সোশাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া সংবাদ প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, লন্ডনে সরকারি ভাবে দ্বিতীয় ভাষার স্বীকৃতি মিলেছে 'বাংলা' ভাষার। বিভ্রান্তিকর তথ্যের ওই প্রতিবেদনগুলি শেয়ার করা হচ্ছে ফেসবুক ও টুইটারে।
এরকম একটি সংবাদের স্ক্রিনশটের শিরোনামে লেখা হয়েছে, ''লন্ডনে সরকারিভাবে দ্বিতীয় ভাষার মর্যাদা পেল বাংলা''
টুইটেও শেয়ার করা হয়েছে ওই একই শিরোনামের স্ক্রিনশট। 'বাংলা ভাষা লন্ডনে সরকারি দ্বিতীয় ভাষা' হওয়ার খবরের আবেগী স্তুতি করা হয়েছে সেই টুইটে। টুইটটি আর্কাইভ করা আছে এখানে।
ডিবিসি নামে বাংলাদেশের একটি ওয়েবসাইটেও এই খবরটি প্রকাশিত হয়েছে। শিরোনাম লেখা হয়েছে: লন্ডনের দ্বিতীয় সরকারি ভাষা 'বাংলা'
প্রতিবেদনটি আর্কাইভ করা আছে এখানে।
সংবাদপত্র আজকাল তাদের প্রতিবেদনে শিরোনাম লিখেছে, ''লন্ডনে দ্বিতীয় সর্বাধিক প্রচলিত ভাষার স্বীকৃতি পেল বাংলা''
তথ্য যাচাই
যুক্তরাজ্যে সরকারি ভাবে 'বাংলা' ভাষাকে লন্ডনে স্বীকৃতি দেওয়ার কোনও খবর খুঁজে পায়নি বুম। বুম খবর দুটি ভালো করে পড়ে দেখে শিরোনামে 'সরকারি' শব্দ লেখার কারণে পাঠকরা বিভ্রান্ত হচ্ছেন।
সেই সঙ্গে ওই প্রতিবেদনগুলিতে সিটি লিট নামে একটি সংস্থার সমীক্ষার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। বুম যাচাই করে দেখেছে সিটি লিট মূলত প্রাপ্ত বয়স্কদের বিদেশি ভাষা শিক্ষার দাতব্য প্রতিষ্ঠান। তাদের ওয়েবসাইটের ব্লগে ১৯ নভেম্বর ২০১৯ লেখা প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে, ''লন্ডনে ইংরেজির পরে দ্বিতীয় সাধারণ ভাষা হিসেবে বাংলায় কথা বলে সবচেয়ে বেশি মানুষ। তার পরে রয়েছে পলিশ ও তুর্কীশ ভাষা।'' তারা এই তথ্য পেয়েছেন সম্প্রতি করা একটি সমীক্ষাতে।
বুম প্রাপ্ত বয়স্কদের বিদেশি ভাষা শিক্ষার দাতব্য প্রতিষ্ঠান সিটি লিটের গবেষণার গুণমান ও মান্যতা যাচাই করেনি। সিটি লিট সম্পর্কে জেনে নিন তাদের ওয়েবসাইটে।
যেভাবে ছড়াল ভুয়ো খবরটি
বুম এই খবরটি যাচাই করতে গিয়ে এশিয়ান ভয়েস নামে একটি ওয়েবসাইটে ২ নভেম্বর ২০১৯ প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনের হদিস পায়। ওই প্রতিবেদনের শিরোনামে লেখা হয়েছে, ''বাংলাকে ঘোষণা করা হয়েছে লন্ডনের দ্বিতীয় বহুল বলা ভাষা হিসেবে।'' (ইংরেজিতে মূল পোস্ট: Bengali announced as the second most spoken language in London)
যদিও ওই প্রতিবেদনের প্রথম অনুচ্ছেদের প্রথম বাক্যে লেখা হয়েছে, 'অফিশিয়ালি' শব্দটা। এই শব্দটি থেকেই বিপত্তি; ভুয়ো খবরের রূপ নিচ্ছে ক্রমশ নেটিজেনদের মধ্যে।