বুধবার এইচডিএফসি ব্যাঙ্ক জানায় যে, রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার (আরবিআই) এক বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী তারা তাদের পাস বইয়ে ওই স্ট্যাম্প লাগান।
ওই স্ট্যাম্পের একটি ছবি ভাইরাল হয়েছে। সেই সঙ্গে দাবি করা হয়েছে যে, যদি বন্ধ হয়ে যায়, তাহলে বেসরকারি ব্যাঙ্কগুলি তাদের আমানতকারীদের কেবল ১ লক্ষ টাকা ফেরত দিতে বাধ্য। তবে এই নিয়মটা নতুন নয়। ডিপোজিট ইনসিওরেন্স অ্যান্ড ক্রেডিট গ্যারান্টি কর্পোরেশন-এর (ডিইআসিগিসি) মাধ্যমে সরকার বর্তমানে আমানত বিমা হিসেবে ১ লক্ষ টাকা বারাদ্দ করে রেখেছে। এটা এইচডিএফসি সহ সব ব্যাঙ্কের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য।
পাস বইয়ে লাগানো স্ট্যাম্পের ছবিটি নীচে দেওয়া হল।
ছবিটি বুমের হোয়াটসঅ্যাপ হেল্পলাইনেও (৭৭০০৯০৬১১১) আসে।
একই দাবি সহ ওই ছবি টুইটারেও ভাইরাল হয়েছে।
এইচডিএফসি ব্যাঙ্ক সেই সব পাস বইয়ে ওই স্ট্যাম্প লাগায় যেগুলিতে ওই তথ্যটি, আরবিআইয়ের নির্দেশ অনুযায়ী, ইতিমধ্যেই ছাপা হয়নি। এইচডিএফসি ব্যাঙ্কের জনসংযোগের প্রধান এ কথা জানান।
বিজ্ঞপ্তিটি এখানে দেখা যাবে।
বেসরকারি ব্যাঙ্কগুলি কি কেবল এক লক্ষ টাকা দিতে দায়বদ্ধ?
কোনও ব্যাঙ্ক যদি ব্যবসা গুটিয়ে ফেলতে বাধ্য হয়, তাহলে ডিআইসিজিসি নিশ্চিত করে যে ব্যাঙ্কটি লিকুইডেশনে যাওয়ার দু'মাসের মধ্যে আমানতকারীরা যাতে এক লক্ষ টাকা করে পান। ডিআইসিজিসি হল সম্পূর্ণ আরবিআই-মালিকানাধীন একটি শাখা সংস্থা।
সব ব্যাঙ্ককে তাদের কাছে গচ্ছিত টাকার ০.০৫% ডিআইসিজিসিকে প্রিমিয়াম হিসেবে দিতে হয়। এই প্রিমিয়ামের ভার গ্রাহকদের ওপর চাপানো হয় না। সব ব্যাঙ্কের ক্ষেত্রেই এই বিমা ব্যবস্থা প্রযোজ্য।
যেমন, সিটিব্যাঙ্ক তাদের গ্রাহকদের তাদের আমানত সংক্রান্ত এই বিমার কথা জানিয়ে দিয়েছে।
‘ফাইনানসিয়াল রেজুলিউশন অ্যান্ড ডিপোজিট ইনসিওরেন্স বিল’ (এফআরডিআই বিল) ২০১৭ আমানত বিমা নিয়ন্ত্রণ করার উদ্দেশ্যে আনা হয়। কিন্তু সেটি বিস্তর বিতর্ক সৃষ্টি করে। গুজব ছড়ানো হয় যে, ওই বিলটি নাকি নিজেদের লোকসান মেটাতে আমানতকারীদের জমা রাখা টাকা কাজে লাগানোর ক্ষমতা দেবে ব্যাঙ্কগুলিকে।
এই বিষয়ে বুমের লেখা এখানে দেখা যাবে।
বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায়, ভারতে আমানত বিমার মাত্রা খুবই কম। পিএমসি ব্যাঙ্ক বিপর্যয়ের পর থেকে এই বিমার অঙ্কটা বাড়ানোর দাবি জোরদার হয়েছে। তবে কোনও বেসরকারি বা রাষ্ট্রায়ত্ব ব্যাঙ্ক বন্ধ হয়ে গেছে বলে গ্রাহকরা তাঁদের টাকা খুইয়েছেন, সে রকমটা ঘটেনি এখনও। এখন পর্যন্ত ব্যাঙ্ক বন্ধ হওয়ার ঘটনা ঘটেছে কেবল কোঅপরেটিভ ব্যাঙ্কের ক্ষেত্রে। চালু হওয়ার পর থেকে, ৩৫১ কোঅপরেটিভ ব্যাঙ্ক সংক্রান্ত দাবি মেটাতে ডিআইসিজিসি এ পর্যন্ত ৪,৮২২ কোটি টাকা দিয়েছে।
সে সম্পর্কে এখানে পড়ুন।
আরও পড়ুন: কী ভাবে পিএমসি ব্যাঙ্ক আমানতকারীদের প্রতারণা করেছে: আপনি যা জানবেন