এ বছরের ২৯ জানুয়ারি মুম্বইতে গ্রেফতার হওয়া এবং জাতীয় নিরাপত্তা আইনে (১৯৮০) মথুরা জেলে আটক ডাক্তার কাফিল খানের মুক্তির খবরে আনন্দ প্রকাশ করে ছড়ানো তাঁর সংবাদটি সোশাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে।
বুম ডাক্তার খানের আইনজীবী এবং মথুরা জেলের সিনিয়র সুপারিন্টেন্ডেন্ট উভয়ের সঙ্গেই কথা বলে জেনেছে, ডাক্তার খানকে এখনও জেল থেকে মুক্তি দেওয়া হয়নি।
চলতি বছরের ২৯ জানুয়ারি মুম্বই বাগে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের (সিএএ) প্রতিবাদ জমায়েতে অংশগ্রহণ করতে যাওয়ার পথে ডাক্তার কাফিল খানকে গ্রেফতার করে উত্তরপ্রদেশের বিশেষ টাস্ক ফোর্সের অফিসাররা। ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ে নাগরিকত্ব আইন-বিরোধী এক জমায়েতে প্ররোচনামূলক বক্তৃতা দেওয়ার দায়ে তাঁকে খোঁজা হচ্ছিল।
গ্রেফতারির পর ডাক্তার খানকে আলিগড়ে নিয়ে আসা হয় এবং তাঁকে মথুরা জেলে পুরে দেওয়া হয়। ১০ ফেব্রুয়ারি তিনি জামিন পান কিন্তু জেল-কর্তৃপক্ষ তাঁকে মুক্তি দেয়নি। এর তিন দিন পর ১৩ ফেব্রুয়ারি উত্তরপ্রদেশ সরকার জাতীয় নিরাপত্তা আইনে তাঁকে নতুন করে গ্রেফতার করে।
তাঁর কারাবাসের মেয়াদ তিন মাস পূর্ণ হওয়ার পর ১২ মে কর্তৃপক্ষ ডাক্তার খানের আটক থাকার মেয়াদ আরও তিন মাস বাড়িয়ে দেয়। জাতীয় নিরাপত্তা আইনে (এনএসএ) তাঁকে ৬ মাসের জন্য গ্রেফতার করা হয়, যার মধ্যে তিন মাস ইতিমধ্যেই তাঁর কারাবাস করা হয়ে গেছেl উল্লেখ্য, এই আইনে এক বছর পর্যন্ত বিনা বিচারে কাউকে আটক করে রাখা যায়।
সোশাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া পোস্টে দুটি ছবির কোলাজ করা হয়েছে, যার একটিতে দেখা যাচ্ছে ডাক্তার খান সাংবাদিক পরিবৃত অবস্থায় কথা বলছেন, আর অন্যটিতে তিনি পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে, স্ত্রী ও কন্যার সঙ্গে এক আবেগঘন মুহূর্ত কাটাচ্ছেন।
পোস্টের ক্যাপশনে লেখা "ঈশ্বরকে ধন্যবাদ যে, ডাক্তার কাফিল খানকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে।"
ভাইরাল হওয়া পোস্টটি নীচে দেখুন, পোস্টটি আর্কাইভ করা আছে এখানে।सच की जीत हुई डॉ कफील खान आज जेल से रिहा हो गए pic.twitter.com/AxmPUKrxdH
— Dr.M.I.Chauhan (@DrChauhan1208) July 22, 2020
বুম এই খবরের সত্যতা জানতে ইন্টারনেটে খোঁজ চালায়, কিন্তু এ ধরনের কোনও সংবাদ সেখানে পাওয়া যায়নি। এর পর আমরা ডাক্তার খানকে যেখানে আটক রাখা হয়েছে, সেই মথুরা জেল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করি। সেখানকার সিনিয়র সুপারিন্টেন্ডেন্ট শৈলেন্দ্র কুমার মাইত্রে খবরটি ভুয়ো বলে উড়িয়ে দেন। তিনি স্পষ্ট জানান, ডাক্তার খানকে এখনও মুক্তি দেওয়া হয়নি।
ডাক্তার খানের আইনজীবী ইরফান গাজির সঙ্গেও বুম যোগাযোগ করে এবং তিনিও খবরটি ভুয়ো বলে উড়িয়ে দেন। তিনি বলেন, "আমি জানি না কেন লোকে এসব গুজব ছড়াচ্ছে।" ডাক্তার খানের জামিনের আবেদনের শুনানির দিন ২৭ জুলাই থেকে পিছিয়েছে ৫ অগস্ট।
এর আগেও, এ মাসের শুরুতেও এই জামিনের আবেদনের শুনানির দিন পিছিয়ে দেওয়া হয়েছিল।
পোস্টে ভাইরাল হওয়া ডাক্তার খানের ছবিগুলি ২০১৮ সালের।