ভিডিওটি ২০১৮ সালের। এক কাশ্মীরি পুলিশ কর্মীর শেষকৃত্যের সময় মহিলাদের কান্নায় ভেঙ্গে পড়তে দেখা যাচ্ছে তাতে। সেই পুরনো ভিডিও এখন মিথ্যে দাবি সমেত শেয়ার করা হচ্ছে। বলা হচ্ছে, ভারত সরকার দ্বারা জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ অধিকার বিলোপ ও সেখানে কঠোর প্রশাসনিক ব্যবস্থা চালু করার পর সে রাজ্যের মুসমানদের ওপর অত্যাচারের ভিডিও সেটি।
পোস্টটি আর্কাইভ করা আছে এখানে।
দু’ মিনিটের ওই ভিডিও ফেসবুকে শেয়ার করা হচ্ছে। ক্যাপশনে বলা হয়েছে, “কাশ্মীরে মুসলমানদের ওপর অত্যাচার চালানো হচ্ছে। তারই ভিডিও দেখুন।”
(মূল হিন্দিতে পোস্টটি: “जम्मू कश्मीर में मुसलमानों का ऊपर जुल्म सितम हो रहा है पूरा वीडियो देखें”)
এই প্রতিবেদন লেখার সময়, ভিডিওটি ফেসবুকে প্রায় ১৯ হাজার বার দেখা হয়েছিল।
তথ্য যাচাই
ভিডিও বিশ্লেষণ করার সরঞ্জাম ‘ইনভিড’ ব্যবহার করে আমরা ভিডিওটিকে কয়েকটি প্রধান ফ্রেমে ভেঙ্গে ফেলি। তারপর, সেগুলিকে নিয়ে ‘ইয়ানডেক্স’-এর সাহায্যে রিভার্স ইমেজ সার্চ করা হয়। দেখা যায়, ওই একই ভিডিও ২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ তারিখে ইউটিউবে আপলোড করা হয়। আপলোড করেছিলেন আরিশ বিলাল নামের এক ব্যক্তি।
ভিডিওটির সঙ্গে দেওয়া বিবরণে বলা হয়, “পুলিশ কর্মী ফারুখ আহমেদের মৃত্যুতে কয়েক’শ মানুষ শোক পালন করেন ও তাঁর শেষকৃত্যে অংশ নেন। উনি সোপিয়ান জেলার কিগামের বাসিন্দা ছিলেন। হুরিয়ত নেতা ফজল হকের বাড়ির সামনে সন্ত্রাসবাদীদের গুলিতে উনি নিহত হন।”
ওই বিবরণ থেকে নেওয়া প্রধান শব্দগুলি ব্যবহার করে আমরা ইউটিউবে সার্চ করি। তার ফলে, আরও একটি ভিডিওর সন্ধান পাওয়া যায়। কাশ্মীরি সংবাদসংস্থা ‘রাইজিং কাশ্মীর’ ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ তারিখে সেটি আপলোড করে।
রাইজিং কাশ্মীর তাদের ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ তারিখের প্রতিবেদনে বলে, পুলিশ কর্মী ফারুখ আহমেদ ইয়াটু, ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ তারিখে সন্ত্রাসবাদীদের গুলিতে নিহত হন। শ্রীনগরের সৌরায়, হুরিয়ত (এম) নেতা ফজল হক কুরেশির বাড়িতে পাহারা দেওয়ার সময় সন্ত্রাসবাদীরা তাঁর ওপর হামলা চালায়।
২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৮’য় ‘এনডিটিভি’ তাদের রিপোর্টে জানায় যে, ইয়াটুর হত্যা ও তাঁর বন্দুক ছিনতাইয়ের ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার সন্দেহে চার ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়।