক রেল স্টেশনে সরকারি সম্পত্তি ভাঙ্গচুর করার ভিডিও ভাইরাল হচ্ছে সেই সময় থেকে।
তথ্য যাচাই
বুম দেখে যে, এই ভিডিওটি ভারতের নয়। কারণ, ভিডিওটির ৩৮ সেকেন্ডের সময়ে দেখা যাচ্ছে প্ল্যাটফর্মটির নাম 'ব্রাহ্মণবাড়ীয়া'। চট্টগ্রাম ডিভিসনে, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার একটি মহকুমা শহর ব্রাহ্মণবাড়িয়া। নীচে দেওয়া ভাইরাল ভিডিওর স্ক্রিনগ্র্যাবে প্ল্যাটফর্মের নামটা দেখা যাচ্ছে।
কয়েকটি প্রয়োজনীয় শব্দ দিয়ে সার্চ করলে একটি দীর্ঘতর ভিডিও সামনে আসে। সেটি ২০১৬ সালের ১৪ জানুয়ারি ফেসবুকে আপলোড করা হয়েছিল।
ভিডিওটির ক্যাপশনে ধার্মিক মুসলমানরা কেন জিহাদের নামে হিংসার পথ বেছে নিচ্ছে এবং কেন ভাঙ্গচুর চালাচ্ছে, সেই প্রশ্ন করা হয়েছে। এর পর আমরা একটা নির্দিষ্ট সময়সীমা বেঁধে সার্চ করি। তার ফলে, 'ঢাকাটাইমস' ও 'প্রথম আলো'য় প্রকাশিত প্রতিবেদন সামনে আসে।
ওই দুই কাগজে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, দোকানদার ও মাদ্রাসা ছাত্রদের মধ্যে সংঘর্ষে একটি ছাত্র মারা গেলে, ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরে হিংসা ছড়ায়। ছাত্রটির মৃত্যুতে উত্তেজিত মাদ্রাসা ছাত্ররা সেখানকার রেল স্টেশন সহ সরকারি সম্পত্তি ভাঙ্গচুর শুরু করে। খবরে বলা হয় এক ছাত্রের সঙ্গে একজন দোকানদারের কথাকাটাকাটি থেকেই হাঙ্গামার সূত্রপাত।